দেবলীনা কুমার, গৌরব চট্টোপাধ্যায় একই আছেন। ছবি: ফেসবুক।
সদ্য বিবাহবার্ষিকী গেল। দু’জনের আঙুলেই হিরে বসানো বিয়ের আংটির ঝিলিক। বিয়ের জন্মদিন মনে করে উভয়েই সমাজমাধ্যমের নিয়ম মেনে পোস্টও করেছেন। গুঞ্জন, তবু কোথায় যেন ছন্দপতন। গৌরব চট্টোপাধ্যায়-দেবলীনা কুমারের মধ্যে নাকি সেই টানটান রসায়নটাই নেই! সবেতেই আছেন তাঁরা। কেমন যেন ছাড়াছাড়া। পর পর দুটো ঘটনা গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। এক, ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’র নায়িকা ঋতব্রতা বসু নাকি আমূল বদলে দিয়েছেন তাঁর নায়ককে! দুই, দেবলীনা সম্প্রতি গৌরবকে ছাড়াই বিদেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
বিনোদন দুনিয়ায় প্রেম বা দাম্পত্যে চিড় কিংবা বিচ্ছেদ নতুন নয়। আরবসাগর তো বটেই গঙ্গাপারও ইদানীং এই ধরনের খবরে অভ্যস্ত। কিন্তু চার বছরের দাম্পত্যে গৌরব-দেবলীনাকে নিয়ে কখনও এই ধরনের কোনও গুঞ্জন ছড়ায়নি। ফলে চর্চা ছড়াতেই দুই তরফের অনুরাগীদের মনে আষাঢ়ে মেঘ। আনন্দবাজার অনলাইন সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিল অভিনেতার সঙ্গে। পরনে গাঢ় নীল রঙের স্যুট-প্যান্ট-টাই। এই সাজে গৌরব স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’য় কলেজের অতিথি অধ্যাপক, উদ্যোগপতি।
আপনাদের মধ্যে নাকি দূরত্ব বেড়েছে? প্রশ্ন রাখতেই গৌরব বললেন, “ছোট পর্দায় অভিনয়ের দৌলতে এমনিতেই দিনে ১৫ ঘণ্টা স্টুডিয়োয় থাকতে হয়। ফলে, এক সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোর সুযোগ এমনিতেই পাই না। দেবলীনা সে সব মেনে নিয়েছে। নতুন করে দূরত্ব তৈরি হওয়ার আর সুযোগ কই?” কিন্তু টেলিপাড়া তো এত সহজে সন্তুষ্ট নয়! কান পাতলেই সেখানে শোনা যাচ্ছে, ধারাবাহিকের নায়িকা ‘ঝিল্লি’ ওরফে ঋতাব্রতা নাকি আমূল বদলে দিয়েছেন নায়ককে! যিনি আগে সেটে সাত চড়ে রা কাড়তেন না সেই তিনিই নাকি অবসরে আড্ডা দেন, হৈ হৈ করেন।
এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল গৌরব আর ঋতব্রতা, উভয়ের কাছেই। উভয়েরই দাবি, দিনের অধিকাংশ সময় একসঙ্গে এক জায়গায় থাকলে কথা হবে, আড্ডাও হবে। এটুকু না থাকলে পর্দায় রসায়ন ফোটানো সম্ভব নয়। অভিনয় করাও যায় না। এর বেশি তাঁদের মধ্যে আর কিছুই নেই। গৌরব আরও জানিয়েছেন, তিনি যে কোনও মানুষের সঙ্গে চট করে মিশে যেতে পারেন না। সময় লাগে। এই ক্ষেত্রে সেটা সহজ হয়েছে নায়িকার দৌলতে। তাঁর থেকে বয়সে অনেক ছোট ঋতব্রতা, শুটিংয়ের ফাঁকে সকলের সঙ্গে প্রাণ খুলে মেশেন বলে।
কিন্তু গৌরবকে ছাড়াই দেবলীনার একা বেড়াতে যাওয়া, রিল ভিডিয়োয় না-থাকা— এ সবের কী ব্যাখ্যা দেবেন উত্তমকুমারের নাতি? উত্তর দেওয়ার সময় যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী গৌরব। সহজ কথায় বললেন, “প্রত্যেক বছর ওই সময় মা-বাবার সঙ্গে বিদেশ যায় দেবলীনা। আগের বার গিয়েছিল ইজিপ্ট। তার আগের বছর দুবাই। এ বছর নতুন কিছু নয়।” এ-ও জানান, তিনি নিয়মিত রিল বানানোর দলে নেই। মাঝেমধ্যে স্ত্রীর আবদারে যোগ দেন, ওই পর্যন্তই। সেই জোরটাও কেবল দেবলীনাকেই খাটাতে দেন। ইদানীং ধারাবাহিকের শুটিংয়ের কারণে তাতেও ভাটা। ফলে, নিন্দকেরা দুইয়ে দুইয়ে চার করে দিয়েছেন।
মৃদু হেসে যোগ করলেন, “বিনোদন দুনিয়ার মানুষদের বাকিরা সমাজমাধ্যমের পোস্ট দিয়ে বিচার করেন। আমাদের সম্পর্ক নিয়ে সেটা করতে গেলে ঠকতে হবে।”
যে হেতু গৌরব-দেবলীনাকে নিয়ে চর্চা, তাই কথা হয়েছে তাঁর সঙ্গেও। বক্তব্য জেনে হেসে ফেলেছেন তিনি। কর্তার সুর গিন্নির কথাতেও। তাঁর যুক্তি, “আমি তো ছোট থেকেই একা একা বিদেশে ঘুরতে যাই। বিয়ের বছরেও গিয়েছি। তখন কোনও কথা হয়নি। এখন কেন হচ্ছে, সেটা আমিও বুঝতে পারছি না।” আরও যোগ তাঁর, অনুরাগীরা তাঁদের নিয়ে এত ভাবছেন দেখে ভাল লাগছে দু’জনেরই।