Electoral Bonds

‘নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য দিতে আরও সময় লাগবে’, সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি চাইল এসবিআই

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট মোদী সরকারের আমলে চালু হওয়া নির্বাচনী বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে খারিজ করেছে। ওই বন্ডের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪ ২১:১১
SBI moves Supreme Court, seeking more time to prepare data on Electoral Bonds

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া ৬ মার্চের সময়সীমা মেনে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিতে পারবে না স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)। সোমবার এসবিআই কর্তৃপক্ষের তরফে এ বিষয়ে অপারগতার কথা শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই। কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার।

তবে একই সঙ্গে ওই বন্ডে দাতাদের পরিচয় এবং দানের অর্থের পরিমাণ গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল তারা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘ক্ষতিকারক’ বলে আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে তারা। শীর্ষ আদালত বলেছিল, বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে এসবিআইকে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল ২০১৯-এর ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত এই সংক্রান্ত তথ্য আগামী ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেবে এসবিআই। নির্বাচন কমিশন সেই তথ্য প্রকাশ করবে। কিন্তু এসবিআই সোমবার শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দানকারীদের তথ্য সুরক্ষিত করার জন্য গৃহীত কঠোর সাধারণ কার্যপদ্ধতির (এসওপি) কারণে ডেটা ডিকোড করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই এর জন্য আরও সময় প্রয়োজন।

বিরোধী শিবিরের আশা ছিল, গত ছ’বছরে বিজেপি কোন কর্পোরেট সংস্থার থেকে কত টাকা পেয়েছে, এতে তা প্রকাশ্যে আসবে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে ছ’বছরে রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছিল। এর মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছিল ৬৫৬৪ কোটি টাকা। কংগ্রেস পেয়েছিল ১১৩৫ কোটি টাকা। তৃণমূল কংগ্রেস ১০৯৬ কোটি টাকা পেয়েছিল।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থার মূল মন্ত্রই ছিল, কোন শিল্পপতি কোন দলকে চাঁদা দিচ্ছেন, তা গোপন থাকবে। তাই কে কত টাকার বন্ড কোন দলকে দিয়েছেন, এই তথ্য কারও কাছে থাকার কথা নয়। একটি কর্পোরেট সংস্থা স্টেট ব্যাঙ্কের থেকে বন্ড কিনে নিত। সে সময়ে তার তথ্য ব্যাঙ্কের কাছে থাকত। কিন্তু সেই বন্ড কোথায় জমা হচ্ছে, সেই তথ্য ব্যাঙ্ক বা রাজনৈতিক দল কারও কাছেই থাকত না। ফলে ব্যাঙ্ক চাইলে শুধুমাত্র প্রকাশ করতে পারে, কোন সংস্থা কত টাকার বন্ড কিনেছিল। তার পরে সেই বন্ড কে পেয়েছে, তা ব্যাঙ্কের জানার কথা নয়।

আরও পড়ুন
Advertisement