Oindrila Sen

Oindrila Sen: ওজনের কারণে ছাড়তে হয় একাধিক ছবি, কী ভাবে ১৫ কেজি ঝরালেন ঐন্দ্রিলা?

লকডাউনে বাড়িতে বসে ওজন বেড়ে যাচ্ছিল তাঁর। চার দিকে লাগাতার অসুস্থতা, মৃত্যুর খবরে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত নায়িকা শরীরচর্চার উৎসাহ পাচ্ছিলেন না।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:৫১
শরীরচর্চা এবং ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমিয়েছেন ঐন্দ্রিলা।

শরীরচর্চা এবং ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমিয়েছেন ঐন্দ্রিলা।

৭১ থেকে ৫৬ কেজি। বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলে মেদহীন ছিপছিপে চেহারায় তাক লাগাচ্ছেন ঐন্দ্রিলা সেন। তাঁর এই পরিবর্তনে আপ্লুত প্রেমিক অঙ্কুশ হাজরাও । প্রেমিকাকে নিয়ে কতটা গর্বিত, দিন কয়েক আগেই ঘোষণা করেছেন ঘটা করে। প্রশংসায় পঞ্চমুখ অনুরাগীরাও। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত চর্চা, সেই ঐন্দ্রিলা কী বলছেন? কেন হঠাৎ ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত?

ঐন্দ্রিলা জানালেন, লকডাউনে বাড়িতে বসে ওজন বেড়ে যাচ্ছিল তাঁর। চার দিকে লাগাতার অসুস্থতা, মৃত্যুর খবরে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত নায়িকা শরীরচর্চার উৎসাহ পাচ্ছিলেন না। ‘ম্যাজিক’-এর সময়ে খানিক ওজন কমেছিল ঠিকই। কিন্তু ঐন্দ্রিলা মনে করেছিলেন, টলিউডে মনের মতো চরিত্র পাওয়ার জন্য তা যথেষ্ট নয়। অগত্যা চলতি বছরের জুন থেকে শুরু করেন শরীরচর্চা। নায়িকা বললেন, “জুন মাস থেকে আমি শরীরচর্চা শুরু করলাম। প্রথম দিকে খুবই কষ্ট হত। মিষ্টি খাওয়া একেবারেই ছেড়ে দিই। অন্যান্য খাবারও খুব কম খেতাম। প্রথম দু’মাস কোনও ওজন কমেনি। সেই দু’মাস আমি কঠিন শরীরচর্চার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম।”

Advertisement

১৫ কেজি ওজন কমাতে কোন ধরনের ডায়েট মেনে চলতে হয়েছে নায়িকাকে?

ঐন্দ্রিলা জানিয়েছেন, শরীরচর্চার সঙ্গেই খাওয়াদাওয়াতেও রাশ টানতে হয়েছিল তাঁকে। তবে মেনে চলেননি বাঁধাধরা কোনও ডায়েট। ১৪-১৬ ঘণ্টা উপোসের পক্ষপাতী ছিলেন না ‘ফাগুন বউ’-এর ‘মহুল’। তাই শরীরচর্চা প্রশিক্ষক তাঁকে দিনে খুব অল্প পরিমাণে ৬ বার খেতে বলেছিলেন। খাবারের তালিকায় বরাদ্দ ছিল কুসুম ছাড়া দিনে ৬টি ডিম সেদ্ধ। সকাল, দুপুর এবং রাতে দু’টি করে ডিম খেতেন ঐন্দ্রিলা। দুপুর বেলায় সবজির স্যুপ, প্রোটিন শেক বা ফল। তার মাঝে খিদে পেলে পেট ভরাতেন শশা খেয়ে। নৈশভোজে ফের থাকত প্রোটিন শেক। এ ভাবে কিছু দিন চলার পর দুপুরে অল্প পরিমাণ ভাত খাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। তবে তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল ব্ল্যাক কফি, জুসের মতো পানীয়।

বেশ খানিকটা ওজন কমিয়ে ফেলার পর নায়িকা ছাড় পেয়েছেন এই কড়া ডায়েট থেকে। বাড়িতে মায়ের তৈরি খাবার খান তিনি। ইচ্ছে হলে মনের মতো মাছ বা মাংসের ঝোল আর ভাত দিয়ে সেরে নেন মধ্যাহ্নভোজ। কেক, প্যাস্ট্রির মায়া ত্যাগ করতে হলেও ফ্রিজে থাকে ডার্ক চকোলেট। আর কফিতে সাধারণ দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করেন কাঠবাদামের দুধ। চিনির পরিবর্তে গুড়। তবে সপ্তাহে এক দিন ফুচকা না হলে ঐন্দ্রিলার চলে না। ঝালঝাল আলুমাখা আর টক জল দিয়ে মনের সুখে ফুচকায় পেট ভরান নায়িকা।

নিজের বর্তমান চেহারা নিয়ে সন্তুষ্ট ঐন্দ্রিলা। তিনি বললেন, “ওজন কমিয়ে আমি খুবই খুশি। অনেকেই বলছেন আমার চোখ-নাক-মুখ বদলে গিয়েছে। আমি নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছি। শরীরের মেদ কমলে মুখেরও মেদ কমে। ফলে চোখ-নাকের আকৃতিরও পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয়।”

এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন ছোট পর্দায়। গত বছর ‘ম্যাজিক’ ছবিতেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত। এর পরেও পেয়েছিলেন একাধিক ছবির প্রস্তাব। কিন্তু ওজনের কারণে সেগুলিতে অভিনয় করতে রাজি হননি ঐন্দ্রিলা। “দু’তিনটি ছবি আমি চেহারার জন্য ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু চাইনি এত বছর কাজের পর মানুষ ভাবুন, আমি কাজ করতে আগ্রহী নই। আমার কাছের মানুষরা সেই সময়ে আমাকে ওজন কমানোর জন্য উৎসাহ দিয়েছিলেন”, অকপটে কবুল করলেন ঐন্দ্রিলা।

টলিউডে কাজ করতে হলে কি এখনও নায়িকাদের ছিপছিপে হওয়া বাধ্যতামূলক?

ঐন্দ্রিলার জবাব, “আমি খোলামেলা ভাবেই বলছি টলিউডে এই চল রয়েছে। কোনও প্রযোজকের সঙ্গে দেখা হলেই তিনি বলতেন, ‘তোকে না ওজনটা একটু কমাতে হবে।’ আমি তাঁদের দোষ দেব না। আমরা এখনও নিজেদের তরফে এমন কোনও ছবি দিতে পারিনি, যা দেখে মনে হবে ওজনটা আসলে কোনও বিষয়ই না। বলিউডে বিদ্যা বালন, ভূমি পেডনেকর সেটা করে দেখিয়েছেন।” ঐন্দ্রিলা আশাবাদী, পরবর্তী সময়ে তিনিও এমন চরিত্রে অভিনয় করবেন, যা দেখে তাঁকে আর ওজনের নিক্তিতে বিচার করা হবে না।

Advertisement
আরও পড়ুন