স্ত্রী জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভরত কল।
সবাই বিয়ের দিন মনে রাখেন। উদ্যাপনেও মাতেন। ভরত কল হাঁটলেন এক দম অন্য পথে। শনিবার তিনি বাগদানের ছ’বছর পূর্তি পালন করতে তিন দিনের জন্য সপরিবারে পৌঁছে গিয়েছেন পুরুলিয়ায়! সামাজিক পাতায় তার আগেই অভিনেতা জানিয়েছেন, ২০১৫-র ৯ জুলাই তাঁর আর জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়ের বাগদান সম্পন্ন হয়েছিল। কেন এমন ভিন্ন ভাবনা? গন্তব্যে যেতে যেতেই আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে সেই রহস্য ফাঁস করলেন ভরত কল। জানালেন, ‘‘আমাদের তিন ধাপ পেরিয়ে বিয়ে হয়েছে। জুলাই মাসের আজকের দিনে বাগদান বা বাঙালি মতে আশীর্বাদ হয়েছিল। ১৬ সেপ্টেম্বর আইনি বিয়ে। ২৬ অক্টোবর দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বাঙালি বিয়ে।’’ শনিবার উদ্যাপনের প্রথম পর্ব। অভিনেতার কথায়, এমন দিন মনে না রেখে থাকা যায়!
ছ’বছর আগে কেমন ছিল আজকের দিন? ভরতের কথায়, ‘‘দুই পরিবারের আত্মীয়দের উপস্থিতিতে আশীর্বাদের দিন থেকেই বিয়ে বাড়ির পরিবেশ। কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত হোটেলে আশীর্বাদ হয়েছিল আমাদের। আমার বাবা, কাকা, মামা, মাসি, দুবাই থেকে দিদিরা, পিসি, লন্ডনের চিকিৎসক দাদা, কাশ্মীরের হোস্টেলের বন্ধু-বান্ধব, টলিউড, বলিউডের সহ-অভিনেতা-- কেউ বাদ যাননি। জয়শ্রীর পরিবারের মাসি, মামা সহ সমস্ত আত্মীয়ও এসেছিলেন।" ভরত কাশ্মীরী ব্রাহ্মণ। জয়শ্রী বাঙালি ব্রাহ্মণ। ফলে, দুই পরিবারের রীতি-রেওয়াজ প্রায় এক। অভিনেতার কথায়, ভাষা, জাত ভিন্ন হলেও উদ্যাপনে মেতে উঠতে তাই কারওর কোনও অসুবিধে হয়নি।
ভরতের মনে পড়ছে, তিনি আর তাঁর বড় জামাইবাবু মিলে কলকাতায় আমন্ত্রিতদের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। ‘‘সকাল থেকে শুধু দৌড়ে গিয়েছি। দম ফেলার ফুরসত পাইনি। সন্ধে বেলায় আশীর্বাদ পর্ব। কেমন ভাবে হোটেল সাজানো হবে, তার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বড় জামাইবাবু’’, স্মৃতি হাতড়ে জানালেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, আশীর্বাদের পর অদ্ভুত ভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তার এক বছর আগে থেকেই চেনেন জয়শ্রীকে। এক সঙ্গে কাজও করেছেন। এ দিন দুই পরিবার বিয়ের সবুজ সংকেত দিতেই অভিনেতার মনে হয়েছিল, এ বার তিনি জয়শ্রীর দায়িত্ব নিতে পারবেন। পাশাপাশি এটাও বুঝেছিলেন, তাঁর থেকেও বেশি দায়িত্ববান তাঁর হবু স্ত্রী। পরিবারের দেখাশোনায় কোনও ত্রুটি হবে না। অভিনেতা আরও জানান, আইনি বিয়ের দিন তাঁর হয়ে সাক্ষী দিয়েছিলেন প্রযোজক নিসপাল সিংহ রানে, সাংসদ দেব অধিকারীর মতো টলিউডের তারকা অভিনেতা-প্রযোজকেরা।
বাঙালির বিয়ের আশীর্বাদ মানেই অর্ধেক বিয়ে। জমিয়ে খাওয়াদাওয়া হয়। সেই মতো ভূরিভোজ হয়েছিল ভরত-জয়শ্রীর আশীর্বাদেও। অভিনেতা জানালেন, লুচি, ছোলার ডাল, বাসন্তী পোলাও, কষা মাংস, মাছের পাতুরি থেকে পাস্তা-- বাঙালি-কন্টিনেন্টাল খাবারের এলাহি আয়োজন ছিল সে দিন।