SSC on Recruitment Verdict

যোগ্যদের হয়ে সওয়াল, যদিও কী ভাবে তা সম্ভব! ব্যাখা দিতে অপারগ স্কুল সার্ভিস কমিশন

বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের গলায় আক্ষেপের সুর শোনা যায়। কমিশনের মতে, প্রায় ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট যদি নষ্ট না হতো তা হলে হয়ত এই আইনি জটিলতা হত না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৫
চাকরি বাতিলের পর যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা রাজপথে।

চাকরি বাতিলের পর যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা রাজপথে। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই রায়ের পরই অযোগ্যদের বিষয়ে তথ্য এসএসসির তরফে সঠিক ভাবে পেশ করা হয়নি বলে বিভিন্ন মহলে উঠছে অভিযোগ। সেই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে যোগ্যদের কী হবে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারল না কমিশন। কমিশনের দাবি তিনটি পৃথক হলফনামায় ৫,২৫০ জনের তথ্য আদালতের কাছে জমা দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ এবং গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র তথ্য।

Advertisement

স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “আদালতের রায়ের ভিত্তিতে যে প্রশ্ন উঠছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন সাহায্য করেনি, তা ঠিক নয়। পৃথক তিনটি মামলায় হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেও আদালতের কাছে অযোগ্যদের তথ্য পেশ করা হয়েছে। আদালত অসহযোগিতার প্রসঙ্গ তুললেও সিবিআই-এর দেওয়া তথ্য ও কমিশনের কাছে থাকা তথ্য থেকে যা পাওয়া গেছে সমস্তটাই জানানো হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, এই মর্মে ১৮ ডিসেম্বর, ২০ ডিসেম্বর এবং ৫ জানুয়ারি তিনটি পৃথক হলফনামা জমা দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন।

নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআর শিটে কারচুপি, র‍্যাঙ্ক জাম্পের তথ্য-সহ ৮০৮ জন অযোগ্য চাকরি প্রার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এর মধ্যে নবম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে রয়েছে ৩৩ জনের নাম যাঁদের ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে। র‍্যাঙ্ক জাম্প হয়েছে ১৮৫ জনের শিক্ষকের। মোট ৯৯৩ জন যাঁদের অযোগ্য বলে চিহ্নিত করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রেও কারচুপি হয়েছে মোট ৮১১ জনের। এর মধ্যে ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে ৭৭২ জন শিক্ষকের। র‍্যাঙ্ক জাম্প হয়েছে ৩৯ জন শিক্ষকের। গ্রুপ সি-র ক্ষেত্রে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে ১,১৩৩ জনের। এর মধ্যে ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে ৭৮৩ জন শিক্ষাকর্মীর এবং র‍্যাঙ্ক জাম্প হয়েছে ৫৭ জন শিক্ষাকর্মীর। একই ভাবে গ্রুপ ডির ক্ষেত্রে মোট অযোগ্য নিয়োগ হয়েছে ২,৩১৩ জন শিক্ষাকর্মীর। এর মধ্যে ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে ১,৭৪১ জন শিক্ষাকর্মীর। র‍্যাঙ্ক জাম্প হয়েছে ৭০ জন শিক্ষাকর্মীর।

এ ছাড়াও এসএসসি-র সুপারিশ ছাড়াও যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের বেতন বন্ধ এবং চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-এর ক্ষেত্রে ৫৭৩ এবং ৩৫০ জন শিক্ষাকর্মীর ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালতকে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে। এ ছাড়াও, কমিশনের তরফে ১৮৪ জন চাকরিপ্রার্থীকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, যার মধ্যে ১৩০ জন ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেই তথ্যও কমিশনের তরফে আদালতের কাছে পেশ করা হয়।

বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের গলায় আক্ষেপের সুর শোনা যায়। কমিশনের মতে, প্রায় ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট যদি নষ্ট না হতো তা হলে হয়ত এই আইনি জটিলতা হত না। এই বিষয়ে কমিশনের তরফে সিদ্ধার্থ বলেন, “ওই তথ্য পেশ করতে পারলে, যোগ্য অযোগ্যদের সহজে চিহ্নিত করা যেত।”

আরও পড়ুন
Advertisement