প্রতীকী চিত্র।
জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, তাই কিছুটা ভয় এবং অনেক চিন্তা। সঠিক পাঠ ও পরীক্ষাপদ্ধতি অনুসরণ পরীক্ষার্থীদের এই ভয় এবং চিন্তা থেকে মুক্তি ঘটাতে পারে। সে জন্যই মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা— বাংলা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের বিষয় শিক্ষক প্রিয়তোষ বসু।
বিষয় নির্বাচন- সমগ্র পাঠ্যবই থেকে কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবে বেশি নম্বর পাওয়ার লক্ষ্যে। ‘অভিষেক’ বা ‘সিন্ধুতীরে’- এর মতো আখ্যানধর্মী কবিতাগুলি এ ক্ষেত্রে ব্যঞ্জনাধর্মী কবিতাগুলির থেকে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। গল্পের ক্ষেত্রে অবশ্য প্রতিটি গল্পের কাহিনিকে ঘটনা-পারম্পর্য অনুযায়ী মনে রাখতে হবে।
গুরুত্ব যেখানে- গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র পর্যবেক্ষণের পরে ২০২৪-এর মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র নিয়ে কিছু প্রত্যাশা করা যেতে পারে। যদিও তা সম্পূর্ণই পর্যবেক্ষণ-নির্ভর। কবিতার ক্ষেত্রে রচনাধর্মী প্রশ্নের জন্য ‘অসুখী একজন’, ‘সিন্ধুতীরে’, ‘আফ্রিকা’, ‘প্রলয়োল্লাস’ এবং ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সে রকমই গল্পের ক্ষেত্রে ‘বহুরূপী’, ‘অদল বদল’ এবং ‘পথের দাবী’ রচনাধর্মী প্রশ্নের জন্য বিশেষ মনোযোগ পেতে পারে। ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকের প্রথম অংশে সিরাজদ্দৌলা-মঁসিয়ে লা প্রসঙ্গ, নবাবের উদার অসাম্প্রদায়িক মনোভাব (‘বাংলা শুধু হিন্দুর না, বাংলা শুধু মুসলমানের না...’),আর শেষপর্বে ঘসেটি বেগমের আগমন ও সিরাজ এবং লুৎফার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব, এবং একেবারে শেষে নবাব সিরাজের হতাশ অভিব্যক্তি বিশেষ ভাবে দেখতে হবে।
নাটকের চরিত্রগুলিকেও পর্যালোচনা করতে হবে। ‘কোনি’ উপন্যাসে গঙ্গার ঘাটে বিষ্টু ধরের শরীর দলাই মালাই, ক্ষিতীশ সিংহের সঙ্গে জুপিটারের বিবাদ, লীলাবতী ও প্রজাপতি প্রসঙ্গ , মাদ্রাজের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় কোনির অভিজ্ঞতা ও সাফল্য এবং দারিদ্র ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির লড়াই (‘ফাইট কোনি, ফাইট’) গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানবিষয়ক রচনা (যেমন-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান, আধুনিক জীবনে কম্পিউটার, পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা), উপযোগিতা ভিত্তিক রচনা (যেমন-ছাত্রজীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা, দেশভ্রমণ ও শিক্ষা, উৎসবের প্রয়োজনীয়তা, বাংলার উৎসব, সমাজ জীবনে মেলার গুরুত্ব) এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাভিত্তিক রচনা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
এ ছাড়া, উত্তর লিখতে হবে কথ্য চলিত ভাষায়। এখনকার বাংলায় আলঙ্কারিক এবং তৎসম শব্দবহুল ভাষারীতি বর্জনীয়। কত অনায়াসে শিক্ষার্থী তার মনের ভাবকে প্রকাশ করতে পারছে, রচনা রীতিতে যুক্তিনিষ্ঠা এবং বিশ্লেষণ-দক্ষতা দেখাতে পারছে তার উপরেই উত্তরপত্রের গুণগত মান নির্ভর করবে।