প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্কুল জীবনের শেষ পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবার পরই স্কুল জীবনের পর ভবিষ্যৎ দিশা নিয়ে ভাবনার পালা শুরু হয়ে যায়। শুরু হয় প্রস্তুতি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পছন্দের বিষয় নিয়ে ভর্তি কিংবা পেশাদার কোর্সে ভর্তি হওয়াটা মূলত উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের উপর নির্ভর করে। তাই পরীক্ষায় ভাল ফল করা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মনে বাড়তি একটা মানসিক চাপ থাকে। শুধু ছাত্রছাত্রী নয়, বাবা-মায়েরাও যথেষ্ট উদ্বেগে থাকেন। সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে পরীক্ষার সময় সমস্ত চিন্তা দূরে সরিয়ে সন্তানের পাশে থেকে উৎসাহ জুগিয়ে যেতে হবে। সন্তানের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। সন্তানকে অতিরিক্ত চাপ দেবেন না কিংবা নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বোঝা সন্তানের ঘাড়ে কখনই চাপিয়ে দেবেন না। বরং সন্তানের পছন্দ অপছন্দের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখুন এবং ভালমন্দ বুঝিয়ে তাকে সঠিকপথে অগ্রসর হবার পরামর্শ দিন।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের দক্ষতার জায়গা চিহ্নিত করে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেয় শিক্ষকসমাজ। পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব শিক্ষার্থীদের মানসিক ভাবে পাশে থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিজেদের সেরাটুকু উজাড় করে দিতে পারে সে ভাবেই উৎসাহিত করে তুলতে হবে। পরীক্ষাকক্ষে পরীক্ষার সমস্ত বিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের সঠিক ভাবে পরিচালিত করার দায়িত্ব শিক্ষকদের।
সবশেষে, ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলব— নিজের এবং নিজের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। এই ধাপ অবধি পৌঁছানোর জন্য তোমরা কঠোর পরিশ্রম করেছ। এখন তোমাদের পরিশ্রমকে সফল করে দেখানোর সময় এসেছে। তাই, পরীক্ষার সময় যথেষ্ট মনোযোগী থাকতে হবে এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থেকে নিজের সেরাটা পরীক্ষার খাতায় দিতে হবে। মনে রাখবে, তোমার জ্ঞান এবং গুণের অভাব নেই। সঙ্গে রয়েছে দক্ষতা এবং সফল হওয়ার ইচ্ছে। নিজের প্রস্তুতিতে আস্থা রেখে যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন হাতের লেখায় প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। মন শান্ত রাখতে হবে। সর্বোপরি, নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। তোমরা সবাই ভাল করে পরীক্ষা দাও। পরীক্ষাকক্ষে স্বচ্ছতা এবং সততা বজায় রাখবে।
সমস্ত পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার আন্তরিক শুভ কামনা জানাই এবং সকলের পরীক্ষা ভাল হবে, এই আশা রাখি। এ প্রসঙ্গে ছাত্রসমাজের আদর্শ এবং ভারতের প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি স্যর আব্দুল কালাম আজাদের উক্তি তোমাদের মনে করিয়ে দিতে চাই— ‘‘তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার আহ্বান হল, ভিন্ন ভাবে চিন্তা করার সাহস থাকতে হবে। আবিষ্কারের নেশা থাকতে হবে। যে পথে কেউ যায়নি, সে পথে চলতে হবে। অসম্ভবকে সম্ভব করার সাহস থাকতে হবে। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং তার পর সফল হতে হবে। এগুলোই হল সবচেয়ে মহৎ গুণ। এ ভাবেই তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। তরুণদের কাছে এটাই আমার বার্তা।’’