Lok Sabha Election 2024

শুক্রে ভোট, বুধে রামনবমী, দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ের মুখে নতুন করে উঠবে মন্দির হাওয়া?

ইদানীংকালে রাজ্যে নতুন উৎসব হয়ে উঠেছে রামনবমী। এ বার রাজ্য সরকারও ছুটি ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে লোকসভা ভোট শুরুর ঠিক দু’দিন আগে এই উৎসব ঘিরে রাজনীতি জমিয়ে তোলার প্রস্তুতিও চলছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ১৭:৩৫
ভোটের মুখে রামনবমী।

ভোটের মুখে রামনবমী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

দেশের দীর্ঘতম ভোট পর্ব শুরু হচ্ছে ১৯ এপ্রিল শুক্রবার। তার ঠিক দু’দিন আগে রামনবমী। এপ্রিলের ১৭ তারিখ, বুধবার প্রতি বারের মতো ভোট-বছরেও কি একই ভাবে রামনবমী পালিত হবে? বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বলছে, ভোটের সঙ্গে রামনবমী পালনের যোগাযোগ নেই। ফলে একই ভাবে বা আরও বেশি করে ওই তিথি পালন করবেন রাজ্যের রামভক্তেরা। বিজেপি বরাবরই বলে, রামনবমীতে দল কোনও কর্মসূচি নেয় না। দলের নেতা-কর্মীরা ‘রামভক্ত’ হিসাবেই অন্য সংগঠনের মিছিলে যোগ দেন। এ বারেও তেমনটাই বলছে। অন্য দিকে, এই প্রথম বার রামনবমীতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তবে তৃণমূলের বক্তব্য, ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেলানোর কোনও চেষ্টাই নেই দলের।

Advertisement

বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের দীর্ঘ দিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে গত জানুয়ারি মাসে। ২২ জানুয়ারি নতুন মন্দিরে রামলালার মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার অনেক আগে থেকেই অযোধ্যাকে ঘিরে আবেগ তৈরি করতে নানা প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে পরিষদ। মন্দির উদ্বোধনের পরে রাজ্য থেকে ট্রেনে করে কর্মী-সমর্থকদের অযোধ্যায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগে শামিল হয়েছে বিজেপিও। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। তবে ভোটের একেবারে মুখে মুখে রাম নামে আরও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা। বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিষদের সর্বভারতীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘রামনবমীর সঙ্গে ভোটের কোনও যোগ নেই। আর আমরা রাজনীতির থেকে অনেক দূরে। এ বার রামমন্দির তৈরি হওয়ায় গোটা দেশেই হিন্দু সমাজের মধ্যে আলাদা আবেগ তৈরি হয়েছে। ফলে রামনবমী ঘিরে উৎসবের পরিবেশ তৈরি হবে।’’

অযোধ্যাতে অন্য বছরের তুলনায় উৎসব বড় আকারের হবে জানিয়ে শচীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘বাংলায় প্রতিটি ব্লকে উৎসব হবে। গ্রামে গ্রামে শোভাযাত্রা হবে। যে সব জায়গায় বড় শোভাযাত্রা হয়, সেগুলিও হবে।’’ রাজ্যে রামনবমীতে মিছিল শুরু করা সংগঠন হিন্দু জাগরণ মঞ্চও আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়েছে।

প্রথম দফায় রাজ্যে ভোট রয়েছে তিনটি কেন্দ্রে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে ভোটের দু’দিন আগে বড় মিছিলের অনুমতি মিলবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, ওই তিন আসন ছাড়াও রাজ্যের অন্যত্র রামনবমী ঘিরে উত্তেজনা তৈরির সম্ভাবনা কম। অতীতের স্মৃতির পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেই সময়ে রাজ্যে নির্বাচনের জন্য আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়ে যাবে।

তবে রামনবমী পালন নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই যে হবে, তার আগাম ইঙ্গিত মিলেছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মুখপাত্রদের কথায়। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভোটের সঙ্গে তো রামের কোনও সংঘাত নেই। রাম রামের মতো হাঁটবেন আর মানুষ হইহই করে ভোট দেবেন।’’ অযোধ্যা নিয়ে আবেগ কি ফিরে আসবে? ‘‘রামকে নিয়ে রাজনীতি বিজেপি কোনও দিন করেনি। তিনি ভারতীয় শাশ্বত জীবনের পরিচয়। তাঁর আত্মমর্যাদা আর বহমানতা নিয়েই আমাদের কাজ। তাঁকে নিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করা নয়।’’ একই কথা নিজের দলের জন্য দাবি করে বিজেপিকেই রাম-রাজনীতির জন্য দোষ দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে হয় না। আমরা আমাদের সরকারের যে উন্নয়নমুখী কাজ, প্রকল্প তা নিয়েই মানুষের ভোট পাব। বিজেপির ধর্ম লাগে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement