TMC

এলাকার ভার পরাজিত প্রার্থীকে, সংশয় দলেই

কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েও ফল ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিলেন বিশ্বনাথ। তবে বিধায়ক পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেননি।

Advertisement
সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৩
tmc

—প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোট দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে দলের তরফে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানান তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। সোমবার দুর্গাপুর সার্কিট হাউসে বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর। গত বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপির কাছে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। তাঁর কাঁধে ভর করে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে সাফল্য আসবে কি না, সে নিয়ে দলেরই একাংশ সংশয়ে।

Advertisement

দুর্গাপুর পশ্চিমের ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফল বরাবরই দুশ্চিন্তার কারণ তৃণমূলের। দুর্গাপুর পুরসভার ১১-২২ এবং ২৯-৪৩, মোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে এই কেন্দ্র। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে বামেদের সমর্থনে ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন বিশ্বনাথ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ৪৯,২৪৮ ভোটে পিছিয়ে যায় তৃণমূল।

কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েও ফল ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিলেন বিশ্বনাথ। তবে বিধায়ক পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেননি। তাঁকে ২০২১ সালে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করে। বিজেপির লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের কাছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার ভোটে তিনি পরাজিত হন। আসন্ন লোকসভা ভোটে সেই বিশ্বনাথের উপরেই দলনেত্রী ভার দিয়েছেন এই কেন্দ্রের। মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, যে বিধানসভা কেন্দ্রে দলের বিধায়ক রয়েছেন, সেখানে সেই বিধায়ককে এবং যেখানে বিরোধী দলের বিধায়ক রয়েছে, সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থীকেই দায়িত্ব দিয়েছেন দলনেত্রী। সেই হিসেবেই বিশ্বনাথ দুর্গাপুর পশ্চিমের দায়িত্ব পেয়েছেন। বিশ্বনাথ শুধু বলেন, ‘‘প্রাক্তন বিধায়ক হিসেবে দুর্গাপুর পশ্চিমের দায়িত্ব আমাকেই দেওয়া হয়েছে। একজোট হয়ে সবাই মিলে লড়তে হবে।’’

দলের একটি সূত্রের দাবি, অতীতে বার বার বিশ্বনাথ প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলেছেন। দলনেত্রীর কাছেও অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। ২০১৬ সালে তৎকালীন মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূল ছাড়েন। ২০২১ সালে হারের পরে আইএনটিটিইউসি-র এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে বিশ্বনাথের বক্তব্য, ‘‘এ সব দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমার কোনও বক্তব্য থাকলে আমি তা সর্বোচ্চ নেতৃত্বে কাছে জানাব না তো কোথায় জানাব?’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুরের এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘অতীতে বার বার দেখা গিয়েছে, বিপাকে পড়লেই উনি (বিশ্বনাথ) দলের কারও না কারও বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন। দল প্রতিষ্ঠার অনেক পরে তিনি দলে যোগ দেন। মাঝে চলে যান কংগ্রেসে। তাই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে।’’ দলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, ‘‘বিশ্বনাথ লড়াকু নেতা। মানুষের পাশে আছেন। দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সবাই এক হয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন পুনরুদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য।’’

আরও পড়ুন
Advertisement