Celebrity Interview

মেয়েদের রাতের ঘুম কেড়েছে ‘মেয়েবেলা’র ডোডো, ‘কিন্তু আমি তো খুব বোরিং’, জবাব অভিনেতার

এই মুহূর্তে দর্শকমহলে তাঁর একটাই পরিচয়। তিনি সকলের ডোডোদা। ‘মেয়েবেলা’ সিরিয়ালের ডোডো ওরফে অর্পণ ঘোষালকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। ব্যক্তিজীবনে তিনি কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement
উৎসা হাজরা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০০
Exclusive interview of Star Jalsha serial Meyebela Actor Dodo aka Arpan Ghoshal

‘মেয়েবেলা’র ডোডো ব্যক্তিগত জীবনে কেমন? অকপট অর্পণ ঘোষাল। ছবি: সংগৃহীত।

তিনি নাকি এখন ‘বং ক্রাশ’। আগে ‘জাজমেন্ট ডে’, ‘শজারুর কাঁটা’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর প্রথম ভালবাসা নাটক। তবে এখন তিনি পরিচিত মেয়েবেলার ‘ডোডো’ হিসাবে। সকলের মনে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন অর্পণ ঘোষাল। আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি ‘মেয়েবেলা’ সিরিয়ালের ডোডো ওরফে অর্পণ।

প্রশ্ন: ‘ডোডো’এখন ‘বং ক্রাশ’। নিশ্চয়ই উপভোগ করছেন?

Advertisement

অর্পণ: এগুলো আসলে ক্ষণিকের ব্যাপার। এই আছে, এই নেই। যে কাজটার জন্য আমি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছি, সেই কাজেই নজর দেওয়া ভাল। ক্রাশ আজ আছি, কাল থাকব না। অন্য কেউ হবে। খুব বেশি ভাবছি না।

প্রশ্ন: আপনার প্রথম প্রেম তো নাটক। সিরিয়ালে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে না?

অর্পণ: এই সিরিয়ালে রাজি হওয়ার মূল কারণ, ওঁরা বলেছিলেন থিয়েটার করার সময় আমায় দেওয়া হবে। আমাদের দল ‘নটধা’-তে প্রতিটা নাটকের জন্য যে সময়টা দেওয়া হয়, নতুন নাটক আমি শুরু করতে পারব না। কিন্তু পুরনো যে নাটকগুলোয় আছি, সেখানে তো রিহার্সালের সময় দিতে হবে। সেই সময় আমি পুরোটা দিতে পারছি তা বলব না। তবে আমায় অনেকটাই থিয়েটারের জন্য সময় দিচ্ছেন এঁরা। তাই জীবনে আমার এখন কোনও ছুটি নেই।

 Actor Arpan Ghoshal

অর্পণের অভিনয় যাত্রার শুরু কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ কবে জন্মাল?

অর্পণ: পেশা হিসাবে ভাল লাগা তৈরির আগে যখন আমি ‘নটধা’র সঙ্গে যুক্ত হই, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, শিব মুখোপাধ্যায়ের ক্লাস করি তখনই এক অন্য ভাল লাগা জন্মায়। সেই পরিবেশটা দেখে মনে হয়েছিল, আমরা থিয়েটার করছি না। আমরা কিছু ভাল কাজ করছি। এই অনুভূতি জন্মানোর পর থেকেই মনে হয়েছিল, অভিনয়টা করলে মন্দ হবে না। তার পর আমি কনটেন্ট রাইটারের কাজও করেছি। তার পর মনে হল, শুধু এই কাজটাই করি। তবে জানি না, কত দিন এটাকে পেশা হিসাবে টিকিয়ে রাখতে পারব।

প্রশ্ন: শুধু থিয়েটার করে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসে?

অর্পণ: অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা তখনই তৈরি হয়, যখন নিজের জীবনধারায় অনেক পরিবর্তন আসে। গাড়ি, বড় ফ্ল্যাট, সব বিলাসিতা যদি জীবনে চাই, তা হলে সমস্যা আছে। যাঁরা নতুন অভিনয় জগতে আসছেন বা কয়েক বছর হল কাজ করছেন, তাঁদের বুঝেশুনে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা উচিত বলে আমার মত। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের যাঁরা, তাঁদের তো এই নিয়ন্ত্রণ থাকাই উচিত। যাতে কোথাও আপস না করতে হয়। বিশেষত এই ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁদের খুঁটির জোর নেই, তাঁদের তো ভাবাই দরকার। আজ আমি বাইক চালিয়ে শুটিংয়ে আসি। এটা আমার হাতের মুঠোয়। এর বাইরে কিছু করতে গেলে হয়তো এই মুহূর্তে আমি চাপে পড়ে যাব।

প্রশ্ন: খুঁটির জোর থাকা কতটা দরকার এই ইন্ডাস্ট্রিতে?

অর্পণ: ‘খুঁটি’ প্রথম বড় সুযোগটা পেতে সাহায্য করে। যেটা আমি ‘দ্য জাজমেন্ট ডে’-তে পেয়েছিলাম। আমায় অয়ন চক্রবর্তী দিয়েছিলেন। তবে টিকে থাকতে গেলে প্রতিভা লাগে। খুঁটির জোরে কিছু হয় না।

প্রশ্ন: ডোডোকে তো সবাই দেখছেন, জানছেন। কিন্তু ব্যক্তি অর্পণ ঠিক কেমন মানুষ?

অর্পণ: আমি এমনিতেই খুব চুপচাপ। আমার জীবনটাই খুব বোরিং। সাক্ষাৎকার শুরুর আগেই আপনাকে বলছিলাম না, এই লেখাটা কেউ পড়বেন না। কারণ মশলাদার কথা যে আমি বলতে পারি না।

প্রশ্ন: আপনি তো বিবাহিত?

অর্পণ: হ্যাঁ, ছোটবেলার বান্ধবীকে বিয়ে করেছি।

প্রশ্ন: আপনার বিয়ের ছবি দেখে অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন, জানেন কি?

অর্পণ: এটা খুবই অস্বস্তিকর বিষয়। এ বার আমি বিবাহিত জেনে যদি কেউ আমার অভিনয় ভাল না বাসেন, তা হলে আর কী বলব! আমার মনে হয়, আমায় যাঁরা ভালবাসেন নিশ্চয়ই মেনে নেবেন। একটা ঘটনা বলব?

প্রশ্ন: বলুন না..।

অর্পণ: মনে আছে, একটি মেয়ে আমায় অনেক কার্ড পাঠাতেন। আমি বলেছিলাম, ‘‘এত যে আপনি কার্ড পাঠান, আমার তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে।’’ মেয়েটি বলেছিলেন, ‘‘গোলপোস্টে তো গোলকিপার থাকবেই। তা বলে কি কেউ গোল করার চেষ্টা করবে না?’’ এই কথাটা আমার এখনও মনে আছে (হাসি..)

 Actor Dodo aka Arpan Ghoshal

ছোটবেলার বান্ধবীর সঙ্গে প্রেম, তার পর বিয়ের গল্প শোনালেন অর্পণ। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: নায়করা সাধারণত নিজেদের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস লুকোনোর চেষ্টা করেন। আপনি কখনও এ সব নিয়ে ভেবেছেন?

অর্পণ: লুকোনোর কিছু নেই। ব্যক্তিগত জীবনটা গোছানো হলে কাজে মন দিতে সুবিধা হয়। আমি যাঁকে বিয়ে করেছি, তাঁর সঙ্গে আমার ক্লাস টেন থেকে বন্ধুত্ব। সে আমার অনেক খারাপ সময়ের সাক্ষী। আমি যখন লাইমলাইটে আসিনি, তখন ও আমায় বলত, “তুই ভাল অভিনেতা হবি।” সে আমার জীবনে কনস্ট্যান্ট। তাই বিয়েটা করেই নিয়েছি। দু’বছর হল আমাদের বিয়ে হয়েছে।

প্রশ্ন: ‘মেয়েবেলা’ সিরিয়ালের দৌলতে আপনি হঠাৎই অনেক মানুষের বসার ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন। এই ‘খ্যাতি’ কী ভাবে দেখছেন আপনি?

অর্পণ: আমার চেয়ে অনেক বেশি বিখ্যাত মানুষ আছে। এ সব নিয়ে ভাবতে বসলে তো খুব মুশকিল। আমি সব সময়ই মনে করি আমি খুবই নগণ্য এক জন।

প্রশ্ন: আপনার জীবনের অনুপ্রেরণা কে?

অর্পণ: অর্ণ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিনয়ই আমায় অনুপ্রেরণা জোগায়।

আরও পড়ুন
Advertisement