‘অযোগ্য’ ছবির দৃশ্য(বাঁদিকে)। (ডানদিকে) রণজয় ভট্টাচার্য।
মুক্তি পেয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘অযোগ্য’র প্রথম গান। গানটি প্রশংসা পাচ্ছে। কিন্তু পাশাপাশি, গানের নামের বানান নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে নেটদুনিয়ায়। এক প্রকার বিতর্কের চাপে পড়েই গানের নামের বানান বদলাতে হল ছবির নির্মাতাদের।
সোমবার মুক্তি পায় রণজয় ভট্টাচার্যের লেখা ও সুর করা গান ‘আমার হোবি না তুই’। এই নামেই যত সমস্যা নেটাগরিকদের একাংশের। তাঁদের দাবি, ‘হবি’ বানান কেন ভুল রয়েছে? অনেকেই জানান, এই ভুল বানান তাঁদের খুব চোখে লাগছে। ছবির পরিচালক জানান, উচ্চারণ মেনেই এই বানান রেখেছেন তিনি। কিন্তু সেই যুক্তিও মেনে নেননি নেটাগরিকরা। আর তাই গানের নাম বদলে রাখা হল ‘আমার হ’বি না তুই’।
আনন্দবাজার অনলাইনকে সঙ্গীত পরিচালক রণজয় ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘খুবই কম সংখ্যক মানুষ গানের নামের এই বানানটি নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু গান থেকে যাতে মনোযোগ অন্য দিকে না চলে যায়, তাই বানান বদলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া।’’ সঙ্গীত পরিচালক জানাচ্ছেন, ৯৮ শতাংশ মানুষ গানটি শুনে কথা বলেছেন। ২ শতাংশ মানুষ বানান নিয়ে মতামত দিয়েছেন।
রণজয় বলছেন, ‘‘কিছু মানুষের বানানটি দেখে খারাপ লেগেছে। তবে সেটা তাঁদের মনে হতেই পারে। কোনও সমস্যা নেই তাতে। সমাজমাধ্যমে কে কী পোস্ট করবেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমার মনে হয়, গানের নামের বানান দিয়ে কখনওই গানের মান বিচার করা যায় না। গানটার ভাল-খারাপ নিয়ে বক্তব্য রাখলে আরও যুক্তিযুক্ত হত। এটা তো বাংলা ভাষা নিয়ে বিতর্কসভা নয়। তেমন হলে নিশ্চয়ই আমরা এই বিষয়ে কথা বলব।’’
পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় গানের নামের বানানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘রণজয় চেয়েছিলো গানের নামটা ‘পর্ণমোচী দিন’ হোক, আমি জেদ ধরে নাম রাখলাম ‘তুই আমার হোবি না’। রণজয় সহমত না হয়েও মেনে নিয়েছিলো আমার ভরসায়। ‘হবি না’-র বানান করা হোলো উচ্চারণ অনুযায়ী, আর hobby-র বাংলা বানান ‘হবি’ থেকে আলাদা করার জন্য। যেমন ভালবাসা বানান ভালোবাসাও হয়, তেমনি। না-পাওয়া ভালোবাসার এই গানের সহজ নাম তাই হোলো, ‘তুই আমার হোবি না’ ! শুনুন ও শোনান।’’ (লেখকের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল)
যদিও গানের নামের বানান পরিবর্তন করে পরিচালক তাঁর সমাজমাধ্যমে লেখেন, “উচ্চারণ ধরে বানান নিয়ে কায়দা করতে গিয়ে একটা ভুল হয়ে গেছে আমার। দেখ আর দেখো-র মতো হবি-কে হোবি লিখে বাংলা ভাষা ভালোবাসেন, এমন মানুষদের কষ্ট দিতে চাইনি বিশ্বাস করুন।”
শেষ পর্যন্ত বানান পরিবর্তন করার জন্য পরিচালককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, এই গানটি গেয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল। রণজয় বলছেন, ‘‘শ্রেয়ার সঙ্গে কাজ করা প্রত্যেক সঙ্গীত পরিচালকের কাছে স্বপ্নের মতো। যে ভাবে তিনি গানটি গেয়েছেন, তাঁর নিষ্ঠা এবং এখনও তিনি যে পরিমাণ বিনয়ী, সবটাই আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এমন উচ্চতায় পৌঁছেও যে এই ভাবে থাকা যায়, সেটা ওঁকে দেখে শেখার।’’ ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, লিলি চক্রবর্তী, অম্বরীশ ভট্টাচার্য।