চিত্রপরিচালক গৌতম হালদার। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক গৌতম হালদার। শুক্রবার সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৭। পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে তিনি অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
কেরিয়ারের শুরুতে সিনেমা পরিচালনার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন গৌতম। ২০০৩ সালে মুক্তি পায় তাঁর পরিচালিত ছবি ‘ভালো থেকো’। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিদ্যা বালন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার প্রমুখ। উল্লেখ্য, এই ছবিটিই বিদ্যা বালনের কেরিয়ারের প্রথম ছবি। ছবিটি সেরা অডিয়োগ্রাফি, সেরা সিনেমাটাগ্রাফির জাতীয় পুরস্কার-সহ বিশেষ জুরি পুরস্কারও জিতে নেয়। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় গৌতম পরিচালিত ছবি ‘নির্বাণ’। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাখি গুলজ়ার। উস্তাদ আমজাদ আলি খানের বিশেষ ঘনিষ্ঠ ছিলেন গৌতম। ১৯৯৯ সালে সরোদশিল্পীকে নিয়ে গৌতম তৈরি করেন ‘স্ট্রিংস ফর ফ্রিডম’ তথ্যচিত্রটি।
পাশাপাশি নাট্যজগতের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন গৌতম। দীর্ঘ কেরিয়ারে তিনি প্রায় ৮০টি নাটকের নির্দেশক ছিলেন। সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটকটি নির্দেশনা করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রথমত, ‘রক্তকরবী’-র শতবর্ষ, দ্বিতীয়ত, সামাজিক দিক থেকে আমরা যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছি সেখানে এই নাটক আজও প্রাসঙ্গিক।’’ এই নাটকে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেন চৈতি ঘোষাল। ভারাক্রান্ত কণ্ঠে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না! গৌতমদা ছিলেন আমার শিক্ষক। ওঁর হাত ধরে বহু বার ‘রক্তকরবী’ করেছি। নন্দিনীর তাগিদে নয়, ‘রক্তকরবী’ মঞ্চস্থ হয়েছে গৌতমদার তাগিদে। সামনেও আমাদের একাধিক শো রয়েছে। নিজেকে দিশাহারা মনে হচ্ছে।’’ গৌতমের প্রয়াণে টলিপাড়া এবং বাংলার নাট্যজগতে শোকের ছায়া।