ইউজিসির খসড়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের জন্য বড় সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ( ইউজিসি)। স্নাতক স্তরে বাংলা অনার্সের পাশাপাশি ইংরেজি নিয়েও অনার্স করতে পারবেন পড়ুয়ারা। একই ভাবে স্নাতকোত্তর স্তরেও ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বৃহস্পতিবার ইউজিসি-র তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শুধু বাংলা বা সমতুল বিষয় নয়, একই সঙ্গে টেকনিক্যাল কোর্সও করতে পারবেন কোনও পড়ুয়া।
সূত্রের খবর, উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত আইন ২০২৪-এর কথা উল্লেখ করে ইতিমধ্যে নয়া কোর্স সংক্রান্ত খসড়া তৈরি করেছে ইউজিসি। সেখানে বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে দু’টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন। বছরে দু’বার, অর্থাৎ জুলাই অথবা অগস্ট এবং জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারিতে ভর্তি নেওয়া হবে। কোনও পড়ুয়া চাইলে দু’টি কোর্সের মধ্যে একটিকে মাঝপথেই ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
তবে ইউজিসির খসড়ার মাধ্যমে আদৌ শিক্ষার্থীদের কোনও সুবিধা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ব্রাত্য। এর মাধ্যমে সাধারণ পড়ুয়াদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথকে দুর্গম করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। ‘হীরক রাজার দেশে’র সেই সংলাপ ‘ওরা যত বেশি জানে, তত কম মানে’ তুলে ধরেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। এই খসড়া প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, “দেখে মনে হল এর সাধ অনেক, কিন্তু সাধ্যের বিষয়ে সে নিশ্চুপ। বিদেশের অনুকরণ করে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদল হবে, কিন্তু অর্থ আসবে কোথা থেকে? আসলে চুপিচুপি পেছনের দরজা দিয়ে উচ্চশিক্ষাকে ব্যয়বহুল এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা, যাতে সাধারণ বাড়ির ছেলেমেয়েদের সাধ্যের বাইরে চলে যায়।”
ইউজিসির যুক্তি, বর্তমানে উচ্চশিক্ষার আঙ্গিক ব্যাপক ভাবে পাল্টে যাচ্ছে। শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটছে ক্রমশ। উচ্চশিক্ষায় একের বেশি বিষয় নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে। অন্য দিকে, দু’টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে পড়ুয়ার ক্রেডিট পয়েন্ট বৃদ্ধি পাবে, যা তাকে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে বেশি করে সাহায্য করবে বলেও মত ইউজিসির। স্নাতক স্তরে একজন পড়ুয়া যদি একটি বিষয়ে ৫০ শতাংশ ক্রেডিট পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তা হলে বাকি ৫০ শতাংশ স্কিল নির্ভর ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়ে পড়াশোনা করে পেতে পারেন তিনি। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর। অন্য দিকে, স্নাতকোত্তরের মেয়াদ ১ থেকে ২ বছর হবে। তবে বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কোর্সের মেয়াদ বাড়তে বা কমতে পারে বলে খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ইউজিসির তরফে খসড়া প্রস্তাবগুলি কেন্দ্রের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।