Sanjeev Balyan vs Sangeet Som

পদ্মবিরোধী প্রচারে রাজপুত সংগঠন, দুই নেতার গোষ্ঠীলড়াই, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে চাপে বিজেপি

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে দলের বিজেপির উপর চাপ বাড়িয়েছে দুই নেতার দ্বন্দ্ব এবং দলের অন্দরে ক্ষোভ। ঘটনাচক্রে, দু’জনেই ২০১৩-র মুজফ্‌ফরনগর গোষ্ঠীহিংসায় অভিযুক্ত। প

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০৫
সঙ্গীত সোম এবং সঞ্জীব বালিয়ান।

সঙ্গীত সোম এবং সঞ্জীব বালিয়ান। — ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্যের বিজেপি নেতা পুরুষোত্তম রূপালার বিরুদ্ধে জাতি অবমাননার অভিযোগ তুলে পদ্মবিরোধী প্রচার শুরু করেছে কয়েকটি রাজপুত সংগঠন। মহাপঞ্চায়েত ডেকে রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজের নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রূপালা রাজকোটের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে থেকে গেলে গুজরাতের পাশাপাশি হিন্দিবলয়ের রাজ্যগুলিতেও বিরোধী প্রচারে নামবেন তাঁরা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিজেপির উপর চাপ বাড়িয়েছে দলের দুই নেতার দ্বন্দ্ব এবং দলের অন্দরে ক্ষোভ। ঘটনাচক্রে, দু’জনেই ২০১৩-র মুজফ্‌ফরনগর গোষ্ঠীহিংসায় অভিযুক্ত। প্রথম জন জাঠ জনগোষ্ঠীর ‘বাহুবলী’, মুজফ্‌ফরনগরের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান। দ্বিতীয় জন, রাজপুত নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক সঙ্গীত সোম। সঙ্গীত অনুগামী রাজপুতেরা ওই লোকসভা কেন্দ্রের দু’ডজনেরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় খোলাখুলি সঞ্জীব বিরোধী প্রচারে নেমে পড়েছেন বলে অভিযোগ।

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ, সহারনপুর, মিরাট, কইরানা, মুজফ্‌ফরনগর, বাগপত, বিজনৌর, নাগিনা, আমরোহা, মোরাদাবাদ, সম্ভল, আলিগড়, হাথরস, মথুরা, আগ্রা এবং ফতেপুর সিক্রির মতো আসনে রাজপুত (ঠাকুর) ভোটারদের গড় সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি। রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজের নেতাদের অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা বিজেপির ‘ভোটব্যাঙ্ক’ হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ব্রাত্য। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ওই অঞ্চলের শুধুমাত্র গাজ়িয়াবাদে রাজপুত প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল ভিকে সিংহকে। কিন্তু এ বার ওই আসনেও টিকিট দেওয়া হয়েছে বানিয়া জনগোষ্ঠীর এক নেতাকে।

লোকসভা ভোটে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠ নেতা জয়ন্ত চৌধরির আরএলডির সঙ্গে বিজেপির জোট হওয়ার পরে রাজপুতদের প্রতি উপেক্ষা আরও বে়ড়েছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে রাজপুত নেতা সঙ্গীত সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জাঠ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি সঞ্জীবের দিকে। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‘উনি এক জন জাতিবাদী নেতা। গত পাঁচ বছরে নিজের জাতের লোকেদের তুষ্ট করতে গিয়ে রাজপুতদের উপেক্ষা করেছেন।’’

এর ফলে ভোটের ময়দানে সঞ্জীবের অবস্থান আরও দুর্বল হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রূপালা সম্প্রতি তাঁর নির্বাচনকেন্দ্র, গুজরাতের রাজকোটে দলিতদের একটি সভায় বলেছিলেন, ‘‘বিদেশি মুঘলরা আমাদের উপর রাজত্ব করেছে। ব্রিটিশরাও করেছে। ওরা আমাদের অত্যাচার করতে ছাড়েনি। কিন্তু রাজপুত মহারাজারা ওদের প্রণাম করতেন এবং ‘রুটি ও বেটি’-র সওদা করতেন। আমাদের রুখী (গুজরাটের দলিত) সম্প্রদায় কিন্তু তাদের ধর্ম পরিবর্তন করেনি বা মুঘল ও ব্রিটিশদের সঙ্গে সম্পর্কও করেনি।’’

রূপালার ওই মন্তব্যের পর থেকেই গুজরাতের পাশাপাশি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে রাজপুত-বিক্ষোভ। সম্প্রতি রাজপুত সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চের মহাপঞ্চায়েতের পরে কিসান-মজদুর সংগঠনের সভাপতি ও রাজপুত সমাজের বিশিষ্ট নেতা ঠাকুর পুরণ সিংহ খোলাখুলি বিজেপিকে হারাতে বিরোধী শক্তিশালী প্রার্থীকে সমর্থনের ডাক দিয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement