প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের স্কুলগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে একাদশ শ্রেণির ক্লাস। পড়ুয়াদের পড়ার ক্ষেত্রে কিন্তু নির্ভর করতে হচ্ছে সেই পিডিএফ ফাইলের উপরই। এখনও সব স্কুলে বই পৌঁছয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অবশ্য দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৯৬ শতাংশ বাংলা এবং ৯৪ শতাংশ ইংরেজি বই পৌঁছে গিয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখায় নতুন পাঠ্যক্রমের বই বাজারে এলেও, ভাষা ভিত্তিক বাংলা-ইংরেজি বই হাতে পায়নি স্কুলগুলি। এই বইগুলি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বিনামূল্যে দেয় পড়ুয়াদের। কিন্তু বই হাতে না থাকায় পিডিএফ-এর মাধ্যমে ওই দুই বিষয়-সহ বেশ কিছু বিষয় পড়াতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
এ প্রসঙ্গে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “৯৪-৯৬ শতাংশের বেশি বাংলা এবং ইংরেজি বই পৌঁছে গিয়েছে বিভিন্ন জেলায় শিক্ষা দফতরের সার্কেল স্তর পর্যন্ত। সেখান থেকে স্কুলগুলিও বই সংগ্রহ করতে পারবে, এবং দ্রুত তা পড়ুয়াদের হাতেও পৌঁছে যাবে বলে আমি আশাবাদী।”
যদিও কলকাতা-সহ জেলার একাধিক স্কুলের তরফ থেকে জানান হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সমস্ত বই মেলেনি। প্রয়োজনীয় বইয়ের মাত্র ৪০ শতাংশ পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে আবার বাংলা এবং ইংরেজির বই নেই।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে যা খবর, তাতে একাদশ শ্রেণির বাংলা এবং ইংরেজির বই পৌঁছায়নি, বহু স্কুল অর্ধেক বই পেয়েছে। পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট।”
৮ মে প্রকাশিত হয় উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার ফল। দু’সপ্তাহের কাছাকাছি হল ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু তারপরও ভাষাভিত্তিক বই হাতে না আসায় সমস্যায় শিক্ষক থেকে পড়ুয়া সকলেই।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, “১০ জুন থেকে ক্লাস শুরু হলেও বাংলা, ইংরেজি-সহ পাঠ্যপুস্তক আমাদের স্কুলে এসে পৌঁছয়নি। কবে পাব সে নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।”
এই বিষয়ে কিছু স্কুলের পড়ুয়া এবং অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সায়ন্তনী দে জানিয়েছে, বই আসেনি, তাই ক্লাসে শুনে শুনে পড়া মনে রাখতে অসুবিধা হচ্ছে। তার মা সমাপ্তি দে বলেন, “পড়াশোনার জন্য ফোন ব্যবহার করে পড়ার কারণে অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া অভিভাবকদের কাছে যথাযথ ফোন না থাকার কারণে আখেরে পিছিয়ে পড়ছে ছেলে মেয়েরা।”
যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের একাদশের ছাত্র সৈকত মাইতি জানিয়েছে, দীর্ঘদিন বই না আসায় তেমন ভাবে ক্লাস করানো হয়নি। ২০ জুনই সমস্ত বই আসার পর ভাল ভাবে ক্লাস শুরু হয়েছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, নতুন সিলেবাসের বই বাজারে প্রকাশ করার জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।