বারিষের আক্ষেপ নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া সৃজিতের? ছবি: সংগৃহীত।
ইতিমধ্যেই ‘টেক্কা’, ‘এক্স=প্রেম’-এর মতো ছবির গান লিখেছেন। আগামী দিনেও হাতে রয়েছে বেশ কিছু কাজ। কিন্তু তা-ও গীতিকার বারিষের আক্ষেপ, গান লিখে এখনও যথাযোগ্য কৃতিত্ব পাওয়া যায় না। শ্রোতাদের সমাজমাধ্যমের স্টেটাসে ঘুরে বেড়ায় তাঁর লেখা গানের পঙ্ক্তি। কখনও বা কোনও যুবক তাঁর গানের পঙ্ক্তির মাধ্যমে প্রেম নিবেদন করেন প্রেমিকাকে। কিন্তু গানটা কার লেখা সেটাই অনেকে জানেন না।
তাই সমাজমাধ্যমে বারিষের ক্ষোভপ্রকাশ, “গান লেখা এমনিতেই থ্যাংকলেস জব। কৃতিত্ব চাওয়া রীতিমতো অপরাধ।” ইউটিউবে কোনও গান প্রকাশিত হলে উপরে অর্থাৎ ‘থাম্বনেল’-এ কেবল কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালকের নাম দেওয়া হয়। শিরোনামে থাকে না গীতিকারের নাম। এই নিয়েই উষ্মা প্রকাশ করেছেন তিনি। খোঁচা দিয়েই লেখেন, “সত্যিই তো! লিখিয়েদের লেখাই তো তাদের আসল পরিচিতি, নাম নয়। তাদের অর্থের প্রয়োজন কোনও কালেই হত না। এখন নামও লাগে না।” এর সঙ্গে একটি হোয়াটস্অ্যাপ কথোপকথনের প্রতিচ্ছবিও ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেও আক্ষেপ করে বারিষ জানান, গীতিকারদের কখনওই যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, “এটা যে শুধু আমার সঙ্গেই হচ্ছে, তা নয়। আমার সিনিয়রেরাও ভুক্তভোগী। বহু দিন ধরেই চলছে। আমি এই বৃত্তে নতুন এসে পড়েছি। ফলে আমারও একই অভিজ্ঞতা হচ্ছে।”
ছবির ‘মিউজ়িক লঞ্চ’ অথবা সঙ্গীত প্রকাশ অনুষ্ঠানে অনেক সময় গীতিকারদের ডাকাও হয় না। বারিষের কথায়, “হয়তো মিউজ়িক লঞ্চে গীতিকারকে ডাকতেই ভুলে গিয়েছেন পরিচালক। অনুষ্ঠানে ডাকা হলেও, হয়তো মঞ্চে ডাকা হয়নি। এমন অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে।” তবে কোন ছবির ক্ষেত্রে এমন হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনতে নারাজ গীতিকার। তাঁর কথায়, “কোনও এক জন এমন করেছেন, তা নয়। কোনও নির্দিষ্ট এক জন মানুষ কৃতিত্ব দিচ্ছেন না, এমন নয়। আসলে এটা একটা মানসিকতা। অনেকেই এই মানসিকতার শিকার।”
ব্যঙ্গের সুরেই বারিষ বলেন, “লেখার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই যেন অনেক গীতিকারের জন্য। ইউটিউবেও নীচে গীতিকারের নাম যাচ্ছে, এই ঢের। আবার শিরোনামে কৃতিত্ব চাওয়ার কী আছে!” ছবিতে গান লেখার ক্ষেত্রে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে এর মধ্যে ভাল অভিজ্ঞতাও রয়েছে। বারিষ বলেন, “প্রচুর মানুষ রয়েছেন, যাঁরা যথেষ্ট মর্যাদা দেন। যেমন সৃজিতদার মতো পরিচালক খুব কম দেখেছি। নিজে ফোন করে সকলকে বলেন, ‘কাল মিউজ়িক লঞ্চ। চলে আসিস।’ ইন্দ্রদীপদার (ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত) সঙ্গেও একই অভিজ্ঞতা। রণজয় ভট্টাচার্য, ঈশানদা, সানাইদার মতো সুরকারের সঙ্গেও কাজ করে ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে।” বারিষের এই পোস্ট সমাজমাধ্যমে সৃজিত নিজেও ভাগ করে নিয়ে লিখেছেন, ‘প্রতিবাদটুকু থাক’।
বারিষের এই পোস্টের মন্তব্য বিভাগে খানিক মজা করেই শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “একটা সহজ টোটকা আছে। গান লিখতে এত টাকা নেবে যে নাম না দিতে ওদের গায়ে লাগবে।” এই প্রসঙ্গে বারিষের মন্তব্য, “এই পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করব। কিন্তু দাম বাড়িয়ে ফেললে আবার কাজ পাওয়া যাবে না। তুলনামূলক ভাবে আরও নতুনদের দিয়ে হয়তো তখন অনেক কম পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নেওয়া হবে। তবে এ বার থেকে, যেটা পারিশ্রমিক সেটাই চাইব। নাম তো পাচ্ছি না। দামটুকু যাতে পাই।”