যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সংগৃহীত ছবি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। বারংবার বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও তা পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের আবার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে নড়েচড়ে বসলেন কর্তৃপক্ষ।
গত বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর পঠনপাঠন বাদে ক্যাম্পাসে সুরক্ষা এবং সুস্থতা বজায় রাখতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। ক্যাম্পাসে মদ্যপান এবং মাদক সেবনের ক্ষেত্রেও জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও বহিরাগত আবার কখনও ক্যাম্পাসের পড়ুয়ারাই নেশার সঙ্গে যুক্ত বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি আবারও মত্ত অবস্থায় ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায়র প্রেক্ষিতে বুধবার কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকাশিত হয়েছে নির্দেশিকা।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আবারও জানিয়েছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার অবনতি ঘটছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং গবেষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন। দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে রাতের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করতে পারলে পঠনপাঠনের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়াই অসম্ভব হয়ে পড়ছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নেশার দ্রব্য ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে একাধিক বার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও তা বাস্তবায়নে ফাঁক থেকেই গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, গত ২৯ নভেম্বর মত্ত অবস্থায় এক প্রাক্তন গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রবেশ করে ঝামেলা বাধানোর চেষ্টা করেন। এর পর তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এর আগেও রাত্রিবেলা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতেরা দ্রুত বাইক চালিয়ে ঢোকার সময় নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে তাঁদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, প্রায় রোজই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড ভিউ চত্বর এবং ওএটি-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়া এবং বহিরাগতরা মাদক সেবন করেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকেন। তাই ওই চত্বরে কাজের জন্য যাতায়াত করতে ভয় পান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ক্যাম্পাসই মাদকমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি হস্টেলগুলিতে বহিরাগত সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এই ধরনের অভিযোগ সামনে এলেই আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
বারবার বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও নিরাপত্তা এবং মাদকসেবন থেকে দূরে রাখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরকে। কর্তৃপক্ষের চোখরাঙানি এবং বিজ্ঞপ্তিকে উপেক্ষা করে সন্ধ্যা নামলেই ক্যাম্পাসের আনাচেকানাচে চলে মাদকসেবন। যার ফলে, নানা বিশৃঙ্খলার খবরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠে আসে শিরোনামে। হস্টেল আবাসিক ও গবেষকেরা আতঙ্কিত হয়ে থাকেন এই সমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে।