দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
মেদিনীপুর শহরে বিজেপির ‘যুব আড্ডায়’ মশগুল দিলীপ ঘোষ। ঠিক তখনই পাশ দিয়ে যাচ্ছিল যুব তৃণমুলের বাইক মিছিল। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয় গন্ডগোল। দু’পক্ষই একে অপরকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ শুরু করে। উভয়পক্ষ একে অন্যকে ‘চোর-চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন। আর তাঁকে ঘিরে চোর-চোর স্লোগান শুনেই মেজাজ হারালেন মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষ। ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘‘কানের নীচে দু’ থাপ্পড় দিলে সাত দিন শুনতে পাবে না।’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের পঞ্চুরচক এলাকায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বিজেপি যুব মোর্চার। ৬ টা নাগাদ সেই যুব আড্ডায় উপস্থিত হন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ। ওই সময়ে কলেজ ময়দান থেকে বাইক মিছিল বার হয় যুব তৃণমূলের। পঞ্চুরচকে পৌঁছোতেই উভয় পক্ষের স্লোগান জোরালো হয়। এমনকি, বাইক মিছিল থেকে দিলীপকে উদ্দেশ্য করে উড়ে আসে চোর-চোর স্লোগান।
সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তাতে। এর পর আবার একই ঘটনা ঘটে ভাদুতলায়। পরে তৃণমূল কর্মীদের ওই আচরণের কথা খোলা মঞ্চে তুলে ধরেন দিলীপ। তিনি বলেন, “একটু আগে ভাদুতলায় গিয়েছিলাম। চা খেয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেটাও এদের ভাল লাগছে না। চোর-চোর বলে ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করল। আমি জুন মালিয়া-সহ তৃণমূলের নেতাদের বলে দিচ্ছি, যদি ভাবেন এ ভাবে ভোট করাবেন, আমরা পোস্টার ব্যানার নিয়ে ভোট করব না, অন্য কিছু নিয়ে ভোট করব। যারা কানে দুল পরে চেঁচামেচি করছে, তারা বাড়িতে যেন বলে আসে নামটা কেটে দিতে। দিলীপ ঘোষ এ রকম জোচ্চোরদের বুকে পা দিয়ে ১৮ টা এমপি জিতেছে (গত লোকসভা ভোটে বাংলায় ১৮টি আসন পায় বিজেপি)। দিলীপ ঘোষ সমাজবিরোধী, গুন্ডা, পকেটমারদের ভয় পায় না। কানের নীচে দু’ থাপ্পড় দিলে সাত দিন শুনতে পাবে না।’’
তৃণমূলকে নিশানা করে চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন দিলীপ। তিনি বলেন, “দম থাকলে মেদিনীপুর জিতে দেখা।’’ লোকসভায় মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়াকে নিয়ে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘এক জন ভদ্রমহিলা। রাজনীতির কিচ্ছু বোঝেন না। তাঁকে আমার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তিনি ভাল মানুষ। ভগবান তাঁকে আশীর্বাদ করুন।’’ তার পরেই মেদিনীপুর থেকে তৃণমূল প্রার্থীকে দু’লাখ ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলীপ বুঝিয়ে দেন আবার ওই কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে লড়ার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত।
তৃণমূলের ‘বহিরাগত প্রার্থী’ নিয়ে বিজেপি যে আক্রমণ শানাচ্ছে, সেই সুর শোনা গিয়েছে দিলীপের গলাতেও। তাঁর কটাক্ষ, “তোদের এমন দুর্দশা যে কেউ টিকিট নেয় না। তাই বিহার থেকে শত্রুঘ্ন সিন্হা, কীর্তি আজাদ, গুজরাত থেকে ইউসুফ পাঠানকে আনতে হচ্ছে। আর লড়তে হচ্ছে অধীরদার বিরুদ্ধে।’’