Nicole Kidman

শরীরী আবেদন আর অভিনয় ক্ষমতায় ভাটা পড়েনি, দেখিয়ে দিলেন ৫৭-র নিকোল কিডম্যান

শুধু সহ-অভিনেতা নন, নিকোলের অপ্রত্যাশিত অভিব্যক্তি সেটে পরিচালদেরও চমকে দেয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৮
Nicole Kidman is still in search of new directorial talent

(বাঁ দিকে) ‘দ্য পারফেক্ট কাপল’ ছবির একটি দৃশ্য। পঞ্চাশ পেরিয়েও তন্বী নিকোল কিডম্যান (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

স্বপ্নসুন্দরীদের জৌলুস কি হারিয়ে যায় ৫০-এ পা দিলেই? ম্লান হয়ে আসে স্পটলাইটের আভা? ক্রমশ উবে যায় সেলুলয়েডের সম্মোহন? বার বার এই সব বস্তাপচা ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছেন হলিউড অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান।

Advertisement

বন্ধ ঘর। মায়াবী আলো। হাতে অল্পবয়সি ইন্টার্নের টাই! সেটি অনবরত গালে, নাকে, ঠোঁটে ঘষতে থাকেন! এক সময় মুখের ভিতরে ঢুকিয়ে নেন। শীৎকারে আলোড়িত হয় মুহূর্ত! ৫৭ নয়, যেন কামনাজর্জর ২৭-এর যুবতী! হালিনা রাইনের পরিচালনায় ‘বেবিগার্ল’-এর চরিত্রটিতে কিডম্যান ছাড়া অন্য কাউকে ভাবাই যায় না!

এই একটি চরিত্রকেই বিবিধ পরতে রাঙিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারতেন বছরভর। কিন্তু কিডম্যান তা করেননি। একের পর এক কাজ করে গিয়েছেন! এ বিষয়ে হলিউড অভিনেতা স্টিভ মার্টিনের রসিকতা তারিফযোগ্য— “মাঝেমধ্যেই আমি অভিনেতাদের বলি, নিকোল কিডম্যানের সঙ্গে আপনার দৃশ্য অনবদ্য ছিল! দশ বারের মধ্যে ন’বারই মিলে যায়।”

বছরের সেরা হওয়া বা শিরোনামে থাকাই উদ্দেশ্য নয়, চরিত্র বাছাইয়ে নিকোল আজও স্বতঃস্ফূর্ত, প্রবৃত্তিনির্ভর। যেমন ‘বেবিগার্ল’-এর ক্ষেত্রে আকর্ষণের প্রাথমিক কারণ সে ছবির শিরোনাম। অনেকে সঠিক চরিত্রের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন। অধিক সংখ্যক কাজের চাপে পুনরাবৃত্তির ভয়ে থাকেন। কিন্তু অস্কার, এমি, গ্লোডেন গ্লোব— একের পর এক পুরস্কারে তাক ভরে গেলেও এতটুকু খিদে কমেনি নিকোলের। নতুন পরিচালকের সন্ধান করেন নিরন্তর, খুঁজে ফেরেন প্রতিভা। ২০১৭-য় কিডম্যানের প্রতিশ্রুতি ছিল— ১৮ মাসে অন্তত এক বার মহিলা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করবেন। নিজের লক্ষ্য ছাপিয়ে গিয়েছেন নিজেই। রাইনের ‘ইনস্টিংক্ট’ দেখার পর কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিডম্যান। প্রথমটায় বিশ্বাস করতে পারেননি রাইন। বলেই ফেলেছিলেন, “আনন্দে আমার অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা!”

‘এক্সপ্যাটস’ সিরিজ়ের একটি দৃশ্যের কথা না বললেই নয়। নিকোল এখানে ধনী মায়ের চরিত্রে। স্বামীর সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ছেলের সন্ধানে মর্গে যান। হঠাৎ মৃতদেহ দেখে হেসে ওঠেন অট্টহাসি। দৃশ্যটি গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো। আসলে অনেক কিছুই তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাপ্রসূত। শুধু সহ-অভিনেতা নন, নিকোলের অপ্রত্যাশিত অভিব্যক্তি সেটে পরিচালকেও চমকে দিয়েছিল।

‘দ্য পারফেক্ট কাপল’-এ সন্তানদের বলা দীর্ঘ দিনের মিথ্যে মুহূর্তে ভেঙে খানখান করে দেন। জানান, তাদের বাবা-মায়ের কোনও আর্ট গ্যালারিতে দেখা হয়নি। কিডম্যানের চরিত্রটি একজন এসকর্টের। স্বামীর সঙ্গে তার পরিচয়ের সূত্রও সেই সুবাদেই। দৃশ্যটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অজস্র মানুষ ভাগ করে নেন সেটি।

পরিসংখ্যান বলছে, আন্তর্জালে কিডম্যানকে সার্চ করার প্রবণতা প্রায় ৮৮ শতাংশ বেড়েছে। মুভি থিয়েটারের জন্য শুট করা নিকোলের একটি বিজ্ঞাপন এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। যখন নিকোল বলেন, “উই কাম টু দিস প্লেস ফর ম্যাজিক”, হাততালিতে ফেটে পরে ভিড়ে ঠাসা প্রেক্ষাগৃহ। কিডম্যানের নিজস্ব জাদু তখন ছড়িয়ে গিয়েছে দর্শকদের মন থেকে মনে।

৫৭-য় পৌঁছেও তাঁর বীজমন্ত্র এবং তরুণদের প্রতি উপদেশ— “ভয় পেও না। থেমে যেও না। শুধু কাজ করে যাও।”

Advertisement
আরও পড়ুন