ছবি: সংগৃহীত।
২৪ ডিসেম্বর (রবিবার) প্রাথমিকের টেট। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে। কলকাতাতেও কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। তাহলে টেটে কি আগ্রহ হারাচ্ছেন শহরের শিক্ষিত যুব সমাজ।
এ বছর টেটে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লক্ষ্য ৯ হাজার ৫৪ জন। কলকাতায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সাকুল্যে ২০০০-এর একটু বেশি বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর। সারা রাজ্য জুড়ে পরীক্ষার মোট কেন্দ্র ৭৭৩। কলকাতায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে মাত্র পাঁচটি।
প্রাথমিক শিক্ষকতায় আগ্রহ হারাচ্ছেন কলকাতার শিক্ষিত সমাজ। টেট পাস করেও যোগ্য হয়ে অযোগ্যদের তালিকায় রয়েছেন বহু প্রার্থী। রাজপথের বুকে বার বার যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে তিলোত্তমা। ধর্মতলায় দীর্ঘ দিন ধরে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে এ বার কি সেই প্রভাবই পড়ল।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, “কলকাতায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে সেটা ঠিক। তবে কলকাতা ছোট জায়গা, জেলা বাছাই করার সুবিধা রয়েছে প্রার্থীদের সে ক্ষেত্রেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে পারে।”
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “গত বছর যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরাই এখনও চাকরি পাননি। কলকাতার শিক্ষিত সমাজের সরকারি চাকরির প্রতি অনীহা আছে। রাজপথে আন্দোলন এবং দুর্নীতির একটা বড় প্রভাব পড়েছে শহরের শিক্ষিত সমাজের উপর।”
২৪ শে ডিসেম্বর (রবিবার) রাজ্যে টেট। টেটের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ৭৭৩ টি কেন্দ্রে থাকছে ১,৫৪৬টি সিসিটিভি। থাকছে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং-এর ব্যবস্থা। পরীক্ষার্থীরা শাঁখা-পলা থেকে শুরু করে কোন প্রকার অলঙ্কার পড়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি জলের বোতল থেকে শুরু করে ঘড়ি কোন কিছুই নিয়ে যেতে পারবেন না। পরীক্ষার হলেই সব রকম ব্যবস্থা রাখছে পর্ষদ।
গৌতম পাল বলেন, “স্বচ্ছতার সঙ্গে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তার জন্য যা যা ব্যবস্থা গ্রহণ করার সব রকম প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে।”
জেলায় পরীক্ষার নিরাপত্তার যাবতীয় দায়িত্ব এবং অফিসার ইনচার্জের নিয়োগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়েছে। বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স-এর ক্ষেত্রেও এবার সতর্ক পর্ষদ। গত বছর এই অ্যাটেন্ডেন্স নিয়ে বেশ কিছু কেন্দ্র থেকে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাই এবার পরীক্ষা কেন্দ্রেই পরীক্ষা চলাকালীন বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে পর্ষদের তরফ থেকে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের উপ-সচিব পার্থ কর্মকার বলেন, “গত বছরে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তা যাতে এ বছর আর না হয় তার জন্য আমরা যথেষ্ট সতর্ক। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার হলেই বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, পরীক্ষা শুরু দুপুর ১২টা থেকে শেষ হবে দুপুর ২:৩০ মিনিটে। তবে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ করার সময়সীমা শুরু হচ্ছে সকাল ৯.৩০ থেকে। পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রত্যেক রুমে ২৫ জনের বেশি পরীক্ষার্থী বসতে পারবেন না বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। একটি টেবিলে দু’জন করে পরীক্ষার্থী বসতে পারবেন।
রবিবার লক্ষাধিক টেট পরীক্ষার্থীদের যাতে যাতায়াতের কোনও অসুবিধে না হয় তা নিয়েও সতর্ক প্রশাসন। অতিরিক্ত সরকারি বাস চলবে বিভিন্ন রুটে। পাশাপাশি মেট্রো এবং রেল পরিষেবাও স্বাভাবিক রাখার কথা বলা হয়েছে রাজ্যের তরফ থেকে।