সইফ আলি খান ছুরির আঘাতে আহত নন? ছবি: সংগৃহীত।
কোন দিকে গড়াচ্ছে সইফ আলি খানের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে নতুন করে। মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালের দেওয়া তথ্য নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। শনিবার এই বিতর্কে নয়া মোড় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দীনেশ রাওয়ের এক বক্তব্যে। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, লীলাবতী হাসপাতাল বান্দ্রা পুলিশকে জানিয়েছিল, ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম অভিনেতা। এ দিকে ফরেন্সিক তদন্ত অনুযায়ী, সইফের শরীরের ক্ষতগুলি কোনও ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতে হয়েছে। এই বক্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি হাসপাতাল ইচ্ছাকৃত ভাবেই তথ্য বিকৃত করছে?
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক ভার্গবী পাতিল স্বাক্ষরিত বিবৃতির উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, ভার্গবী লিখেছেন, সইফের ‘ক্ষত’ ভোঁতা অস্ত্রের কারণেই হয়েছে। উল্লেখ্য, অভিনেতার ছেলে জেহ্র দেখভালের জন্য নিযুক্ত কর্মী, যিনি প্রথম অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় ব্যক্তির হাতে লাঠির মতো একটি জিনিস ছিল। আর ছিল করাত জাতীয় অস্ত্র।
অন্য দিকে লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, সইফের মেরুদণ্ডের কাছ থেকে ছুরির ২.৫ ইঞ্চির একটি টুকরো তাঁরা অস্ত্রোপচার করে বার করেছেন। এমনকি, তাঁরা এই ছুরির ছবিও সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। পুলিশের পাল্টা দাবি, ছুরির দ্বিতীয় টুকরো তারা অভিনেতার বাসভবন থেকে এবং আরও একটি টুকরো বান্দ্রা তালাওয়ের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। সম্ভবত পালিয়ে যাওয়ার সময় শরিফুল ইসলাম এটি সেখানে ছুড়ে ফেলেছিলেন।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দেওয়া তথ্যের কী ব্যাখ্যা দিচ্ছেন লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?
স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে প্রশ্ন। খবর, এখনও পর্যন্ত কোনও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিষয়টি নিয়ে পাল্টা কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই হাসপাতালের দেওয়া আরও একটি বক্তব্য আতশকাচের তলায়। যেমন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে, রাত ২.৩০ মিনিটে সইফের উপরে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ভোর ৪.১১ মিনিটে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সারা শরীরে ক্ষত নিয়ে দু’ঘণ্টা বাড়িতে কী করছিলেন তিনি এবং তাঁর পরিবার?
একই সঙ্গে এ-ও প্রশ্ন উঠেছে, গুরুতর আহত সইফকে কে বা কারা হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন সে দিন?
হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সইফকে এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক জন শিশু অটো রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। প্রাপ্তবয়স্ক লোকটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি আফসার জ়াইদি, অভিনেতার বন্ধু। সঙ্গের শিশুটি হতে পারেন তৈমুর। অথচ সেই সময় অভিনেতার স্ত্রী করিনা কপূর খান বাড়িতে। তা-ও কেন হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বন্ধুকে ফোন করেছিলেন অভিনেতা? এই প্রশ্নেরও জবাব মেলেনি। যেমন জবাব মেলেনি আহত বাবার সঙ্গে তাঁর শিশুপুত্র তৈমুরের হাসপাতালে যাওয়ার প্রসঙ্গ।
এই জায়গা থেকেই দ্বিতীয় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তা হলে কি আগের রাতে পার্টি করার পর করিনা এতটাই মত্ত ছিলেন যে স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থাতেই ছিলেন না তিনি?