‘বগলা মামা যুগ যুগ জিও’ ছবিতে খরাজ মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
‘সোনাদা’-খ্যাত পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন ছবির ঘোষণার পর থেকেই ‘বগলা মামা যুগ যুগ জিও’ ঘিরে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি ছবির টিজ়ার প্রকাশ্যে আসার পর সেই কৌতূহলের পারদ ঊর্ধ্বমুখী।
লেখক রাজকুমার মৈত্র সৃষ্ট এই চরিত্রকে ফিরিয়ে আনার কারণ কী, প্রশ্ন ছিল পরিচালকের কাছে। পরিচালক বললেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যে চারটে ছবি করেছি, সেখানে আমি বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি অথবা হারিয়ে যাওয়া মানুষকে খোঁজার চেষ্টা করেছি। সেই ভাবনা থেকেই এই ছবি।’’ কথা প্রসঙ্গেই ধ্রুব তাঁর ‘গোলন্দাজ’ ছবিটির উদাহরণ দিলেন। বললেন, ‘‘নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীও তো হারিয়েই গিয়েছিলেন।’’ সত্তরের দশকে বগলা মামা চরিত্রটি পাঠকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। পরিচালক বললেন, ‘‘বাংলায় একসময় কমেডি ছবির একটা স্বতস্ত্র ঘরানা ছিল, যেটা বিগত ৪০ বছর ধরে অনুপস্থিত। আমি সেই ঘরানাকে ফিরিয়ে আনতে চাইছি। আমার মনে হয়, দর্শক বগলা মামাকে পছন্দ করবেন।’
এর আগে পরিচালকের থেকে সোনাদা সিরিজ় পেয়েছেন দর্শক। এই প্রথম তিনি কমেডির ঘরানায় পা রাখলেন। কতটা আত্মবিশ্বাসী তিনি? ধ্রুব বলছিলেন, ‘‘আমার কাছে বাংলার ইতিহাস সন্ধান করা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, বাংলার হারিয়ে যাওয়া কোনও ধারাকে খুঁজে ফিরিয়ে আনা ততটাই আকর্ষণীয়।’’
আশির দশকের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবিতে বাঙালির হারিয়ে যাওয়া নস্টালজিয়াকে তুলে ধরবে বগলা মামা চরিত্রটি। এই চরিত্রে রয়েছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। দিতিপ্রিয়া রায় অভিনীত মধুজা চরিত্রটি ভালবাসে কেবুকে (ঋদ্ধি সেন)। পাশাপাশি পরাবিবারিক মূল্যবোধের প্রতিও সে অনুগত।
ছবিতে খল চরিত্রে রয়েছেন রজতাভ দত্ত। তার অভিনীত ফেলু আচার্য স্থানীয় ‘ডন’। কিন্তু মূল্যবোধ এবং লড়াইয়ের মাধ্যমেই সমাজে নিজের কাঙ্ক্ষিত জায়গা আদায় করে নিতে সে বদ্ধপরিকর। হারিয়ে যাওয়া এক মিষ্টি সময়ের প্রতীক কৃষ্ণার চরিত্রে রয়েছেন অপরাজিতা আ়ঢ্য। বগলা, মেজো কাকা (কৌশিক সেন) এবং কৃষ্ণার ত্রিকোণ প্রেমের ইঙ্গিত ছবির অন্যতম আকর্ষণ। পাশাপাশি বগলা এবং মেজো কাকার টক-ঝাল-মিষ্টি সম্পর্কও ছবির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কেবুর ছোট কাকা (বিশ্বনাথ বসু) কিন্তু বিজ্ঞানী এবং বগলার প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন। কেবুর মা সরমার চরিত্রে রয়েছেন রেশমি সেন। বগলাকে তিনি নিজের ভাইয়ের মতোই মানেন।
এ ছাড়াও যাদের কথা না বললেই নয়, তারা বগলা মামার পাঁচ বন্ধু— ফাইভ মাস্কেটিয়ার্স। কেবু ছাড়াও সেখানে রয়েছে ত্রিদিব (উজান চট্টোপাধ্যায়), নাড়ু (মিঠুন গুপ্ত), ধনু (জিৎ সুন্দর) এবং সাধন (সুদীপ ধারা)। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী মাসেই এই ছবি মুক্তি পাবে।