এক দিন আয়ান ঘোষ হাটে গেলেন গরু কিনতে। একটি সুন্দর গরু বাছাই করে বিকেলের মধ্যে তা কেনার জন্য কিছু মুদ্রা নিতে ঘরে ফিরে এলেন। ইতিমধ্যে তাঁর অনুপস্থিতিতে কৃষ্ণ গুজব ছড়িয়েছিলেন যে, তিনি রাধারানিকে দেখতে আয়ান ঘোষের ছদ্মবেশে আসতে চলেছেন। জটিলা ও কুটিলা এ কথা শুনে গ্রামের প্রবেশপথে লাঠি নিয়ে প্রস্তুত হয়ে রইলেন। তাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে ছদ্মবেশী কৃষ্ণ যেন রাধার দিকে এক মুহূর্তও তাকাতে না পারেন।
আয়ান ঘোষের ছদ্মবেশধারী কৃষ্ণ তাঁদের বলেন, রাধারানির মঙ্গলদেবীর পুজো করা প্রয়োজন। তাই তাঁর উপবাস করে রাতে মন্দিরে যাওয়া উচিত এবং সারা রাত পুজো করা উচিত। জটিলা-কুটিলা সেই মতো রাধারানিকে রাতভর প্রার্থনা করার জন্য মঙ্গলদেবী মন্দিরে পাঠান। এ দিকে, আয়ান ঘোষ ঘরে ফিরে আসতেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়। জটিলা-কুটিলা বুঝতে পারেন, যাঁকে তাঁরা কৃষ্ণ ভেবেছিলেন, তিনি প্রকৃতই আয়ান ঘোষ। আর যাঁর নির্দেশে তাঁরা রাধাকে মন্দিরে পাঠিয়েছেন, তিনি ছদ্মবেশধারী কৃষ্ণ।
সমস্ত বুঝতে পেরে জটিলা-কুটিলা আয়ান ঘোষকে জঙ্গলে গিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। আয়ান ঘোষ রাধার পবিত্রতা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ ছিলেন, কারণ তিনি জানতেন রাধা সাক্ষাৎ মা লক্ষ্মীর প্রতিভূ। গত জন্মে কঠোর সাধনায় তিনি শ্রীলক্ষ্মীকে পেয়েছেন পত্নী রূপে। কিন্তু, জটিলা-কুটিলার প্ররোচনায় তিনি রাধাকে জঙ্গলে অনুসরণ করেন। পিছনে পিছনে যান জটিলা, কুটিলাও।
শ্রী কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর শক্তি-স্বরূপ সর্বদা বিরাজ করেন যোগমায়া, মায়া দেবী। সেই মায়ার খেলাতেই কৃষ্ণ নেন কালী রূপ। কৃষ্ণ কালীতে বিলীন হয়ে এক অনন্য রূপ সৃষ্টি হয়। এই কৃষ্ণকালী শাক্ত এবং বৈষ্ণব উভয় সম্প্রদায়েরই উপাস্য। ইয়াভাটে জটিলা-কুটিলার বাড়ির কাছে এই ঘটনার স্মরণে এক কৃষ্ণকালী মন্দির আছে। তা ছাড়া, সারা দেশে ছড়িয়ে আছে কৃষ্ণকালীর অজস্র মন্দির।
দক্ষিণহস্তে শঙ্খ ও খর্পর ধারিণী এবং নবযৌবনসম্পন্না। বাম হস্তে খড়্গ ও চক্র ধারণ করে আছেন, গলায় মুণ্ডমালা। গোপিনীদের দ্বারা অর্চিত এবং নানা অলঙ্কারে সজ্জিতা। চতুর্বর্গ প্রদানকারিণী সেই দেবী ব্রহ্মরূপা সনাতনী। দারিদ্র্য, শোক নাশকারিণী এবং মোক্ষদায়িনী। দেবীর পুজোয় সকল বিপদ-দুঃখ-দৈন্য দূরে চলে যায় বলে ভক্তদের বিশ্বাস। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy