হুগলি লোকসভায় বিজেপির প্রার্থী নিয়ে ধন্দ। — গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেই লোকসভা এলাকায় বিজেপির দেওয়াল লিখনে অন্য তিন জনের নাম, বাদ লকেট! বিজেপির অভিযোগ, হারের ব্যবধান এক লক্ষ পেরিয়ে যাবে এই আতঙ্কে তৃণমূলই বিভিন্ন লোকের নামে দেওয়াল লিখে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। পাল্টা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে ইঙ্গিত করে ঘটনাপ্রবাহ দেখে মুচকি হাসছে তৃণমূল।
লোকসভা ভোটে প্রার্থিতালিকা এখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি। যদিও, তার আগেই, গত ৮ ফেব্রুয়ারি হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় নিজেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে, তিনিই হুগলি থেকে দ্বিতীয় বার প্রার্থী হচ্ছেন। এর পরেই জেলার বিজেপি কর্মীদের একটি অংশের মধ্যে চাপা অসন্তোষ দেখা দেয়। গত পাঁচ বছরে নিজের এলাকায় লকেটের কাজ নিয়েও খুশি নন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। তাঁরা সমাজমাধ্যমে নিজেদের মতামত প্রকাশও করতে থাকেন। আর বুধবার দেখা গেল, হুগলি লোকসভার প্রার্থী হিসাবে তিন জনের নামে দেওয়াল রাঙানো চলছে। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, এই তিন জনের মধ্যে নেই বর্তমান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নাম।
হুগলি সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি সুবীর নাগ। জেলার রাজনৈতিক সমীকরণে সাংসদ লকেটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ‘মধুর’। যদিও ইদানীং লকেটের কর্মসূচিতে সাংসদের পাশেই দেখা যাচ্ছে সুবীরকে। সেই সুবীরকে প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে দেওয়াল লেখা হয়েছে। আর এক প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে শ্রীরামপুর জেলার পর্যবেক্ষক গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নামেও দেওয়াল লেখা হয়েছে। এ ছাড়া চুঁচুড়ার শিশু চিকিৎসক ইন্দ্রনীল চৌধুরীর নামেও দেওয়াল লেখা হয়েছে। ২০১৯ সালে এই ইন্দ্রনীলের নাম শোনা গিয়েছিল হুগলির বিজেপি প্রার্থী হিসাবে। কিন্তু পরবর্তী কালে দেখা যায়, টিকিট পেয়েছেন লকেট। সব মিলিয়ে নতুন তিন জনের নামে দেওয়াল লিখন ঘিরে ডামাডোল তুঙ্গে হুগলি বিজেপিতে।
বিজেপির দাবি, তৃণমূলই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে বিভিন্ন লোকের নামে দেওয়াল লিখছে। কিন্তু এ ভাবে হুগলিতে বিজেপির ক্ষতি করা যাবে না বলেও দাবি জেলা বিজেপি নেতৃত্বের। যাঁর নামে দেওয়াল লেখা হয়েছে, সেই বিজেপি নেতা সুবীর বলেন, ‘‘আমার তো মনে হয়, শাসকদলের যাঁরা ভেবেছিলেন খুব সহজেই হুগলি লোকসভায় বাজিমাত করা যাবে, তাঁরা দেখছেন, বিজেপি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। দলের ভিতরে ফাটল ধরাতেই এ সব করা হচ্ছে। এ সব করে কোনও লাভ হবে না। এখানে আমাদের জয়ী প্রার্থী আছেন। আমরা ধরে নিচ্ছি, তিনিই আবার প্রার্থী হবেন। আমার বা অন্য যাঁদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আমার মনে হয় তাঁরা কেউই এই দেওয়াল লিখনের সঙ্গে যুক্ত নন।’’
চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘বিজেপির প্রচুর টাকা। প্রার্থী হতে পারলে তো কোটি কোটি টাকা। টাকার লোভে অনেকেই যে যার নামে দেওয়াল লেখাতে ছেলে ফিট করে দেওয়াল লেখানো শুরু করেছেন। তৃণমূলের খেয়েদেয়ে কাজ নেই এ সব করতে যাবে!’’