HS semester system

১৩ পার্বণের ফাঁসে সিমেস্টার, প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষক মহলের

একাদশের ক্লাস শুরু হওয়ার তিন মাস কাটতে না কাটতেই অক্টোবার থেকে প্রায় এক মাসের কাছাকাছি ছুটি রয়েছে দুর্গাপুজো, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও কালীপুজো সহ নানান অনুষ্ঠানকে ঘিরে। আর এখানেই পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষক মহল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১১:৩৮

সংগৃহীত চিত্র।

১৩ পার্বণে বিভিন্ন ছুটির বহরে সিমেস্টারের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষক মহলের। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণিতে চালু হতে চলেছে সিমেস্টার সিস্টেম। নতুন সেশন শুরু হবে জুন মাস থেকে। একাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে ২০২৪-সালের নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ। একাদশের ক্লাস শুরু হওয়ার তিন মাস কাটতে না কাটতেই অক্টোবার থেকে প্রায় এক মাসের কাছাকাছি ছুটি রয়েছে দুর্গাপুজো, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও কালীপুজো সহ নানান অনুষ্ঠানকে ঘিরে। আর এখানেই পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষক মহল।

Advertisement

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পাঠ্যক্রম শেষ করার সময়সীমা খাতায়-কলমে ছ’মাস দেওয়া হলেও, শিক্ষকরা একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে সময় পাচ্ছেন চার মাসের মতো। সেপ্টেম্বরের শেষের দিক থেকে অক্টোবর, লম্বা পুজোর ছুটিতেই কেটে যাবে। আর নভেম্বরেই একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সিমেস্টারের জন্য সময় পাচ্ছে পড়ুয়ারা সর্বচ্চ তিন মাস। এর মধ্যেও রয়েছে সরকারি ছুটি, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান। এর ফলে পড়ুয়াদের হাতে সময় বলতে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি। তার পরেই মার্চ মাসে দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। এই তুলনায় পাঠ্যক্রমের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি রয়েছে।”

ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগে বড়সড় পরিবর্তন হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা হয়েছে একাধিক নতুন বিষয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি অধ্যায় বেশ দীর্ঘ। এত কম সময় এত বিষয় শেষ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে শিক্ষক মহল। ধলতিথা সরলা বিদ্যাপীঠের বাংলার শিক্ষক অরূপকুমার দে বলেন, “বিবর্ধিত সম্ভাব্য গ্রীষ্মের ছুটি-সহ দীর্ঘ পুজোর ছুটি ও বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয় সম্পর্কিত অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে যে সামান্য সময় পাঠদানের জন্য অবশিষ্ট থাকে, সেই নির্দিষ্ট রুটিনের মধ্যে পরিবর্তিত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পাঠদান একবারে অসম্ভব।”

নয়া পাঠক্রমে পাঠ্যসূচি অনেকটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় সিমেস্টার সিস্টেমে সময়সীমা অনেকটাই কম থাকছে। অনেকে বলছেন, এর প্রধান কারণ পরিবর্তিত পাঠ্যসূচিতে কিছু ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত বিষয় রেখে দেওয়া হয়েছে নতুন বিষয় যুক্ত করার পরেও। তার ফলে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পসং হাইস্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রতিকান্ত অধিকারী বলেন, “সময় সীমিত করে দিলে পাঠ্যসূচিও ছোট রাখা উচিত। পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করলেও বেশ কিছু বিষয় পুরোনো বিষয় রাখা হয়েছে, গদ্য বা পদ্যে যা অনেক বড়। মধ্যমেধার পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সেই বিষয়টি বুঝতে অনেকটাই সময় লেগে যাবে।”

প্রসঙ্গত, ইংরেজির ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করলেও নয়া পাঠ্যসূচিতে মাদার টেরিজার নোবেল লেকচার বিষয়টি রাখা হয়েছে। যা অনেকটা বড় এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও কঠিন ও পচ্ছন্দের নয় বলে মনে করছে শিক্ষকমহলের এক অংশ।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ম‌ণ্ডল বলেন, “পাঠ্যক্রমকে পরিবর্তন করা হয়েছে কিন্তু বৃহত্তর শিক্ষকদের একংশের মতামত না নিয়ে। তার জন্য পাঠ্যক্রম নিয়ে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে। ২০২৫ সালের নির্বাচন নেই উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে দিলে সময় একটু বেশি পাওয়া যাবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement