নতুন সিরিজ় মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনে আড্ডায় সৌরসেনী। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর ঝুলিতে ব্যোমকেশও আছে, ফেলুদাও রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ কিছু বছর কাটিয়ে ফেলার পর এখন তিনি অনেকটাই স্থিতিশীল। অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্র। বাংলা নববর্ষে আসতে চলেছে তাঁর নতুন সিরিজ় ‘অমৃতের সন্ধানে’। সিরিজ় মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি সৌরসেনী।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার কত বয়স হল?
সৌরসেনী: ২০১৬ সালে আমার প্রথম বাংলা ছবি ‘মেঘনাদবধ রহস্য’। পরিচালক ছিলেন অনীক দত্ত। তার মানে প্রায় সাত বছর হয়ে গেল। ও বাবা! ভেবে কেমন অবাক লাগছে আমার।
প্রশ্ন: সিরিজ়, সিনেমায় চুটিয়ে কাজ করছেন। কেরিয়ারকে এই ভাবেই সাজাতে চেয়েছিলেন?
সৌরসেনী: জীবনে কখনও কিছু পরিকল্পনা করে এগোইনি। অভিনয় করব সেটাই ভাবিনি। জীবনের প্রথম কাজ ‘চিটাগং’। সেই সুযোগটা খুব অদ্ভুত ভাবে এসেছিল। তার পর ‘উম্রিকা’ করার সময় মনে হয়েছিল যে, অভিনয়টাই করতে চাই। তার পর অনীকদার সঙ্গে কাজ। আমার তো কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ নেই অভিনয়ের। কাজ করতে করতে শিখেছি। যে সুযোগ পেয়েছি তার সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। সুতরাং বর্তমানে আমি কেরিয়ারের যে জায়গায়, তাতে সত্যিই খুশি। ভাল কাজ করলে, আশা করি আরও ভাল জায়গায় যাব।
প্রশ্ন: যে কোনও অভিনেত্রীর মতোই আপনার জীবনটাও বাইরে থেকে দেখলে দারুণ লাগে। কিন্তু আদতে সেটা কেমন?
সৌরসেনী: যাঁরা ন’টা-পাঁচটার চাকরি করেন, আমাদের জীবনটাও অনেকটা তাই। তবে আমাদের তো সময়ের কোনও ঠিক থাকে না। তাই বাইরে থেকে যতটা ঝাঁ-চকচকে মনে হয়, ঠিক ততটা ‘গ্ল্যামার্স’ জীবন আমাদের নয়। তবে ঠিক আছে, আমি এতেই খুশি। চুটিয়ে কাজ করছি। এই নববর্ষে যে সিরিজ়টি আসছে ‘অমৃতের সন্ধানে’, সেটাও দর্শকের ভাল লাগবে আমার আশা। দর্শক ভালবাসা দিচ্ছে বলেই তো এই কাজটা করছি।
প্রশ্ন: ‘অমৃতের সন্ধানে’ কেন পছন্দ করবেন দর্শক?
সৌরসেনী: পরিচালক অভিনন্দন দত্ত যখন আমায় এই গল্পটা শোনায়, দারুণ পছন্দ হয়েছিল আমার। বেশ রোমাঞ্চকর, মাইথোলজিক্যাল থ্রিলার। একটা রহস্য রয়েছে এই গল্পে। আর এমন গল্প বাঙালিরা দেখতে ভালবাসে।
প্রশ্ন: আগে ব্যোমকেশে অভিনয় করেছেন, আবার এখন ফেলুদায় অভিনয় করছেন। খানিকটা একই ধরনের কাজ বেছে ফেলছেন বলে মনে হচ্ছে না?
সৌরসেনী: একদমই নয়। ‘অমৃতের সন্ধানে’র চরিত্র দিশা চট্টোপাধ্যায় ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছে। ফেলুদায় একটি পুলিশের চরিত্র। অভিনেতা হিসাবে তো আমার এক বারও মনে হয়নি যে, একই ধরনের চরিত্র বার বার করছি। আর তা ছাড়া আমার তো মনে হয়, যদি একই ধরনের চরিত্র বাছাই করি, সেটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ। একই চরিত্র বিভিন্ন জায়গায় কতটা আলাদা ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারছি সেটাই তো বড় ব্যাপার।
প্রশ্ন: একটু আগে বললেন আপনি অভিনয়ের কোনও প্রশিক্ষণ নেননি। কাজ করতে করতে শেখা কতটা কঠিন?
সৌরসেনী: বেশ কঠিন। অনীকদার সঙ্গে যখন কাজ করেছি, তখন সোহাগ ম্যাম (সোহাগ সেন)-এর থেকে কাজ শেখার সুযোগ পাই। আমি আমার পরিচালকদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। ওরা যেমনটা বলে ঠিক তেমনটাই করার চেষ্টা করি। তা ছাড়া সেটে সিনিয়রদেরকে লক্ষ করলে অনেক কিছু শেখা যায়। আর যেটা খুব জরুরি সেটা হল নিয়মানুবর্তিতা। তবেই জীবনে উন্নতি করা যাবে।
প্রশ্ন: এই পেশায় আসবেন আপনি সেটা নিজেই কল্পনা করেননি। পরিবারের কেউ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নয়। কখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন?
সৌরসেনী: না, কখনও না। আমি যা পেয়েছি, তাতেই খুশি। নিরাপত্তাহীনতার তো কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আর কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন আমি কখনও মিশিয়ে ফেলি না। তাই হয়তো এই সব কিছু আমায় প্রভাবিত করতে পারে না।
প্রশ্ন: অভিনয় না করলে কী করতেন?
সৌরসেনী: এটা বলা খুবই কঠিন। আসলে ছোট থেকে এক একটা সময় আমি এক একটা পেশায় যেতে চাইতাম। বাড়ির সবাই অ্যাকাডেমিক্সেই আছেন। তাই হয়তো শিক্ষিকা হতাম।
প্রশ্ন: চারিদিকে তো আপনার প্রেম নিয়ে অনেক চর্চা। নিখিল জৈনের ‘রঙ্গোলি’ ব্র্যান্ডের মুখ হওয়ার পর অনেকেরই ধারণা যে, তাঁর সঙ্গেই আপনি প্রেম করছেন। সেটা কি সত্যি?
সৌরসেনী: বেচারা নিখিল! আমি যাই বলি না কেন লোকে যেটা ভাবার সেটাই ভাববে। এখন যদি বলি আমি প্রেম করছি না, তখন লোকে ভাববে মিথ্যে বলছি। আবার যদি বলি হ্যাঁ, করছি, তা নিয়েও বিতর্কের শেষ থাকবে না। তাই কিছু বলতেই চাই না।
প্রশ্ন: আপনার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসটা কী তবে?
সৌরসেনী:আমি সিঙ্গল, আবার কী!