র্যাম্পে হাঁটলেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগেই র্যাম্পে হেঁটে চমক দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে একই র্যাম্পে হেঁটেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। এ বার সেই একই মেজাজে ধরা দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি! বড়দিনে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন পরিচালিত বিষ্ণুপুর মেলার আদিবাসী ফ্যাশন শোয়ে অন্যদের সঙ্গে পা মেলালেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রীকে। শুধু তা-ই নয়, ক্যানসারের মতো রোগ নিয়ে সচেতনতায় নৃত্যপরিবেশও করেন তিনি।
আদিবাসী বেশভূষায় সেজেছিলেন জ্যোৎস্না। পরনে ছিল ঘিয়ে রঙের শাড়ি। কানে-নাকে-গলায় মানানসই গয়না। মাথায় পালক গোঁজা। ‘পেশাদার’ শিল্পীদের মতোই হাঁটলেন মন্ত্রী। শুধু তিনি নন, আদিবাসী সমাজের সফল ব্যক্তিরাও পা মেলালেন র্যাম্পে। ফ্যাশন শোয়ে দেখা গেল, আদিবাসী সমাজের থেকে যাঁরা চিকিৎসক, আইনজীবী, পাইলট বা অন্যান্য পেশায় আছেন, তাঁরা হাঁটলেন। উদ্দেশ্য একটাই আদিবাসী সমাজের কাছে বার্তা দেওয়া, তারা কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। পড়াশোনা এবং অধ্যাবসায়ের মধ্যে থাকলেই স্বপ্নপূরণ হবে!
জ্যোৎস্না যখন র্যাম্পে হাঁটলেন তখন পিছনের জায়ান্ট স্ক্রিনে কখনও ফুটে উঠল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ছবি, আবার দেখা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। শেষে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পকে তুলে ধরলেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না। রাজনৈতিক ময়দান ছেড়ে এই ভাবে র্যাম্পে হেঁটে, নৃত্য পরিবেশন করতে দেখে মন্ত্রীকে নিয়ে আপ্লুত স্থানীয়েরা।
মেলা কমিটির সভাপতি অনসূয়া রায় জানান, আদিবাসী সংস্কৃতিকে জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য এই অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে পেয়ে খুশি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা একটি জীবন আছে। তবে মন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান দেখে সত্যিই তিনিও অবাক হয়েছি।’’ প্রথম বার র্যাম্পে হেঁটে কেমন লাগল জ্যোৎস্নার? অনুষ্ঠান শেষে তিনি জানান তাঁর অনুভূতির কথা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তো সব সময়ই রাজনীতি করি, রাজনীতির রাস্তায় হাঁটি। সে ক্ষেত্রে র্যাম্পে হেঁটে ভাল লাগছে। র্যাম্পে হাঁটা আর রাজনীতি রাস্তায় হাঁটার মধ্যে তফাৎ আছে।’’ সেই তফাৎকে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছেন বলেই জানালেন তিনি। শেষে বললেন, ‘‘পড়াশোনার বিকল্প কিছু হয় না। সেই বার্তাই আমরা এই মঞ্চ থেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আদিবাসী সাজে হেঁটেছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ।’’