বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। — নিজস্ব চিত্র।
রায়গঞ্জের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। বুধবার বিধানসভায় গিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। কৃষ্ণের পদত্যাগের ফলে রায়গঞ্জের বিধানসভা বিধায়কহীন হয়ে পড়ল। সেখানে আবার উপ-নির্বাচন হবে। এ ছাড়া কৃষ্ণ বুধবার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে ওই পদটিও ফাঁকা হয়ে গিয়েছে।
২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন কৃষ্ণ। তার পর কয়েক মাসের মধ্যে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল তাঁকে সেই রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী করেছে। গত ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশ থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন। তার পরেই কৃষ্ণ জানিয়ে দিয়েছিলেন, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে তিনি বিধায়ক এবং পিএসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। সেই মতো বুধবার স্পিকারের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন।
ইস্তফা দিয়ে বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণ বলেন, ‘‘রায়গঞ্জের মানুষের সাড়া পাচ্ছি। আশা করি, অনেক ভোটে জিতব। আমি আগামী ২ তারিখ তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেব। তার আগে সব পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। আমি সাধারণ মানুষের কাছে এক জন সাধারণ মানুষ হিসাবেই ভোট চাইতে চাই।’’
বিজেপিতে থাকাকালীন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী এবং তাঁর অনুগামীদের চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন বলে বুধবার অভিযোগ করেছেন কৃষ্ণ। ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি দেবশ্রীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির একটা অংশ সে সময়ে আমাকে হারানোর চেষ্টা করেছিল। দেবশ্রীও তাঁদের মধ্যে ছিলেন। সেটা পরে প্রমাণিতও হয়েছে। ওঁরা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করেছিলেন। তাই উনি এ বার ওখানে ভোটেও দাঁড়াননি।’’
উল্লেখ্য, রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রীকে এ বার লোকসভায় ওই কেন্দ্র থেকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। বিজেপি সূত্রে খবর, দেবশ্রী নিজেও এ বার রায়গঞ্জের টিকিট চাননি। তার পরিবর্তে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে ‘তৃণমূলের গড়’ হিসাবে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতায়। কেন্দ্রটি দেবশ্রীর জন্য অপেক্ষাকৃত ‘কঠিন’ বলে মনে করছেন অনেকে। ২০১৯ সালের রায়গঞ্জ আসন থেকে জিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন দেবশ্রী। পরে ২০২১ সালে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ বার সেই দেবশ্রী দক্ষিণ কলকাতা থেকে লড়বেন।