প্রতীকী চিত্র।
ভোটের পরে স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন শুরু হবে কবে? ২৭ মে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরও বিভিন্ন সরকারি স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিত থাকবে। তাই বিদ্যালয় চত্বরকে পঠনপাঠনের উপযুক্ত করে তুলতে গরমের ছুটি শেষ হবে ৯ জুন। অর্থাৎ ১০ জুন থেকে স্কুলে যেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। পূর্ব প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই ছুটি শেষ হওয়ার কথা ৩ জুন।
এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরের দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চালু করা উচিত। কারণ ৩ জুন থেকে স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। যে হেতু আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা আর নেই, তাই ভোট পরবর্তী আবহে বিদ্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সূচি অনুযায়ী, ৯ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত গরমের ছুটি থাকে। চলতি বছরে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ২২ এপ্রিল থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ভোট গণনার কারণে স্কুল চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিত থাকবে, তাই স্কুলগুলিকে পঠনপাঠনের উপযুক্ত করতে তুলতে আরও সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ৩ জুন থেকে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে।
এই বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “গরমের ছুটিতে প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তাই ছুটি চলাকালীনই প্রধান শিক্ষক, সহ-প্রধান শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও কিছু শিক্ষক শিক্ষিকার মার্কশিট বিতরণ, স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট প্রদান ও একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হয়। একই সঙ্গে, শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কারের কাজও ছুটির সময়ই সেরে রাখতে হয়। তাই শিক্ষার্থীদের ছাড়া স্কুলে সব শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে বলাটা একপ্রকার অর্থহীন নির্দেশ।”
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘নির্বাচন পরবর্তী প্রক্রিয়ার কারণে সরকার শিক্ষকদের জন্য ৩ তারিখ থেকে স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের ১০ তারিখ থেকে উপস্থিত থাকতে বলেছে।’’ স্কুল দেরি করে চালু করার বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, হাতে গোনা কিছু স্কুলে পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “যেখানে প্রায় ৩০০টি স্কুলে আধাসামরিক বাহিনী থাকবে, তার বাকি প্রায় ১৫ হাজার স্কুলের স্কুলের এক কোটি ৪০ লক্ষ শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে কেন? শিক্ষা দফতরের এই খামখেয়ালিপনা সমর্থনযোগ্য নয়, কারণ এতে ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষতিই হবে।’’
প্রসঙ্গত, তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইনে পঠনপাঠনে উদ্যোগী হন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিমেস্টার পদ্ধতিতে একাদশের নতুন পাঠ্যক্রমের বই প্রকাশিত না হওয়ায় সেই ক্লাসও শুরু করা যায়নি। এ বার নির্ধারিত সময়ের পরে স্কুলগুলি চালু হওয়ার পর কী ভাবে পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ হবে এবং কী ভাবে সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।