Konnagar Murder Case

লকআপে বান্ধবীকে চড় সন্তান খুনে ধৃত শান্তার! কোন্নগরকাণ্ডে দুই মহিলার ১৪ দিনের জেল হেফাজত

জমি বিক্রি করে বান্ধবীকে নিয়ে আলাদা ফ্ল্যাট কিনে থাকার পরিকল্পনা ছিল শান্তা শর্মার। কোন্নগরে শিশুহত্যা কাণ্ডে আরও কী কী তথ্য পেল পুলিশ?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪ ১৮:৩০
Konnagar Murder

আট বছরের শিশু খুনে দুই অভিযুক্ত ইফ্‌ফাত পরভিন এবং শান্তা শর্মা। —ফাইল চিত্র।

কোন্নগরে শিশু খুনে অভিযুক্ত মা এবং তাঁর বান্ধবীকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল শ্রীরামপুর আদালত। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারের পর দু’জনকে ন’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শুক্রবার শান্তা শর্মা এবং তাঁর বান্ধবী ইফ্‌ফাত পরভিনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Advertisement

যদিও আদালতে মৃত শিশুর মা শান্তা দাবি করেছেন যে, আট বছরের শ্রেয়াংশু শর্মার খুনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর বান্ধবী কি এই খুনে জড়িত? ওই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি শান্তা। অন্য দিকে, পুলিশের একটি সূত্রে খবর, থানার লকআপে পরভিনের সঙ্গে কোনও বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয় শান্তার। এমনকি, তাঁকে চড়ও মারেন তিনি। জানা গিয়েছে, কোন্নগরের কানাইপুরে একটি দু’কাঠা জমি কিনেছিলেন শান্তা। সেই জমি বিক্রি করে ফ্ল্যাট কিনে বান্ধবীর সঙ্গে থাকার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তদন্তে আগেই উঠে এসেছে, শান্তা এবং তাঁর স্বামী পঙ্কজ শর্মার সম্পর্কের শীতলতার কথা। আবার বান্ধবীর সঙ্গে শান্তার সমকামী সম্পর্কের ইঙ্গিত মিলেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বান্ধবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় বাধা হচ্ছিল শিশুসন্তান। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোককে ‘শিক্ষা দিতে’ সন্তানকে খুনের পরিকল্পনা করেন মা। আর বান্ধবী পরভিন সেই পরিকল্পনাকে ‘বাস্তব রূপ’ দেন। তবে শিশু খুনে যে নৃশংসতা দেখা গিয়েছে, তাতেই হয়তো প্রিয় বান্ধবীর প্রতি বিরক্ত শান্তা। লকআপে তার আচরণে তেমনই মনে হয়েছে তদন্তকারীদের।

১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়িতে টিভি দেখছিল শ্রেয়াংশু। তার মাথায় থান ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। তার পর মারা হয় ভারী মূর্তি দিয়েও। ছুরি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয় তার দেহ। ঘটনার চার দিন পর গ্রেফতায় হন শিশুর মা ও মায়ের বান্ধবী। শুক্রবার অভিযুক্তদের আইনজীবী সৈকত মণ্ডল বলেন, ‘‘যে হেতু ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের হয়েছে, তাই শ্রীরামপুর আদালত জামিন দেয়নি।’’ তবে ওই আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। ফোন আর সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে যে, অভিযুক্তরাই দোষী।

অন্য দিকে, সরকার পক্ষের বিশেষ আইনজীবী অরুণ আগরওয়াল বলেন, ‘‘তদন্তকারী অফিসার সঠিক ভাবে তদন্ত করছেন। মামলার জন্য প্রচুর খেটে তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছেন। দু’বছর আগের কল রেকর্ড, একটা রক্তমাখা রুমাল পেয়েছেন। আরও অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তদন্ত সঠিক দিকেই যাচ্ছে।’’ সঠিক দিশায় যাচ্ছে এই তদন্ত। অন্য এক সরকারি আইনজীবী সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে রাখাকালীন একটি রক্তমাখা রুমাল পাওয়া গিয়েছে বাড়ি থেকে। সে তথ্য মিলেছিল ইফ্‌ফাতের দেখানো জায়গা থেকেই। এ ছাড়া বেশ কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, সিআইডি ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ সংগ্রহ করেছিল। আদালতে অভিযুক্তদের আঙুলের ছাপ নিয়ে তা মিলিয়ে দেখা হবে। সিসিটিভি ফুটেজে পরভিনকে হেঁটেও যেতে দেখা গিয়েছে। সেটাও দেখা হবে। ওই দিনই কোন্নগরে এসেছিলেন ইফ্‌ফাত। সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন
Advertisement