Srijato

Manabjamin: ক্যামেরায় শ্রীজাত, নন্দনে ‘মানবজমিন’-এর শ্যুটে পরমব্রত-প্রিয়াঙ্কা, সাক্ষী শুধু আনন্দবাজার অনলাইন

কবি পরিচালক হলে কী হয়, তার ছোট্ট নমুনা মিলল এ দিন। সেটে ব্যস্ততা অবশ্যই আছে। কিন্তু সবটাই মসৃণ ভাবে। নীচু তারে বাঁধা। শ্রীজাতর হয়ে গলা তুলে ‘কাট’ বলছেন সহকারী রাজদীপ!

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২২ ১২:৩৬
প্রিয়াঙ্কা সরকার এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

প্রিয়াঙ্কা সরকার এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

কবি যখন ক্যামেরার পিছনে ছবি কি তখন কবিতা? শ্রীজাত পরিচালনায় আসছেন। গত বছর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর অনুরাগীদের মনে সবার আগে এই প্রশ্ন ছিল। তার পরেই কৌতূহল, কেমন ছবি পরিচালনা করতে চলেছেন কবি! পারবেন সব আটঘাট সামলাতে? শুক্রবার তারই জবাব নিয়ে ময়দানে নামলেন তিনি।
সেই চেনা সাজ। খদ্দরের ফতুয়া শার্ট, ট্রাউজার। মাথায় টুপি, মুখে মাস্ক। এ ভাবেই ভোর থেকে বিকেল কবি কখনও ময়দানের মাঠে। কখনও নন্দন চত্বরে। কপাল বেয়ে ঘাম গড়াচ্ছে। কবি সোৎসাহে তাঁর বন্ধু পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-প্রিয়াঙ্কা সরকারকে নির্দেশ দিয়ে চলেছেন! না, হাঁকডাক করে নয়। তাঁর মতোই পেলব ভাবে। যার এক মাত্র সাক্ষী আনন্দবাজার অনলাইন।

কবি পরিচালক হলে কী হতে পারেন? তার ছোট্ট নমুনা যেন মিলল এ দিন। অন্য সেটের মতো দাপাদাপি নেই। ব্যস্ততা অবশ্যই আছে। কিন্তু সবটাই যেন মসৃণ ভাবে। নীচু তারে বাঁধা। কবি-পরিচালকের হয়ে গলা তুলে ‘কাট’ বলছেন তাঁর সহকারী রাজদীপ! কবি জানিয়েছেন, ভোরে ময়দানের মাঠে গানের একটি মন্তাজ দিয়ে সুরে সুরে শুরু হয়েছে

‘মানবজমিন’-এর শ্যুটিং। এ দিন তাঁর নজরে জুটি পরমব্রত-প্রিয়াঙ্কা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছবির শ্যুট শুরু হওয়ার কথা। নানা কারণে তা পিছিয়ে শুরু হল মার্চের শেষে।
চৈত্রের ঝাঁঝ ভোর থেকেই আকাশে-বাতাসে। তাই প্রথম দিনের শ্যুটে ক্যাজুয়াল টি শার্ট, সাদা পুরো হাতা শার্ট (অবশ্যই হাতা গোটানো), ট্রাউজার্স ছিল পরমব্রতের সাজ। দুর্ঘটনার পরে তিন মাস শয্যাশায়ী থাকার পরে প্রিয়াঙ্কা এই ছবি দিয়ে ফিরলেন সেটে। তাঁর সাজে প্যাস্টেল রঙে ফুল ছাপ সালোয়ার-প্যারালাল, দোপাট্টা। কাঁধ ছোঁয়া কোঁকড়া চুল। চোখে চশমা। অল্প দুলে হাঁটছেন নায়িকা। কিন্তু এক দম সাবলীল।

Advertisement

ছবির গল্প ‘মানবজমিন’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কেন্দ্র করে। কুহু ওরফে প্রিয়াঙ্কা এই সংস্থা চালায়। সঙ্কেত ওরফে পরমব্রত ভালবাসে কুহুকে। তাকে বড় করেছেন তার জ্যেঠু বরেণবাবু। ধীরে ধীরে সবাই নানা ভাবে জড়িয়ে পড়বে সংস্থার সঙ্গে। থাকবে আদানপ্রদানের টানাপড়েনও। কী সেই সমস্যা? ভাঙতে রাজি নন পরিচালক, নায়ক-নায়িকা এমনকী প্রযোজক রানা সরকারও। বরেণবাবুর চরিত্রে অভিনয় করবেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখা যাবে মিশকা হালিমকে। পাশাপাশি, এই ছবি দিয়েই বড় পর্দায় প্রথম অভিনয় করছেন কবি পত্নী দূর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও। দূর্বা এ দিন স্বামীর প্রথম পরিচালনা দেখতে সটান উপস্থিত নন্দন চত্বরে। ছবির গল্প, চিত্রনাট্য, গান শ্রীজাতর। সুর জয় সরকারের। কণ্ঠে শ্রেয়া ঘোষাল, অরিজিৎ সিংহ।

পরমব্রত পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে নিজের মতো সাজিয়ে নিয়েছেন চরিত্রকে। বন্ধুর পরিচালনায় কাজ করতে পেরে ভীষণ খুশি। চওড়া হাসি প্রিয়াঙ্কার মুখেও। অকপটে জানালেন, ‘‘উঠে দাঁড়াতে পারব ভাবতে পারিনি। আজ তো হাঁটছি। পায়ে এখনও ব্যথা আছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন আস্তে আস্তে সব কিছু আবার আগের মতো হয়ে যাবে।’’ তাঁকে দেখেই যথারীতি ঘিরে ধরেছেন ছবি শিকারির দল। ঘামতে ঘামতে পরিচালনার ফাঁকেই কবির দাবি, ‘‘মধ্য চল্লিশে নতুন অভিজ্ঞতা জীবনে খুব কমই ঘটে। আমি ভাগ্যবান। এই বয়সে এসে পরিচালনায় হাত রাখলাম। বেশ ভাল লাগছে। নতুন কিছু করার উদ্দীপনায় বুঁদ হয়ে রয়েছি। চারপাশে এত দিনের বন্ধুরা ঘিরে রয়েছেন। মনে হচ্ছে, ভাল কিছুই উপহার দিতে পারব দর্শকদের।’’

Advertisement
আরও পড়ুন