জয়েন্টে সাফল্যের চাবিকাঠি। প্রতীকী ছবি।
আইআইটি (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) বা এনআইটি (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি)-তে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন অনেক ছাত্রছাত্রীই দেখে থাকেন। এ ছাড়াও এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতির যুগে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি পাওয়া বা গবেষণা করার সুযোগও অনেক বেশি। তবে, সঠিক পদ্ধতিতে পঠনপাঠন অবশ্যই একটা মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তির পরীক্ষা জেইই মেন (জয়েন্ট এন্টান্স এগজামিনেশন মেন), এবং জেইই অ্যাডভান্সড। কী ভাবে উত্তীর্ণ হওয়া যায় এই পরীক্ষাগুলিতে, সেই বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রনিক্স এবং কমিউনেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান চণ্ডী পানি।
চণ্ডী পানি জানালেন, দেশ জুড়ে প্রায় ৯.৫ থেকে ১০ লক্ষ ছাত্রছাত্রী জেইই মেন পরীক্ষায় বসেন। জেইই মেন পরীক্ষায় নিদৃষ্ট পরিমাণ নম্বর থাকলেই জেইই অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় বসা যায়। আইআইটি, এনআইটি, ট্রিপল আইটি, জিএফটিআই (গভর্মেন্ট ফান্ডেড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট) মিলিয়ে ভারতে মোট আসন সংখ্যা ৫২ হাজার ৪৫৩টি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, পরীক্ষাগুলি যথেষ্ট কঠিন হয়।
কিন্তু নিয়মমাফিক পদ্ধতিতে যদি অভ্যাস করা যায়, তা হলে এই পরীক্ষাগুলি পাশ করা এবং ভাল নম্বর তোলা সম্ভব। প্রথমে জেইই মেন-এর কথা ধরা যাক। এটি একটি অবজেকটিভ ধরনের পরীক্ষা, যা অনলাইনে হয়। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিত বিষয়ে তৈরি হয় প্রশ্নপত্র। প্রতিটি বিষয়ে ৩০টি করে প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে ২০টি প্রশ্ন থাকে অবজেকটিভ ধরনের, ১০টি থাকে নিউমেরিক ধরনের। যার মধ্যে ৫টি করতে হয়। জেইই মেন এবং জেইই অ্যাডভান্সড-এর প্রশ্নপত্র এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং)-নির্ভর। তাই, শিক্ষার্থীরা যে বোর্ড থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিন না কেন, এনসিইআরটি-র প্রশ্ন খুঁটিয়ে পড়তে হবে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ প্রশ্ন সেখান থেকেই আসে। এ ছাড়া কিছু রেফারেন্স বই রয়েছে, যেখান থেকে অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক প্রশ্ন অভ্যাস করে যেতে হয়। এই বইগুলির মধ্যে অন্যতম হল, গণিতের জন্য আরডি শর্মা, অ্যালজেব্রার জন্য এসকে গোয়েল, এসএল লনি। রসায়ন বিষয়ে জেডি লি, আরসি মুখার্জী, মরিসন। পদার্থবিজ্ঞানের জন্য আইই ইরোডোভ, এইচসি শর্মা, ডিসি পান্ডে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও অনলাইনে বিনামূল্যে প্রচুর ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়, যেগুলি খুব সহজেই কোনও না বোঝা অংশ বুঝতে সাহায্য করে।
সর্বোপরি নিয়মমাফিক অভ্যাস এবং আগের অন্তত ১০ বছরের প্রশ্নপত্র অভ্যাস করা জরুরি। পড়ার সময় ছোট ছোট প্রয়োজনীয় ফর্মুলা এবং কনসেপ্টকে নোট করে রাখা যায়। পরীক্ষার আগের দিন নোটগুলি খুব কাজে আসে।
এনটিএ (ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি)-এর ওয়েবসাইটে প্রচুর মক টেষ্টে বসার সুযোগ থাকে। সেই পরীক্ষাগুলি নিয়মিত দিলে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যায়।
সব শেষে বলা যায়, নিজের উপর বিশ্বাস রাখা এবং সঠিক অভ্যাসের সাহায্যে পরীক্ষা ভাল দেওয়া যায়।