মহড়া চলছে ‘চুপচাপ চার্লির’। এই নাটকে অভিনয় ও গানে থাকছে ১৮ জন অটিস্টিক ছেলেমেয়ে। রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-বিরহের আধারই নাটকের চিত্রনাট্য। এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন অভিনেতা নাইজেল আকারা। কোন ভাবনা থেকে এই প্রচেষ্টা, জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে নাইজেলের সঙ্গে। নাইজেল বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে একটা অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলাম, সেখানে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন বাচ্চারা অভিনয়, নাচ, গান করেছিল। সে দিনই ভাবনাটা মাথায় আসে। আমাদের থিয়েটারের একটা গ্রুপ আছে , সেখানে সমাজে যাঁরা ব্রাত্য, তাঁদের নিয়ে কাজ করা হয়। এই দল বেশ কয়েকটা নাটক মঞ্চস্থও করেছে। আমি ঠিক করি পরের নাটক এই ছেলে-মেয়েদের নিয়েই করব।’’
রোম্যন্টিক ট্র্যাজেডির আধারে লেখা এই নাটকের গল্প। নাটকে চার্লি একজন বহুরূপী। চার মাস ধরে রিহার্সাল চলছে নাটকের, তারই মধ্যেই লেখা হচ্ছে চিত্রনাট্য। ১৮ জন অটিস্টিক বাচ্চা মঞ্চে অভিনয় করবে। এদের সঙ্গে অভিনয় করবেন দেবলীনা কুমার ও নাইজেল। নাটকে নাইজেলকে দেখা যাবে তান্ত্রিকের ভূমিকায়। নাটকে গানের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বাচ্চারা ভাল করে কথা বলতে পারে না, সেই অভাব পূরণ করা হবে গান দিয়ে। লোকসঙ্গীত ছাড়াও আইটেম গানও রয়েছে নাটকে। গাইছেন ইমন চক্রবর্তী, তিমির বিশ্বাস, শোভন গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাজ্ঞ দত্ত ও সায়নী পালিত। পাঁচ জন বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন বাচ্চাও ওদের সঙ্গে গান গাইছে। আশ্চর্যের বিষয়, এরা কথা বলার সময় আটকে যায়, কিন্তু গান গাওয়ার সময় বেশ স্বচ্ছন্দ। নাটকের সঙ্গীত পরিচালনায় রয়েছেন প্রাজ্ঞ। সুবোধ সরকার এই নাটকের জন্য কবিতা লিখেছেন। ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় আবৃত্তি করেছেন সেই কবিতা।
নাইজেলের মতে, এই নাটকে বড় চমক অন্য জায়গায়। ২০০৯-এ জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নাইজেল অভিনয় করেছিলেন ‘বাল্মিকী প্রতিভায়’। নাইজেলের চরিত্রে নেপথ্যে গান গেয়েছিলেন জেলের আই জি বিডি শর্মা। ১৩ বছর এই নাটকে নাইজেলের চরিত্রে তিনি আবার কণ্ঠ দিচ্ছেন। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাজ করতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার দায়িত্বে আছেন চিকিৎসক মনীষা ভট্টাচার্য। বেশ কয়েকটা মহড়ার পর ডিসেম্বরে মঞ্চস্থ হবে ‘চুপচাপ চার্লি’।