বলিউডে বিদেশি নিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে বলে দাবি রিপোর্টে
বিদেশ থেকে পেশাদার এনে কাজ করাচ্ছে বলিউড। অথচ যাঁরা সেই কাজ করছেন, তাঁদের ৯০ শতাংশের কাছে বলিউডে কাজ করার বৈধ অনুমোদনই (ওয়ার্ক পারমিট) নেই! এমনই দাবি করেছে ভারতীয় ফিল্মের কলাকুশলীদের ইউনিয়ন। তাদের বক্তব্য, বিদেশ থেকে আসা ওই পেশাদারদের জন্য বহু ভারতীয় কাজ হারাচ্ছেন বলিউডে। অথচ যাঁদের জন্য তাঁদের এই দুরবস্থা, তাঁরা আইনত বলিউডে কাজ করতেই পারেন না!
তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম ক্ষেত্রের মতো ভারতীয় সিনেমা জগতেও সম্প্রতি বিদেশি পেশাদারদের উপর নির্ভরতা বেড়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বলিউডে সিনেম্যাটোগ্রাফি, নির্দেশনা, প্রযোজনা, চিত্রনাট্য লেখা থেকে শুরু করে জুনিয়র শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, রূপটান শিল্পী, হেয়ার স্টাইলিস্ট, অ্যাকশন ডিরেক্টর, স্টান্টম্যান, কস্টিউম ডিজাইনার, আর্ট ডিরেক্টর— সব ক্ষেত্রেই বিদেশি নিয়োগের প্রবণতা ইদানীং বেড়েছে। মূলত ব্রিটেন, রাশিয়া এবং উজবেকিস্তানের পেশাদারদের ওই কাজে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তার কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, বহু প্রতিভা চেখে দেখে কাজের সঠিক লোকটি খুঁজে বার করা। দ্বিতীয়ত, এতে আর্থিক ভাবেও উপকৃত হয় ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প।
যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ ইউনিয়নগুলি। ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ’-এর চেয়ারম্যান অশোক দুবে বলেছেন, ‘‘ছবি বানানোর কাজের সঙ্গে কারা যুক্ত থাকবেন, তা মূলত ঠিক করেন প্রযোজকেরা। বিদেশিদের নিয়োগ করার ফলে আমাদের দেশের লোক কাজ পাচ্ছেন না।’’ শুধু তা-ই নয়, অধিকাংশ বিদেশিই ভিসা সংক্রান্ত নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ‘বেআইনি’ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অশোকের দাবি, প্রায় ৯০ শতাংশ বিদেশি পেশাদার বেআইনি ভাবে এ দেশে কাজ করছেন। তাঁদের কাছে যথাযথ কাগজপত্রও নেই। এ নিয়ে তিনি মুম্বই পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান অশোক। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা বিষয়টা একাধিক বার মুম্বই পুলিশের নজরে এনেছি আমরা। কিন্তু আমাদের কথায় কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমাদের ইউনিয়নে অন্তত তিন লাখ পেশাদার রয়েছেন। আমরা তাঁদের জন্য লড়ে যাব।’’
বস্তুত, ভারতে পাকিস্তানি অভিনেতাদের বিরুদ্ধে যে ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, সে ভাবে কেন অন্য দেশের পেশাদারদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। বিজেপি চিত্রপট ইউনিয়নের সভাপতি সন্দীপ ঘুগেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় কলাকুশলীদের প্রতি এটা অবিচার ছাড়া আর কিছু নয়। পর্যটকের ভিসা নিয়ে এ দেশে এসে কাজ করে যাচ্ছেন বিদেশিরা। আমি মুম্বই পুলিশ এবং ফরেনার্স রেজিস্ট্রেশন অফিসে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ পুলিশের তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।