ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে শতরানের পর হরলীন দেওল। —ফাইল চিত্র।
এ ভাবেও ফিরে আসা যায়! ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে শতরান করেছেন হরলীন দেওল। ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি। অথচ কয়েক মাস আগে একটি বোতলও তুলতে পারতেন না ভারতীয় ব্যাটার। বেশ কিছু দিন শুয়ে থাকতে হয়েছে হাসপাতালের বিছানায়। সেখান থেকে ফিরেছেন ডানহাতি ব্যাটার। ভাল খেলার জন্য চোটকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন তিনি।
চলতি বছর মার্চ মাসে মহিলাদের আইপিএল খেলার সময় হাঁটুতে চোট লেগেছিল হরলীনের। অস্ত্রোপচার হয়েছিল তাঁর। বেশ কিছু দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয়েছিল। তার পরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব করে আবার দলে ফিরেছেন হরলীন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক দিনের সিরিজ়ে ২৩.৩৩ গড়ে করেছিলেন ৭০ রান।
ধীরে ধীরে ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বর জায়গা নিজের নামে করছেন হরলীন। মঙ্গলবার ৬২ বলে অর্ধশতরান করেছেন হরলীন। শতরান করেছেন ৯৯ বলে। এক দিনের ক্রিকেটে এটি তাঁর প্রথম শতরান। তাঁর ব্যাটে ভর করে প্রথমে ব্যাট করে ৩৫৮ রান করেছে ভারত। সহজে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন হরলীন। তার পরেই চোটের সময়ের কথা বলেছেন তিনি।
অস্ত্রোপচার হওয়ার পর দীর্ঘ দিন হাঁটাচলা করতে পারেননি হরলীন। সেই সময় মাকে পাশে পেয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় ব্যাটার বলেন, “আমি যখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তখন আমার মা আমার পাশে থেকেছে। মা কোনও কিছুতে বিরক্ত হয়নি। আমি হাঁটতে পারতাম না। মেঝে থেকে একটা বোতলও তুলতে পারতাম না। মা আমার সব কাজ করে দিত।”
সেই সময় যে যন্ত্রণা তিনি পেয়েছেন তা তাঁকে মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী করেছে বলে জানিয়েছেন হরলীন। তিনি বলেন, “যখন রিহ্যাবে ছিলাম, তখন মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী হয়েছি। একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছি। তখন একটা করে লক্ষ্য স্থির করতাম। এক দিনে সেই লক্ষ্য পূর্ণ করতাম। এ ভাবে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়েছি।”
হরলীনকে সেই সময় কাছ থেকে দেখেছেন তাঁর সতীর্থ জেমাইমা রগ্রিগেজ়। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার হরলীন যখন শতরান করেন তখন অপর প্রান্তে ছিলেন জেমাইমা। তিনি বলেন, “হরলীনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ও শুয়ে শুয়ে কেঁদেই যাচ্ছিল। আমি ওর খুব ভাল বন্ধু। ওকে ও ভাবে দেখতে পারিনি। এই ম্যাচে ওর শতরান অপর প্রান্ত থেকে দেখেছি। আমিও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।”
চলতি সিরিজ়ে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রান করেছেন হরলীন। দু’টি ম্যাচে ৭৯.৫০ গড় ও ১০৩.৯২ স্ট্রাইক রেটে ১৫৯ রান করেছেন তিনি। শুক্রবার তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচ। সেখানেও একই ফর্ম ধরে রাখতে চাইবেন এই ডানহাতি ব্যাটার।