আরাবুল ইসলামের সাসপেনশনের খবর ছড়াতেই মিষ্টিমুখ করলেন শওকত মোল্লার অনুগামীরা। —নিজস্ব চিত্র।
এক সময় তৃণমূলের কাছে তিনি ছিলেন ‘তাজা নেতা’। সাসপেন্ডের পর ‘গদ্দার’ হয়ে গেলেন ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। শুক্রবার বিকেলে আরাবুলের নিলম্বনের (সাসপেন্ড) কথা ঘোষণা করে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। আর সন্ধ্যা নামার আগেই ভাঙড়ে মিষ্টিমুখ করলেন তৃণমূল কর্মীরা। বাজি ফাটল। প্রচুর আতশবাজি পুড়ল এলাকায়। সেই সঙ্গে আরাবুলের বিরুদ্ধে স্লোগানও উঠল। তবে সাসপেন্ডের পর একটি কথাও বলতে রাজি নন আরাবুল।
শুক্রবার বিকেলে আরাবুল এবং রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড ঘোষণা করে তৃণমূল। সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য শাস্তি দিল দল। তার পরেই ভাঙড়ের এখানে-ওখানে উৎসবের মেজাজে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। ভাঙড়ের হাতিশালায় একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করান তৃণমূল কর্মীরা। বিলি হয় লাড্ডু, রসগোল্লা ইত্যাদি। নাগাড়ে বাজি ফেটেছে। উল্লাসের কারণ কী? তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, ভাঙড়ে কেবল নিজের উন্নয়ন করেছেন আরাবুল। তাই তাঁর বিরুদ্ধে দল এত দিনে যে এই সিদ্ধান্ত নিল, তাতে তাঁরা খুশি। তাই আনন্দ করছেন।
যদিও এই প্রথম বার আরাবুলকে সাসপেন্ড করল না তৃণমূল। এর আগে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তখন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে এমন ‘সেলিব্রেশন মুড’-এ পাওয়া যায়নি। ঘটনাক্রমে আরাবুলের সাসপেনশন প্রত্যাহৃত হয়। গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হন প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল। কিন্তু তার পর তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের দলীয় পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লার সঙ্গে আরাবুলের দ্বন্দ্ব বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে শওকত গোষ্ঠী বনাম আরাবুল গোষ্ঠীর গন্ডগোল আলাদা মাত্রা নেয়। শওকত জানান, ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাঙড়ে গন্ডগোল পাকাচ্ছেন আরাবুল। বিষয়টি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোচরে আনবেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারও ভাঙড়-২ বিডিও অফিসের সামনে শওকত এবং আরাবুলের অনুগামীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। তর্কাতর্কিতে জড়ান আরাবুল এবং আর এক তৃণমূল নেতা আহসন মোল্লা।