সংগৃহীত চিত্র।
প্রাথমিকের পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ছুটির তালিকাতেও গ্রীষ্মাবকাশ ধার্য করা হল মাত্র ১১ দিন। সব মিলিয়ে বার্ষিক ছুটির সংখ্যা এখন ৬৫ দিন। অবিলম্বে আগের মতো মোট ছুটির তালিকা বাড়িয়ে ৮৫ দিন করা হোক, দাবি শিক্ষক মহলের। যাতে প্রবল গরমের সময় অতিরিক্ত ১৫ দিনের ছুটি স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যাণ্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন ‘‘গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ১১ দিন গরমের ছুটি হাস্যকর। যদিও এটা প্রায় ৪৫ দিনে গড়িয়ে যাচ্ছে প্রতি বছর। এতে স্কুলগুলির পরিকল্পনায় সমস্যা হয়। এর থেকে গরমের ছুটি অন্য বোর্ডগুলির এর মতো বাড়িয়ে মোট ছুটির দিনের সংখ্যা আগের মতো ৮৫ দিন করা উচিত।”
একই ভাবে, বিভিন্ন জাতীয় ছুটির দিন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও সেই দিনগুলিকে ছুটির দিন হিসাবে ধার্য করা হয়েছে। ছুটি আর উপস্থিতি কী করে একসঙ্গে হতে পারে, প্রশ্ন শিক্ষকদের।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবসের মতো দিনগুলিকে ছুটি দেখানো হয়। অথচ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পালন করার কথা বলা হয়ে থাকে। ওই দিনগুলি ছুটি হিসেবে না ধরে কার্যকরী দিন হিসেবে ঘোষণা করে মর্যাদার সঙ্গে পালন করার দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা রক্ষিত হলো না।’’
শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, অপরিকল্পিত ভাবে রাজ্য সরকার দীর্ঘ সময় ছুটি ঘোষণা করে বিদ্যালয় গুলিকে বন্ধ করে দেয়। এতে পঠন-পাঠন দারুণ ভাবে বিঘ্নিত হয়। প্রত্যেক বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের গরমের ছুটি পড়ে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। চলতি বছর ভোটের কারণে তা পরিবর্তন করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকেই। স্কুল খুলেছিল জুনের প্রথম সপ্তাহে। এ প্রসঙ্গে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরের মতোই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ গ্রীষ্মপ্রধান দেশ তথা রাজ্যের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির জন্য গরমের ছুটি মাত্র ১১ দিন, অথচ পুজোর ছুটি ২৫ দিন। এই ব্যবস্থা শিক্ষার পরিপন্থী। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের কথা মাথায় রাখা হয়নি। কিসের স্বার্থে কেন বারে বারে এই অব্যবস্থা বছরের পর বছর চলছে?’’
গত মঙ্গলবার ২০২৫-এর স্কুল স্তরে প্রাথমিকের বার্ষিক ছুটির ক্যালেন্ডার প্রকাশিত হয়। তাতেও লক্ষ করা গিয়েছে, গরমের ছুটি ১৯ দিন কমিয়ে ন’দিন করা হয়েছে। পাশাপাশি, পুজোর ছুটি বাড়িয়ে টানা ২৫ দিন করা হয়েছে। দ্য পার্ক ইনস্টিটিশন-এর প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘ প্রতি বছরই গরমের তীব্রতার জন্য বাধ্য হয়েই বাড়তি ছুটি দিতে হয় পর্ষদকে। এ ক্ষেত্রে কোনও ভাবে যদি পুজোর ছুটির বিষয়কে নজরে রেখে গরমের ছুটিটাই ক্যালেন্ডারে বাড়িয়ে রাখা যায়, তা হলে হয়তো সুবিধা হবে স্কুলগুলির।’’