অলিভিয়া সরকার।
গিরগিটির রং বদলানো দারুণ লাগে অলিভিয়া সরকারের! আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, রামধনুর মতো বর্ণময় হয়ে ওঠা দুর্দান্ত চ্যালেঞ্জ। তিনিও চান প্রতি মুহূর্তে রং বদলাতে! কখনও তিনি দেবালয় ভট্টাচার্যের ‘মন্টু পাইলট ২’-এর ‘সরমা’। ‘আবার অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিতে ‘গার্ল গ্যাং’ নিয়ে পা রাখবেন অরণ্যে। এ সবের মধ্যেই তিনি অঞ্জন দত্তের আগামী সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে ফেললেন! আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করতেই দাবি, ‘‘প্রযোজনা সংস্থার পরে অঞ্জনদা নিজে ফোন করেছিলেন। গলা শুনেই থমকে গিয়েছিলাম!’’
‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’-এর পরে অঞ্জনের আগামী সিরিজ ‘মার্ডার বাই দ্য ওয়ে’। সেখানেই ৯০ দশকের ডাকসাইটে নায়িকার ভূমিকায় অলিভিয়া। যাঁর ঝাঁ-চকচকে জীবনে প্রত্যাখ্যান আছে, যন্ত্রণা আছে, আছে অনেক রহস্যও। পুরোটাই দেখানো হবে ফ্ল্যাশব্যাকে। চরিত্র সম্পর্কে এর বেশি কিছু বলতে পারেননি অভিনেত্রী। অন্যদের তুলনায় সংক্ষিপ্ত হলেও সিরিজে ভীষণ গুরুত্ব চরিত্রটির। তাই দ্বিতীয় বার আর ভাবেননি। সিরিজে থাকছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, পায়েল সরকার, তৃণা সাহাও। তাঁদের সঙ্গে শ্যুট করে কেমন লাগল? অলিভিয়ার আফসোস, ‘‘আমায় যেহেতু ফ্ল্যাশব্যাকে দেখানো হবে তাই আমার অংশের শ্যুট হয়েছে কলকাতায়। এবং সেখানে আমার একক অভিনয়। ফলে, ওঁদের সঙ্গে কাজ করে উঠতে পারিনি। এটাই বড় দুঃখ।’’
অর্থাৎ, সুযোগ পেয়ে আবারও ঝোড়ো ব্যাটিং? হা-হা হেসে অলিভিয়ার দাবি, একটা দৃশ্য করার পরে গোটা ইউনিট হাততালি দিয়ে উঠেছিল। পরিচালকের মুখেও স্মিত হাসি। অভিনেত্রীর মতে, তিনি বরাবর পরিচালকের হাতের পুতুল। তাঁরা যা বলেন, সেটাই হুবহু মেনে চলার চেষ্টা করেন। তবে সেটেই সবাই এত প্রশংসা করবেন, ভাবেননি।
আগামী দিনে অঞ্জন দত্তের ‘গুড বুক’-এ অলিভিয়ার নাম পার্নো মিত্রের আগে না পরে? ফোনের ওপার থেকে জবাব, ‘‘আমি একেবারেই প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নই। এক দিনের জন্যও ইঁদুরদৌড়ে নামিনি। প্রত্যেকের আলাদা করে জায়গা রয়েছে। সবাই আমার থেকে অনেক অভিজ্ঞ। আমি কাজ করতে ভালবাসি। তাই মন দিয়ে শুধু কাজটাই করে যেতে চাই। দর্শক, পরিচালক এবং কিংবদন্তিদের ভাল লাগাটাই আমার পাওনা।’’
পর্দায় প্রায় প্রতি চরিত্রেই অলিভিয়া রহস্যময়ী। বাস্তবেও কি তাই? প্রশ্ন ছিল আনন্দবাজার অনলাইনের। এ বার সপাট জবাব, ‘‘এটা বহু পুরুষের মুখ থেকেও শুনেছি। তাঁরা বলেছেন অলিভিয়া, তোমার মধ্যে একটা রহস্য আছে! তাঁদের এই মন্তব্য আমি প্রশংসা হিসেবেই নিয়েছি। আসলে, আমার মন একটি জিনিসে স্থির থাকে না। তাই হয়তো আমার মধ্যে এত রহস্য।’’ তাই কি অলিভিয়ার নামের পাশে নির্দিষ্ট কোনও পুরুষের নাম নেই? রাখঢাক না রেখেই অভিনেত্রীর দাবি, এটা বড় রহস্য। ফাঁস করলে তাঁর সমস্ত আকর্ষণ হারিয়ে যাবে। অতএব মুখে কুলুপ। পাল্টা রসিকতাও করলেন, ‘‘পদবি সরকার। অলিভিয়ার মধ্যে ‘ম্যাজিক’ থাকবে না?’’
নায়িকার আরও দাবি, সব নায়কের সঙ্গেই তাঁর রসায়ন অটুট। সবার সঙ্গে স্বচ্ছন্দ তিনি! কারণটা কী? এর কারণ নাকি তিনি নিজেই। দাবি, ‘‘আমি সবাইকে সমান ভালবাসি! বাছবিচার না করেই। সবার কথা শুনি। সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে দাঁড়ানোরও চেষ্টা করি। তাই বন্ধুরা আমায় ‘মাদার টেরেসা’ বলে।’’ পর ক্ষণেই হাসতে হাসতে অলিভিয়া জানিয়েছেন, তিনি নিজের চোখে দ্রৌপদী! নেপথ্য যুক্তিও সামনে এনেছেন। বলেছেন, ‘‘যে হারে প্রত্যাখ্যাত হয়েছি! অনেক বার মন ভেঙেছে। অনেক ব্যথা আমারও। তার পরে জীবনই শিখিয়েছে নিজেই নিজেকে দ্রৌপদী বানিয়ে নাও। নারীশক্তির ভাবনা তো তিনিই প্রথম জাগিয়েছেন।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।