টোটা রায়চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত।
অনেকে বলেন, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার যে সব স্কেচ এঁকেছিলেন, তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত এই চরিত্রে যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁদের মধ্যে টোটা রায়চৌধুরীর সাদৃশ্য সব থেকে বেশি। খুশির খবর, চতুর্থ বার তিনি ফেলুদা চরিত্রে ওয়েব সিরিজ়ে ফিরতে চলেছেন। চলতি মাসেই যে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত পরবর্তী ফেলুদার শুটিং শুরু হওয়ার কথা, সে খবর আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এ বারের গল্প ‘ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর’। ফেলুদা চরিত্রের জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন টোটা?
বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে নতুন ফেলুদা নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন টোটা। তার পর অনুরাগীদের তরফে কেমন প্রতিক্রিয়া পেলেন? টোটা হেসে বললেন, ‘‘অসাধারণ! প্রতিটা মন্তব্য পড়ে দেখেছি। সকলেই যে উদ্গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করে আছেন, সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। তাই দর্শকের প্রত্যাশার কথা মাথায় রেখে প্রত্যেক বারই দায়িত্বও বাড়ে।’’
অন্য যে কোনও কাজের শুটিং আর ফেলুদার শুটিংয়ের মধ্যে একটা আলাদা পার্থক্য রয়েছে বলেই মনে করেন টোটা। কারণ হিসেবে বললেন, ‘‘ফেলুদা আমার কাছে একটা আবেগ আর প্রচুর স্মৃতিমেদুরতা। চরিত্রটার সঙ্গে অনেক কিছুই জড়িয়ে রয়েছে। সেই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।’’
সম্প্রতি সৃজিত সদলবলে কাশ্মীরে গিয়ে সিরিজ়ের লোকেশন রেইকি সেরেছেন। এই প্রথম কাশ্মীরে শুটিং করবেন বলে, টোটা বেশ উত্তেজিত। তবে কাশ্মীরের সঙ্গে টোটারও কম বয়সের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বললেন, ‘‘কলেজ জীবনে এক বন্ধুর সঙ্গে কাশ্মীরে গিয়েছিলাম। তখনও ওখানে অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু আমরা খুব সুন্দর ঘুরেছিলাম। প্রায় তিন দশক পর আমার দেখা কাশ্মীর নিশ্চয়ই আমূল বদলে গিয়েছে।’’ আশির দশকের শেষ দিকে প্রকাশিত হয়েছিল ‘ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর’। আজকের বদলে যাওয়া কাশ্মীরে সেই প্রেক্ষাপট ফিরিয়ে আনা সৃজিত তথা ইউনিটের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।
প্রযোজনা সংস্থার তরফে গত বছর এই সিরিজ়ের ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শুটিং শুরু হতে এতটা দেরি হল কেন? টোটা বললেন, ‘‘বেশ কিছু সমস্যা ছিল। শুধু বাজেট নয়, কাশ্মীরে পুরো ইউনিটকে নিয়ে শুটিং করতে গেলে দায়িত্বও থাকে। কিন্তু আমরা ঠিক করেছিলাম, যা-ই হোক না কেন, কাশ্মীরেই শুটিং করব। অবশেষ কাজটা শেষ হচ্ছে। আমি খুব খুশি।’’ ফেলুদা চরিত্র মানে, তার জন্য আলাদা প্রস্তুতি প্রয়োজন। টোটা জানালেন, প্রত্যেক বারেই আলাদা ভাবে তাঁকে সেটা করতে হয়। কারণ, দর্শক যাতে প্রতি বারই তাঁর মধ্যে ‘ফেলুদা’কেই খুঁজে পান, সে কথা মাথায় রাখতে হয়। সেই রহস্য কি খোলসা করা যায়? ফেলুদার সুরেই টোটার হেঁয়ালি, ‘‘সেটা আমার টপ সিক্রেট। কারও সঙ্গে ভাগ করতে চাই না।’’