প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ‘কাঙ্ক্ষিত ফল’ না করলে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। এমনই মতপ্রকাশ করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, যিনি পিকে নামেই সমধিক পরিচিত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সম্পাদকদের সঙ্গে একটি আলাপচারিতায় পিকে রাহুল সম্পর্কে বলেন, “যখন গত দশ বছর ধরে আপনি একটি কাজ করে যাবেন, কিন্তু কোনও সাফল্য পাবেন না, তখন বিরতি নিলে আপনার কোনও ক্ষতি হবে না। বরং আপনার উচিত অন্য কাউকে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া।” এই প্রসঙ্গে সনিয়া গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে পিকে বলেন, “রাহুলের মা এটাই করেছিলেন।” পিকে স্মরণ করিয়ে দেন, রাজীব গান্ধী নিহত হওয়ার পর সনিয়া সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসে ১৯৯১ সালে পিভি নরসিংহ রাওকে নেতৃত্বে এগিয়ে দিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রাহুল। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পিকে বলেন, “সেই সময় ওয়েনাড়ের সাংসদ (রাহুল) লিখেছিলেন যে, তিনি সরে যাচ্ছেন এবং অন্য কেউ তাঁর পরিবর্তে কাজ করবে। কিন্তু বাস্তবে তিনি যা লিখেছিলেন, তাঁর উল্টোটা করেছিলেন।” তার পরেই পিকে ইঙ্গিত করেন যে, কংগ্রেস নেতারা নিজেরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন রাহুলই।
রাহুলের বিরুদ্ধে খানিক অনুযোগের সুরেই এই ভোটকুশলী বলেন, “তিনি মনে করেন, সব জানেন। আপনি যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন, এটা মানতে না চান, তবে কেউ আপনাকে সাহায্য করবে না।”
কংগ্রেসের ধারাবাহিক অবক্ষয়ের নেপথ্যে ‘সাংগঠনিক বিচ্যুতি’র কথা বললেও পিকে মনে করেন না দলটি ক্রমশ অবলুপ্তির পথে হাঁটছে। এমনকি দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় আম আদমি পার্টি (আপ) কংগ্রেসের জায়গা নিতে পারে কি না, এই প্রশ্নের উত্তর কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দেন পিকে। জানান যে, আপের কোনও আদর্শগত ভিত্তি নেই। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে কংগ্রেস বহু বার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছে এ কথা জানিয়ে পিকে ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, সে বার ভোট-পণ্ডিতদের অধিকাংশকে ভুল প্রমাণিত করে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’ প্রচারকে ম্লান করে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ।