Cinema halls in Pujo

পুজোয় এই প্রথম ২৪ ঘণ্টা প্রেক্ষাগৃহ খোলা রাখার ভাবনা, উদ্যোগ নবীনার, পথ দেখাল কি ‘জওয়ান’?

পুজোর সময় মাঝরাতের আগে সিঙ্গল স্ক্রিনে ছবি দেখেছেন দর্শক। কিন্তু পুজোর পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টা কখনও সিঙ্গল স্ক্রিন খোলা থাকেনি বলেই জানাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির একাংশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৪
Navina Cinema is planning to keep open their screen for 24 hours during Durga Puja

নবীনা সিনেমায় ‘জওয়ান’ দেখতে অনুরাগীদের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত।

পুজোর আর বেশি দেরি নেই। এ দিকে বৃহস্পতিবার শহরে মুক্তি পেয়েছে ‘জওয়ান’। বাংলায় শাহরুখ খানের অগণিত অনুরাগী। সকাল থেকে রাজ্যের একাধিক সিঙ্গল স্ক্রিন বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহে ঝুলেছে হাউসফুল বোর্ড। এমতাবস্থায় পুজোর ছবি নিয়ে মৌলিক পরিকল্পনায় ব্যস্ত নবীনা সিনেমা। জানা যাচ্ছে, তারা পুজোয় ২৪ ঘণ্টা তাদের সিনেমাহল খোলা রাখার পরিকল্পনা করছে।

Advertisement

পুজোয় এ বছর চারটে ছবি প্রতিযোগিতায় নামছে। তালিকায় রয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দশম অবতার’। দেব নিয়ে আসছেন ‘বাঘাযতীন’। অন্য দিকে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায় ‘রক্তবীজ’ ছবিটি নিয়ে এই প্রথম পুজোর ময়দানে নামছেন। অরিন্দম শীল নিয়ে আসছেন ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’। সাধারণত পুজোর সময় মানুষ একটু বেশি ছবি দেখেন। কিন্তু সারা রাত হল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি ‘জওয়ান’ যোগ? নবীনা সিনেমার কর্ণধার নবীন চৌখানি বললেন, ‘‘আমাদের প্রেক্ষাগৃহে আটশো আসন। ‘জওয়ান’-এর প্রথম শো হাউসফুল। দর্শকদের এই প্রতিক্রিয়া দেখে মনে জোর পাচ্ছি।’’

নবীন জানালেন, এর আগে ২০১৮ সালে পুজোয় রাত সাড়ে এগারোটার স্লটে তাঁরা ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ ছবিটির প্রদর্শন করেন। তবে এই বছরের পুজো নিয়ে তিনি আশাবাদী। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোর সময় বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ কলকাতায় আসেন। অনেকেই সারা দিনের ক্লান্তির পর বিশ্রামের জন্য সিনেমা দেখেন। তাই ভোরে বা মধ্যরাতে শো থাকলে দর্শক আসবেন বলেই মনে হচ্ছে।’’ সারা দিন হল খুলে রাখতে হলে চাই বাড়তি লোকবল। তাই বাইরে থেকে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।

টলিপাড়ায় খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, ৯০-এর দশকে শিবরাত্রিতে অনেক প্রেক্ষাগৃহ সারা রাত খোলা থাকত। সারা দিনের উপবাস ভাঙার পর মাঝরাতে তাঁরা ছবি দেখতে আসতেন। ইম্পার (ইর্স্টান ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন) তরফে শ্যামল দত্ত বললেন, ‘‘৯০-এর দশকে মছলন্দপুরে জ্যোতি সিনেমায় আমি ম্যানেজার ছিলাম। তখন দেখেছি, শিবরাত্রিতে সারা দিনের টিকিট বিক্রির লভ্যাংশ কর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হত। মালিক নিজে সেখান থেকে কিছু নিতেন না।’’

বেশ কয়েক বছর আগে পুজোর সময় এক বার প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে জিতের ছবির শো দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুজোর পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টা কখনও সিঙ্গল স্ক্রিন খোলা থাকেনি বলেই জানাচ্ছেন হলমালিকদের একাংশ। সেখানে ‘নবীনা’-র ভাবনা নিঃসন্দেহে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার অবশ্য এই ভাবনার জন্য কোনও কৃতিত্ব দাবি করতে চাইলেন না। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু আমি কেন, আরও সবাই এই পথে হাঁটলে সেটা আমাদের প্রত্যেকের জন্য ভাল।’’

শহরের হল মালিকদের একাংশের মতে, অতিমারির পর ‘পাঠান’ সিঙ্গল স্ক্রিনকে নতুন জীবন দান করেছিল। তার পর সাম্প্রতিক অতীতে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’, ‘গদর ২’ বা ‘ওএমজি ২’-এর মতো ছবির ব্যবসা তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মনোবল বাড়িয়েছে। তাই পুজোয় সারা দিন সিনেমাহল খোলা থাকলে তা সিঙ্গল স্ক্রিনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement