পুজোর আগেই আরও এক চমক। এ বার ভক্তদের জন্য নতুন হিন্দু মন্দির খুলে যেতে চলেছে পুজোর আগেই। তবে তা ভারতে নয় বরং দেশ তথা মহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে সুদূর নিউ জার্সিতে খুলতে চলেছে এই নতুন মন্দির। সম্ভবত এই মন্দিরটিই হতে চলেছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তর হিন্দু মন্দির।
আগামী মাসের ৮ অক্টোবরে উদ্বোধন এই মন্দিরের। নিউইয়র্ক টাইম স্কোয়্যারের ৬০ মাইল দক্ষিণে এবং ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ১৮০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই মন্দির।
নিউ জার্সির রবিন্সভিল টাউনশিপ প্রজেক্টে এই বিএপিএস স্বামী নারায়ণ অক্ষর ধাম মন্দির তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ১২ বছর। প্রায় ১৮৩ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এই মন্দির।
প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির উপাদানে সমৃদ্ধ এই মন্দিরে রয়েছে দশ হাজারেরও বেশি মূর্তি। ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র এবং নৃত্য ধারা এবং ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতীক যেন এই মূর্তিগুলি।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, নকশা করা এই মন্দিরে রয়েছে একটি প্রধান মন্দির, বারোটি উপ মন্দির, ন’টি চূড়ার মতো শিখর এবং ন’টি পিরামিডের মতো শিখর। রয়েছে পাথরের তৈরি বৃহত্তম উপবৃত্তাকার গম্বুজ। যা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে এটি হাজার বছর পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে।
প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অক্ষয়বতসলদাস স্বামী জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের আধাত্মিক গুরু প্রমুখ স্বামী মহারাজের ইচ্ছা, পশ্চিম গোলার্ধে এমন একটি জায়গা গড়ে উঠুক, যেখানে কেবল হিন্দু বা ভারতীয়রা নয়, বরং সমগ্র পৃথিবীর সবাই আসবে। যেখানে তারা কিছু মূল্যবোধ শিখবে এবং হিন্দু ঐতিহ্য সঙ্গে পরিচিত হবে।’’
বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এই মন্দির নির্মাণের জন্য আনা হয়েছে প্রায় কুড়ি লক্ষ ঘন ফুট পাথর। বুলগেরিয়া এবং টার্কি থেকে আনা হয়েছে চুনা পাথর, গ্রিস, তুরস্ক এবং ইতালি থেকে এসেছে শ্বেত পাথর, ভারত এবং চীন থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গ্রানাইট, বেলে পাথর নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভারত থেকে। ইওরোপ এবং আমেরিকার নানা দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের আলঙ্কারিক পাথর।
এই মন্দিরে অবস্থিত ব্রহ্মকুণ্ড সমগ্র বিশ্বের তিনশোটির বেশি পবিত্র জলাশয়ের জল ধারণ করে। তাঁর মধ্যে রয়েছে ভারতের পবিত্র নদীসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের নানা নদীর জল রয়েছে।
পবিত্র এই মন্দির নির্মাণ কাজে হাত লাগিয়েছেন প্রায় ১২,৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক। ভক্তদের ভক্তি এবং আত্মত্যাগের ফল হল এই মন্দির। এই স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে যেমন আছে ১৮ বছরের তরুণ তরুণীরা, তেমনই আছেন ৬০ বছরের বয়স্করাও। ছাত্র থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, স্থপতি প্রমুখ। বহু মানুষ দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ছুটি নিয়ে পড়ে থেকেছেন কেবল মন্দির নির্মাণের জন্য।
অগণিত ভক্তের শ্রমের ফল হিসেবে এই মন্দির উদ্বোধন হচ্ছে ৮ অক্টোবর। কিন্তু সেদিন থেকেই কিন্তু খুলে যাচ্ছে না সাধারণ মানুষের জন্য। বরং ১৮ অক্টোবর থেকে এই মন্দিরের দ্বার খুলে যাবে পৃথিবীর সমগ্র জনজাতির জন্য। সেদিন দুর্গাপুজো চতুর্থী।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy