খেপি মা
একটা সময়ে ডাকাত দল মা কালীর পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। এই ধরনের গল্প আমরা অনেক শুনেছি। তার মধ্যে অনেক গল্পই যে বাস্তবের বিবরণ, তার নিদর্শন আজও ছড়িয়ে রয়েছে বহু জায়গায়। ডাকাতদের পুজো করা কালী আমরা আজও দেখতে পাই সমগ্র বাংলা জুড়ে। এই রকমই এক ডাকাত কালী রয়েছে বর্ধমান কাটোয়ায়, যেখানে দেবীমূর্তিকে প্রায় পাঁচ কেজি সোনা এবং ন’কেজি রুপো দিয়ে সাজানো হয় প্রতি বছর। স্থানীয়রা দেবীকে ভালবেসে ‘খেপি মা’ বলেই ডাকেন।
কি নেই মায়ের গায়ে! সোনার মুকুট থেকে শুরু করে সোনার বালা, সোনার সিতাহার—সহ নানা গয়নায় ভরে ওঠে মায়ের এই মূর্তি। ডাকাতদের হাতেই শুরু হয় এই পুজো।
আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে কাটোয়া শহরের ভাগীরথীর তট জঙ্গলে ভরা ছিল। কথিত, সেই জঙ্গলেই বাস করত এক ডাকাত। সে জঙ্গলেই প্রতিদিন কালী ঠাকুরের পুজো করত। এমনকি ডাকাতি করার সময়ও দেবীকে পুজো করে তবেই বের হত সে। তৎকালীন সময়ে, ওই ডাকাতের ভয়ে বর্ধমান, নদীয়া ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষজন ভয়ে কাতর হয়ে থাকত।
তবে সময় বদলেছে। সেই জঙ্গল কেটে গড়ে উঠেছে জনবসতি। সেই ডাকাতও আর নেই। কিন্তু রয়ে গিয়ে সেই পুজো। এখন সুবিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠিত করে এই কালীর পুজো হয় মহা ধুমধামের সঙ্গে।
জানা যায়, পুজোর আগে সোনা ও রুপোর মিলিয়ে প্রায় ১৫ কেজি গয়না পরানো হয় মাকে। কালীপুজোর দিন পুলিশি সুরক্ষায় ব্যাঙ্কের লকার থেকে সোনা ও রুপোর গয়না আনা হয় মায়ের জন্য । পুজোর দু’দিন মন্দিরে থাকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। পুজোর দিন আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও প্রচুর মানুষ ভিড় জমায় এই মন্দিরে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy