Celebrity Interview

প্রযোজনা সংস্থা খোলার পরেই দুর্নীতির শিকার অঙ্কুশ, কী ভাবে সামলালেন ঐন্দ্রিলা?

১৪ এপ্রিল মুক্তি পেতে চলেছে অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলার নতুন ছবি ‘লভ ম্যারেজ’। ছবি মুক্তির আগে আড্ডায় অভিনেতা এবং অভিনেত্রী।

Advertisement
উৎসা হাজরা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৫২
Exclusive interview of Tollywood Actor Ankush and Oindrila

‘লভ ম্যারেজ’ ছবি মুক্তির আগে আড্ডায় অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলা — ফাইল চিত্র।

দু’জনেই ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকা। ১৩ বছর ধরে সম্পর্কে রয়েছেন টলিপাড়ার এই জুটি। অঙ্কুশ হাজরা এব‌ং ঐন্দ্রিলা সেন। মুক্তি পেতে চলেছে এই জুটির দ্বিতীয় ছবি ‘লভ ম্যারেজ’। পরিচালনায় প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী। নববর্ষে মুক্তি পেতে চলেছে ‘লভ ম্যারেজ’। ছবি মুক্তির প্রাক্কালে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলা।

প্রশ্ন: চুটিয়ে প্রচার চলছে। অনেকটা বেশি প্রচার হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না?

Advertisement

অঙ্কুশ: না, বেশি প্রচার মনে হচ্ছে না। নিজেদের প্রোডাক্ট নিয়ে যদি গ্রাহক, বা আমাদের কাছে দর্শকের কাছে না পৌঁছতে পারি, তা হলে তো লাভ হবে না। আমাদের ছবিটা অনেক দিন আগে পুরো কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিল। হাতে দু’মাস সময় ছিল। কেন ব্যবহার করব না এই সময়টা? আর প্রযোজকের সাপোর্ট পাওয়াও জরুরি এ ক্ষেত্রে।

ঐন্দ্রিলা: প্রচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ যে কোনও ছবির ক্ষেত্রে। শুধু অভিনয় করলাম, শুটিং হয়ে গেল আমাদের কাজ শেষ, ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়। বর্তমানে একসঙ্গে প্রচুর কাজ হচ্ছে। ‘ওটিটি’র দৌলতে প্রতি দিন নিত্যনতুন সিরিজ়, সিনেমা দর্শক দেখতে পাচ্ছেন। প্রচার না করলে দর্শকের মাথা থেকেই তো বেরিয়ে যাবে সবটা। দর্শকের মাথায় গেঁথে দেওয়া দরকার যে এই ছবিটা আসছে বাংলায়। তাই এক বারের জন্যও মনে হচ্ছে না আমরা বেশি প্রচার করছি।

Tollywood Actor Ankush Hazra and Oindrila Sen

প্রচার কৌশলে দেব-রুক্মিণীকে টেক্কা দিতে চাইছেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা? ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনাদের নানা ধরনের প্রচার কৌশল দেখে অনেকেরই মন্তব্য দেব-রুক্মিণীকে কি নকল করছেন আপনারা? তাঁদের কি টেক্কা দিতে চান?

ঐন্দ্রিলা: না, এটা না কোনও টেক্কা দেওয়ার বিষয়ই নয়। ওদের দেখে এটা শেখার মতো বিষয়। দেব এবং রুক্মিণী ছবি প্রচারের জন্য যা যা পরিকল্পনা করেন ওঁদের থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এবং প্রত্যেকের শেখা উচিত।

অঙ্কুশ: হ্যাঁ, একদমই। দেব ওর ছবির প্রচার নিয়ে ভীষণই খুঁতখুঁতে। দেখুন, দুই ধরনের প্রচার হয়। একটা মানুষ জানতে পারেন যে অমুক ছবিটা আসছে। আর অন্য ক্ষেত্রে ছবি এসে চলে গেল অথচ কেউ জানতেই পারে না। ভাল প্রচার না হলে দর্শকও বুঝতে পারেন যে যাঁদের ছবি, তাঁরাই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আমি কেন দেব?

প্রশ্ন: ‘লভ ম্যারেজ’ সিনেমাটির ইউএসপি কী?

অঙ্কুশ: দেখুন, এই ছবির বাজেট যে অনেকটা তা নয়। নিয়ন্ত্রিত একটা বাজেটের মধ্যে আমরা কী করতে পারি? এমন একটা ছবি তৈরি করতে পারি যার সঙ্গে দর্শক নিজেদের মিল খুঁজে পান। মানুষ সবচেয়ে বেশি মিল খুঁজে পায় সম্পর্ককে কেন্দ্র করে যদি কোনও গল্প তৈরি হয়। চাকীদা এই সম্পর্কগুলোকে ভাল ফুটিয়ে তুলতে পারেন ক্যামেরার সামনে। সেটাই অন্যতম ইউএসপি বলে মনে হয় আমার।

ঐন্দ্রিলা: অঙ্কুশের কথার রেশ ধরেই বলছি আবেগ, সম্পর্ক তো আছেই, তবে এই ছবির ইউএসপি রঞ্জিতদা (রঞ্জিত মল্লিক) এবং অপাদি (অপরাজিতা আঢ্য)। আর এই ছবিতে আমি আর অঙ্কুশ হিরো-হিরোইন নই। আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির ছেলেমেয়ে। সেটা দর্শক কানেক্ট করতে পারবে। শাওন আর দীপু রয়েছে সবার বাড়িতে।

Ankush Hazra and Oindrila Sen

প্রযোজক হওয়ার পর কি অঙ্কুশের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে? ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: প্রযোজক হওয়ার পর কি সিনেমা তৈরির পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরও বেশি জড়িয়ে পড়েছেন বলে মনে হয়?

ঐন্দ্রিলা: না না, আমার মনে হয় ও বরাবরই এই ভাবেই যে কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকত।

অঙ্কুশ: কিছু ছবি পেটের দায়ে করতে হয়। ডাবিং করার সময় বুঝে যাই যে এটা ঠিক তেমন ফল দেবে না। তাই সে ক্ষেত্রে বাকি যা-ই করা হোক না কেন টাকা নষ্ট। প্রিভিউতেও বোঝা যায় কী গন্ডগোল হল। এই ছবির ক্ষেত্রেও আমরা তাই করেছি। প্রিভিউয়ের সময়ই আমি রানেদাকে বলেছিলাম এটাকে ফাটিয়ে প্রচার করি।

প্রশ্ন: খারাপ ছবি বুঝে সত্যিই পেটের দায়ে হ্যাঁ বলেছেন?

অঙ্কুশ: আমি যদিও বললাম পেটের দায়ে। কিন্তু সত্যিই বলছি আমি কোনও দিন এমনটা করিনি। প্রচুর টাকা চাওয়ার পর যখন দেখেছি চিত্রনাট্য মোটে ভাল না, আমি করিনি।

ঐন্দ্রিলা: না, অঙ্কুশ করেনি। করতে পারেনি। ওর মানসিকতা একদমই তেমন নয়। আমি তো ওর সঙ্গে থাকি। সত্যি বলছি এটা।

প্রশ্ন: ইদানীং তো কালো টাকা দুর্নীতির সঙ্গেও টলিপাড়ার অনেকের নাম উঠে আসছে, আপনি এক জন নতুন প্রযোজক, ভয় হয়েছে? ঐন্দ্রিলার সঙ্গে আলোচনা করেছেন এ বিষয়ে?

ঐন্দ্রিলা: অঙ্কুশ বলার আগে আমি ছোট করে বলি। আমি বয়সে অঙ্কুশের তুলনায় হয়তো অনেকটাই ছোট। কিন্তু আমি না ঠিক বুঝতে পারি। আমার যখন মনে হয় যে পরিস্থিতি ঠিক নয়, ওকে সে কথা বলি। ও যাচাই করে আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু দিনের শেষে আমরাও মানুষ, সবটা বোঝা খুব কঠিন। আমি কোথা থেকে টাকা আনছি আপনি কি বলতে পারবেন? অনেক সময় মানুষের ভুল হয়ে যায়। আমাদের এখন সচেতন হওয়া দরকার।

অঙ্কুশ: ঐন্দ্রিলা ঠিকই বলে‌ছে। ধরুন এক জন ফাইন্যান্সার এসেছেন। আমায় সব কাগজও দেখিয়েছেন। কিন্তু সেই কাগজও যে জাল নয় তার প্রমাণ কী আছে? আমার সঙ্গেও তো হয়েছে। আমায় আইআইটি খড়্গপুরের জাল সার্টিফিকেট দেখিয়েছে। তিনি কোথা থেকে টাকা আনছেন সেই প্রশ্নও করেছিলাম। আমায় দেখিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে কোটি টাকা আছে। কিন্তু পরে জানলাম পড়ে আছে মাত্র সাড়ে সাতশো টাকা। এগুলো কি জানা সম্ভব? এ ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে আমিও দুর্নীতির হাত থেকে বেঁচেছি।

প্রশ্ন: বাড়ি থেকে কি চাপ দিচ্ছে এ বার বিয়ের জন্য?

ঐন্দ্রিলা: ধুর ওঁরা বলা ছেড়ে দিয়েছে। এক প্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছে। আর কিছু বলে না।

প্রশ্ন: অনেকের বক্তব্য অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলাকে নাকি প্যাকেজে পাওয়া যায়, এটা কি সত্যি?

অঙ্কুশ: একদমই সত্যি না। কারণ আমাদের একসঙ্গে ছবি করতে সময় লেগে গেল ১০ বছর। আমি দু-তিন জন প্রযোজকের কাছে ঐন্দ্রিলাকে কাস্ট করতে বলেছিলাম, কিন্তু সটান না বলে দিয়েছিল। পরে প্রথম ছবিটা কিন্তু ওকেই আগে বলা হয়েছিল। ওর হয়ে কাউকে বলতে লজ্জা লাগে। মনে হয় কেউ পিছনে বলবে ওই দেখ নিজের প্রেমিকার জন্য বলছে।

ঐন্দ্রিলা: প্যাকেজে আসছে এই কথাটা আমি নিতে পারি না। কষ্ট করে এই জায়গাটা আমরা তৈরি করেছি। তাই এই কথাগুলো শুনতে আমার বিরক্ত লাগে।

আরও পড়ুন
Advertisement