নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মমতা। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দফা নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে রাজ্য প্রশাসনের ৫ অফিসারকে বদলির পরে বৃহস্পতিবার দাঁতনের সভা থেকে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের এই সভা থেকে নির্বাচন কমিশন বিজেপি-র কমিশনে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে কমিশনকে বিজেপি-র ‘খুড়তুতো ভাই’ বলেও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দাঁতনে মমতা বলেন, ‘‘আমরা একদিকে কষ্ট করে মিটিং করছি, মানুষ কষ্ট করে আসছেন, আর অন্য দিকে বিজেপি দলটা নির্বাচন কমিশনকে এমন ভাবে প্রভাবিত করছে, যেন মনে হচ্ছে ওটা বিজেপি-র কমিশনে পরিণত হয়েছে। কমিশন এখন বিজেপি-র খুড়তুতো ভাই। আমি হেলিকপ্টারে আসতে আসতে শুনলাম, বিজেপি-র কথা মতো আরও কয়েকটা ডিএম, এসপি বদলে দিয়েছে। আমি বলি সবটা বদলে দাও। তাতেও কোন লাভ নেই। বিজেপি-কে জেতাতে পারবে না। কারণ যাদের বদলাচ্ছ, তারাও আমাদের লোক। যাদের নিয়ে আসছ তারা আরও বেশি করে আমাদের লোক।’’
ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় তাঁকে কমিশন শো-কজ করতে পারে জেনেও তিনি চুপ করে থাকবেন না বলেই জনিয়েছেন মমতা। বলেন, ‘‘বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতি আপনারা বিমাতৃসুলভ মনোভাব দেখাচ্ছেন। এটা আপনাদের কাছ থেকে আশা করি না। বিজেপি যেমন একটা পলিটিক্যাল পার্টি, আমরাও একটা পলিটিক্যাল পার্টি। আপনারা যদি মনে করেন সব রিজিওনাল পার্টিগুলোকে খতম করবেন, তা হলে বলে রাখি ভুল করছেন। বাংলায় এর রেজাল্ট পাল্টা হবে। এর জন্য আপনি আমাকে শো-কজ করতে পারেন। দশটা চিঠি দিতে পারেন। আমার কোনও যায় আসে না।’’
এর পর মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপি-কে আক্রমণ করতে দেখা যায় মমতাকে। নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে ফের বহিরাগত তকমা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘ওদের প্ল্যান জোর করে ভোট দখল করার। ওড়িশা থেকেও লোক নিয়ে আসবে দেখবেন। বাইরের লোককে ঢুকতে দেবেন না।’’
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সচিব রাকেশ কুমারের তরফে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার ডিসিপি সুধীর নীলকণ্ঠ, ডায়মণ্ড হারবারের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল) সঞ্জয় সিংহ, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েশা রানি ও কোচবিহারের পুলিশ সুপার কে কান্নানকে বদলি করা হয়েছে।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগেও কমিশনের কার্যকলাপকে পক্ষপাত দুষ্ট বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। ২০২১ বিধানসভার আগে সেই অভিযোগ আরও বেড়েছে। রাজ্যের উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনকে সরানোর জন্য কমিশনকে চিঠিও দিয়েছিল শাসক দল। সেই অভিযোগই আরও একবার শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়।