Pori Moni

Pori Moni: পরীমণিকে ধর্ষণ-প্রচেষ্টা ও হত্যা মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি ১৯ এপ্রিল 

আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ২৩:৪৩

ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্রনায়িকা পরীমণির জীবনে কয়েক মাস আগেও ছিল ঘোর দুঃসময়। ঢাকার বোট ক্লাব কাণ্ডে লাঞ্ছনা, মাদক আইনে গ্রেফতার, জেল-হাজত। জামিনে মুক্তির পর তাঁর জীবনে ফিরে এসেছে সুসময়। একের পর এক ছবি, প্রেম, বিয়ে, সন্তানের আগমন সংবাদ।

পরপর কয়েকটি ভাল খবরে খুব খুশি পরীমণি। এক দিকে পরীমণির নতুন ছবি 'মুখোশ' শুক্রবার বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে তিরিশের বেশি প্রেক্ষাগৃহে। মোশারফ করিম, রোশন, পরীমণি অভিনীত ছবিটি এখন আগ্রহের তুঙ্গে।

Advertisement

অন্য দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার কাজ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি সেলিমের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি পরীমণি সহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ৩০ জানুয়ারি পরীমণির পক্ষে আইনজীবী এই অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিলের আবেদন করেন।

গত বছর জুন মাসের ঘটনা। ১৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মা সম্বোধন করে খোলা চিঠি পোস্ট করলেন পরীমণি। সেখানে লিখলেন—“আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এই বিচার কই চাইব আমি? কোথায় চাইব? কে করবে সঠিক বিচার? আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তা হলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুনি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কী করবার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কী করে থাকতে পারি মা?”

সেই রাতে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছিলেন, ৮ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমিকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার বোট ক্লাবে যান তিনি। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে পরীমণির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। ওই ব্যক্তিদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তাঁর মুখে মদের গ্লাস চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

১৪ জুন সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, পরীমণির পারিবারিক বন্ধু বলে পরিচিত অমি এবং আরও চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-প্রচেষ্টা ও হত্যাপ্রয়াসের অভিযোগে মামলা করেন পরীমণি। নাসির ও অমি সহ পাঁচজনকে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে নাসিররা জামিনে মুক্ত হন।

এরপর ঘটনা অন্যদিকে ঘুরে গিয়েছিল। পরীমণির জীবনে শুরু হয়েছিল দুঃস্বপ্নের অধ্যায়। ৪ আগস্ট ঢাকার বনানীতে পরীমণির বাসায় হানা দেয় র‌্যাব। বেআইনি মাদকদ্রব্য রাখার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেফতার করা হয় পরীমণিকে। তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসায় ছেয়ে যায় সামাজিক মাধ্যম। চাপা পড়ে যায় নাসিরদের বিরুদ্ধে পরীমণির আনা ভয়ানক অভিযোগের কথা। রহস্যময় কারণে পরীমণির জামিন হচ্ছিল না কিছুতেই। ক্রমে পরিস্থিতি বদলায়। পরীমণির জামিন চেয়ে রাস্তায় নামে অনেক মানুষ। বাংলাদেশের বিশিষ্ট মানুষেরাও এই হেনস্থার প্রতিবাদ জানান। অবশেষে জামিনে মুক্ত হন পরীমণি।

বর্তমানে বাংলাদেশে পরীমণি লড়াকু মানবী হিসেবে নতুন প্রজন্মের প্রিয়। জীবন বদলে গিয়েছে তাঁর। এ সবের মধ্যেই এল আর এক খুশির খবর। পরীমণিকে ধর্ষণ-প্রচেষ্টা ও হত্যাপ্রয়াসের মামলাটি আলোচনার বাইরে চলে গিয়েছিল। সে চিত্র বদলাল এ বার। অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আদালত দিন ধার্য করেছেন ১৯ এপ্রিল।

পরীমণির ঘনিষ্ঠরা অনেকেই মনে করেন একটা গুরুতর অপরাধ ঢাকতেই পরীমণিকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এ বার সত্যিটা উঠে আসবে।

সন্তানের জন্য দিন গুনছেন পরীমণি। সত্য‌ও খুব বেশি দূরে নেই।

Advertisement
আরও পড়ুন