সংগৃহীত চিত্র।
৮ তারিখ প্রকাশিত হচ্ছে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ফল। এর পর ১০ তারিখ থেকে স্ক্রুটিনি (পিপিএস) এবং রিভিউ (পিপিআর)-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। আবেদনকারি পরীক্ষার্থীদের জন্য এ বার বিশেষ সুবিধা চালু করতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার নাম দেওয়া হয়েছে তৎকাল পরিষেবা। সাধারণত পরীক্ষার্থীদের স্ক্রুটিনি এবং রিভিউতে যে টাকা দিতে হয় তার থেকে তিনগুণ বেশি টাকা দিতে হবে তৎকাল পরিষেবার ক্ষেত্রে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আবেদনের সাত দিনের মধ্যে ফলপ্রকাশ না হলে তৎকাল পরিষেবার জন্য যে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে তা ফেরত দেওয়া হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “তৎকালের ক্ষেত্রে যে দিন থেকে পড়ুয়ারা আবেদন করবে সে দিন থেকে সাত দিনের মধ্যে সংশোধিত মার্কশিট পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই সময়সীমার মধ্যে যদি মার্কশিট হাতে না পায় তাহলে অতিরিক্ত যে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা ফেরত দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে।”
সাধারণত, ফল ঘোষণার পর স্ক্রুটিনি এবং রিভিউর জন্য আবেদন করে থাকেন বহু পরীক্ষার্থী। আবেদনের দিন থেকে ফলপ্রকাশ— সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটির সময় লাগে ৪৫ দিন। আর এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে আবেদনরত পড়ুয়ারা অনেকেই উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে নানা রকম অসুবিধার সম্মুখীন হন। সে কথা মাথায় রেখে এই তৎকাল পরিষেবা চালু করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল আবেদনের সাত দিনের মধ্যে সংশোধিত মার্কশিট হাতে পাবেন আবেদনকারীরা। ৮ মে দুপুর ১ টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ফল প্রকাশ করা হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিকের। দুপুর ৩টে থেকে শিক্ষা সংসদ নির্ধারিত ওয়েবসাইট, অ্যাপ এবং এসএমএস-এর মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। আর ১০ তারিখ থেকে স্কুলগুলির হাতে মার্কশিট ও শংসাপত্র তুলে দেবে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এর জন্য ৫৫টি বিতরণ কেন্দ্র করা হয়েছে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে।
১০ তারিখ দুপুর ২টো থেকে স্ক্রুটিনি এবং রিভিউ-এর জন্য অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন ইচ্ছুক পড়ুয়ারা। আবেদন করার শেষ দিন ১৩ তারিখ মধ্যরাত পর্যন্ত। যে হেতু পড়ুয়াদের তৎকাল পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে তার জন্য অতিরিক্ত টাকাও দিতে হবে পড়ুয়াদের। সাধারণ ক্ষেত্রে স্ক্রুটিনির জন্য বিষয় পিছু ১৫০ টাকা এবং রিভিউ-এর জন্য বিষয় পিছু ২০০ টাকা ধার্য করা আছে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে। সেখানে আবেদনরত প্রত্যেক পড়ুয়াকে তৎকালের জন্য দিতে হবে ৬০০ এবং ৮০০ টাকা।
অতিরিক্ত এত টাকা ধার্য করা নিয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “পিপিএস এবং পিপিআরের যে ফি ধার্য করা হয়েছে, বিশেষ করে তৎকালের জন্য তা সঠিক নয়, বলে আমরা মনে করি। এতে অভিভাবকদের উপর অহেতুক আর্থিক চাপ বাড়বে। এগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এটা হওয়া কাঙ্খিত নয় বলে আমরা মনে করি।”
এ বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার খাতা দেখার পর অনলাইনে নম্বর জমা নেওয়া হয়েছে। এবং এই অনলাইনে নম্বর জমা নেওয়ার ফলেই ছাত্র-ছাত্রীদের এই ধরনের তৎকাল পরিষেবা দেওয়ার সুবিধা চালু করা সম্ভব হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানান, এই ব্যবস্থাপনায় এক জন পড়ুয়া তৎকাল পরিষেবার জন্য আবেদন করলেই ওই পড়ুয়ার নির্দিষ্ট উত্তরপত্রটি যে প্রধান পরীক্ষকের কাছে রয়েছে সেখানে সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ যাবে। পুরো বিষয়টি যে হেতু অনলাইনে করা হচ্ছে, এসএমএস আসার পর সংশ্লিষ্ট প্রধান পরীক্ষক তৎকাল আবেদন জমা দেওয়ার পোর্টালে গিয়ে নিজস্ব লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে দেখতে পাবেন আবেদন জমা পড়েছে। এবং সেখানেই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র দেখে স্ক্রুটিনি এবং রিভিউ করে সংশোধিত নম্বর জমা দেওয়ারও ব্যবস্থা থাকছে। এবং সেই নম্বর যে হেতু অনলাইনে জমা দেওয়া হবে শিক্ষা সংসদও তা তৎক্ষণাৎ দেখতে পাবে। এবং সংশোধিত মার্কশিট দ্রুত ছাপিয়ে তা আঞ্চলিক দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে তৎকাল পরিষেবা চালু হলেও পুরনো পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের আবেদন করারও সুযোগ থাকছে। তাদের জন্য ১০ তারিখ থেকে ১৫ দিনের জন্য আবেদনের পোর্টাল খোলা থাকবে। যে দিন আবেদন নেওয়ার পোর্টাল বন্ধ হবে, তার পর থেকে ১৫ দিনের মাথায় মাথায় রিভিউ এবং স্ক্রুটিনির ফল ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ মোট ৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে আবেদনকারীদের।