Lok Sabha Election 2024

প্রতিদ্বন্দ্বী আসছেন শুনে দাঁড়ালেন শতাব্দী, তৃণমূল নেতাকে প্রণাম করলেন জোট প্রার্থী

এক রাজনৈতিক দলের নেতা যখন অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন, সেই সময়ে এই ঘটনা একটি নজির স্থাপন করল বলাই যায়। শতাব্দী রায় এবং মিল্টন রশিদ, দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বলছেন, এই সৌজন্য ভোটের দিনও বজায় থাকবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বীরভূম শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:০৭
Satabdi Roy

মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তৃৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে সৌজন্যের দৃশ্য: (বাঁ দিক থেকে) শতাব্দী রায়, স্বপনকান্তি ঘোষ এবং মিল্টন রশিদ। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটের মুখে একে অপরকে তীব্র আক্রমণ করছেন বিভিন্ন দলের নেতা এবং প্রার্থীরা। কখনও কখনও সেই আক্রমণ হচ্ছে ব্যক্তিগত স্তরেও। তবু তার মধ্যেও ‘সৌজন্যের রাজনীতি’ও রয়েছে। তারই উদাহরণ দেখা দিল বীরভূমে। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে জোট প্রার্থী আসছেন শুনে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন বিদায়ী সাংসদ তথা বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। সেই জোট প্রার্থী তথা কংগ্রেস নেতা মিল্টন রশিদ আবার শতাব্দীর সঙ্গে দেখা করার পর তাঁর পাশে দাঁড়ানো তৃণমূল নেতা স্বপনকান্তি ঘোষের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন। পরস্পর পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন ভোটযুদ্ধে নামার আগে। সোমবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বীরভূমের জেলাশাসক দফতর।

Advertisement

সোমবার বীরভূম জেলাশাসক দফতরের মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অসিত মালও আসেন মনোনয়ন দিতে। অন্য দিকে, তার একটু পরেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের জোট প্রার্থী, প্রাক্তন বিধায়ক প্রার্থী মিল্টন এবং বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান। শতাব্দীর প্রস্তাবক হিসাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক স্বপনকান্তি ঘোষ। শতাব্দী এবং অসিত যখন মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে অফিস থেকে বার হচ্ছিলেন, তখনই মিল্টনের প্রবেশ। মুখোমুখি হতেই সৌজন্যের হাসি খেলে যায় সকলের মুখে। স্বপনকান্তিকে দেখে এগিয়ে গিয়ে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন মিল্টন।

ভোটের মুখে এক রাজনৈতিক দলের নেতা যখন অন্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন, সেই সময়ে এই ঘটনা একটি নজির স্থাপন করল বলা যায়। মিল্টন বলেন, ‘‘স্বপনকান্তি ঘোষ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক। আমার সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের খাতিরেই প্রণাম করলাম।’’ পাশাপাশি তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে বলেন, ‘‘শতাব্দী রায় দীর্ঘ দিন ধরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। উনি সাংসদ থাকাকালীনই আমি বিধায়ক ছিলাম। তখন এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ওঁর সঙ্গে কথা হত। দেখা হয়ে গেল সবার সঙ্গে।’’

মিল্টনকে আসতে দেখেই হাসিমুখে এগিয়ে যাওয়া শতাব্দী বললেন, ‘‘আমি তো ওঁরই অপেক্ষায় ছিলাম। চলে যাচ্ছিলাম। শুনলাম, মিল্টন আসছে। তাই দেখা করার জন্য দাঁড়িয়ে গেলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজনীতির সুবাদে ওঁর সঙ্গে আমার অনেক দিনের পরিচয়। আমি যখন চেয়ারপার্সন ছিলাম, উনি তখন মেম্বার। উনি প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু, সম্পর্কটাকে নিশ্চয়ই আগে রাখব।’’ রাজনৈতিক সৌজন্য খুবই ভাল। কিন্তু ভোটের দিনও কি তা দেখা যাবে? হেসে শতাব্দীর জবাব, ‘‘কেন? আমি কি কখনও ভোটের দিন মারামারি করেছি? অন্য দলের প্রার্থীকে চড় মেরেছি? আজ যেমন দেখলেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তিগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিতে, ভোটের দিনও সেটাই দেখবেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement