(বাঁ দিকে) শাহরুখ খান। সলমন খান (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
শাহরুখ খানের পর এ বার সলমন খানের পালা। ‘জওয়ান’-এর পর ‘টাইগার ৩’ মুক্তির অপেক্ষায়। মাঝে কেটেছে ৬৫ দিন। সলমনের ছবির নজরকাড়া অগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু শাহরুখের ছবি বাংলায় মুক্তি পেলে তা নিয়ে দর্শকদের যে উন্মাদনা তা কি ভাইজানের ছবির ক্ষেত্রেও হয়?
জাতীয় স্তরে ‘টাইগার ৩’-এর অগ্রিম বুকিংয়ের কী পরিস্থিতি দেখা যাক। একটি পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম দিনে সলমনের ছবিটির ৮ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। সেখানে ‘পাঠান’-এ প্রথম দিনের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩২ কোটি টাকা। ‘জওয়ান’-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৪১ কোটি টাকা। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, বাদশার তুলনায় ভাইজানের ছবি অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।
এ রাজ্যেও রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ‘টাইগার ৩’-এর অগ্রিম বুকিং। কিন্তু তা ‘জওয়ান’-এর মতো নয় বলেই মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির একাংশ। রবিবার, কালীপুজোর দিন মুক্তি পাচ্ছে ‘টাইগার ৩’। প্রিয়া সিনেমায় এই প্রথম কোনও হিন্দি ছবির জন্য সকাল ৭.৩০টার শো দেওয়া হয়েছে। প্রিয়ার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত বললেন, ‘‘সব সময়েই নতুন নতুন পরীক্ষা করা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছি।’’ কিন্তু শাহরুখের ছবিকে ঘিরে উন্মাদনা থাকলেও সলমনের ক্ষেত্রে কি তা এ রাজ্যে কম? অরিজিৎ বললেন, ‘‘শাহরুখ এবং বাংলার সম্পর্কটাই অন্য রকম। তাই এই ভাবে বিচার করা কঠিন। তা ছাড়া ছবিটা শুক্রবারের পরিবর্তে রবিবারে মুক্তি পাচ্ছে। এখনও সময় আছে।’’
শহরের সিনেমা হল মালিকদের অনেকেরই অনুমান, পুজোর চারটি বাংলা ছবি প্রেক্ষাগৃহে চতুর্থ সপ্তাহ সম্পূর্ণ করবে না। নেপথ্যে রয়েছে ‘টাইগার ৩’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হলের কর্তা বললেন, ‘‘পুজোর ছবির যে দৌড় শেষ হবে তা তো শুরুতেই বোঝা গিয়েছিল। এখন টাইগার রাজত্ব করবে। তা-ও কিছু ছবি টেনেটুনে চতুর্থ সপ্তাহেও চলতে পারে।’’ এ দিকে সকলেই যে সলমনের ছবিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন তা নয়। ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন দক্ষিণ কলকাতার নবীনা সিনেমা এই ছবি দেখাবে না। অন্য দিকে, বুধবার পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, উত্তর কলকাতার স্টারেও চলবে না এই ছবি।
‘পাঠান’ যে হেতু হিট হয়েছিল তাই ‘জওয়ান’-এর ক্ষেত্রে দর্শকদের প্রত্যাশা বেড়েছে। বক্স অফিসেও তার প্রতিচ্ছবি দেখা গিয়েছিল। টলিপাড়ার এক সদস্য বললেন, ‘‘আসলে সলমনের শেষ ছবিগুলো তো সে ভাবে চলেনি। তাই দর্শকের খুব বেশি প্রত্যাশা নেই। শাহরুখ সেখানে নিজেকে দু’বার প্রমাণ করলেন। ‘ডাঙ্কি’-তে কী হয় দেখা যাক।’’ অবশ্য এর বিপরীত মতও পাওয়া যাচ্ছে। ইম্পার তরফে শ্যামল দত্ত যেমন জানালেন, এখন দুই তারকার ছবি আসার মধ্যে অনেক বদল ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘সলমন যখন অতীতে ইদে ছবি এনেছেন তখন চূড়ান্ত উন্মাদনা দেখেছি। শাহরুখ কিন্তু তখন দীপাবলিতে ছবি নিয়ে আসতেন। এখন সেটা উল্টে গিয়েছে। ভবিষ্যতে আবার হয়তো নতুন কোনও ধারা আসবে।’’ এ রাজ্যে ‘টাইগার ৩’-এর পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছে জালান ডিস্ট্রিবিউটর। তারা অবশ্য সলমনের ছবির অগ্রিম বুকিং নিয়ে আশাবাদী।
বুধবার পর্যন্ত শহরে খোঁজ নিয়ে এটুকু স্পষ্ট যে, শাহরুখের সাম্প্রতিক ছবির বিচারে সলমনের ‘টাইগার ৩’ নিয়ে দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা একটু হলেও কম। অবশ্য অনুরাগীরা তা মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, খেলা সবে শুরু হয়েছে। সময়ই সব কিছু স্পষ্ট করে দেবে।