মনে করা হয়, পঞ্চদশ শতাব্দীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাসাধক ঠাকুর সর্ব্বানন্দ দেব কঠিন সাধনার পর মাতৃদর্শন করেন। তাঁর সিদ্ধিলাভের জায়গা ঘিরে গড়ে উঠেছে মেহের কালীবাড়ি। বলা হয়, স্বয়ং মা কালী এখানে সর্বদা উপস্থিত থাকেন, তাই মায়ের কোনও মূর্তি এখানে স্থাপন করা হয় না। তাঁর লেখা বইয়ের নাম ‘সর্বোল্লাস তন্ত্র’।
দেবী তাঁকে বিধান দেন মহানিশার অবসানে প্রাতঃমুহূর্তে কৃষ্ণানন্দ প্রথম যে নারীমূর্তি দর্শন করবেন, সেই মূর্তিই হবে দেবীর সাকার মূর্তি। কৃষ্ণানন্দ মায়ের শান্ত রূপ অর্থাৎ দক্ষিণাকালী রূপ দর্শন করেন এবং বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মা কালীর রূপেই বাংলা তথা সমগ্র বিশ্বে কালীপুজো হয়। তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ ‘তন্ত্রসার’।
কালীসাধকদের মধ্যে রামপ্রসাদ সেনের নাম শোনেননি এমন ভক্ত খুব কমই আছেন। হালিশহরে জন্ম রামপ্রসাদ সেনের। বেশিরভাগ সময়ে তিনি সাধনাতেই মগ্ন থাকতেন এবং মায়ের গান রচনা করতেন। কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের শিষ্য ছিলেন তিনি। শোনা যায়, পঞ্চমুণ্ডি আসনে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি ধ্যানমগ্ন থাকতেন। আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে তিনি দেবীর দর্শন পান।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে মা কালীর মহান ভক্ত কমলাকান্ত ভট্টাচার্য বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ভাষা, কবিতা ও সঙ্গীতে তাঁর পারদর্শিতার কারণে, বর্ধমানের মহারাজা, তেজচন্দ্র তাঁকে তাঁর দরবারের উপদেষ্টা করেন এবং পরে তাঁকে গুরু হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি মা কালীকে কখনও মূর্তি হিসাবে দেখেননি। তাঁর কাছে মায়ের মূর্তি ছিল সব সময়ই জীবন্ত।
কালী সাধকদের মধ্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। শ্রীরামকৃষ্ণের বয়স যখন ১৬, তখন তাঁর ভাই রামকুমার তাঁকে তাঁর পুরোহিত পেশায় সহায়তা করার জন্য কলকাতায় নিয়ে আসেন। ১৮৫৫ সালে রানি রাসমণি দ্বারা নির্মিত দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরে রামকুমার প্রধান পুরোহিত হিসাবে যুক্ত হন। কয়েক মাস পরে তিনি মারা গেলে রামকৃষ্ণকে পুরোহিত নিযুক্ত করা হয়।
বামাখ্যাপার প্রকৃত নাম ছিল বামা, কিন্তু যৌবনকাল থেকেই তিনি পার্থিব বিষয়ে একেবারেই আগ্রহ দেখাননি, তাই লোকেরা তাঁকে পাগল বলে ডাকত এবং তাঁর নামের সঙ্গে খ্যাপা যোগ করত। তিনি দেবী তারার প্রবল ভক্ত ছিলেন। মন্দিরের কাছেই থাকতেন এবং শ্মশানে ধ্যান করতেন। জনশ্রুতি রয়েছে, মা তারার আগে বামাখ্যাপাকে ভোগ নিবেদন করা হত। শ্মশানেই দেবী তারা তাঁর উগ্র রূপের দর্শন দিয়েছিলেন বামাখ্যাপাকে।
শিবচন্দ্র বিদ্যার্ণবের কাছে মায়ের দর্শন এক স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। তিনি মাকে কালীর বদলে তারা এবং সর্বমঙ্গলা বলে ডাকতেন। তিনি ইংরেজি জানতেন না, কিন্তু তাঁর মহিমা এমন ছিল যে তৎকালীন হাই কোর্টের বিচারক ‘স্যার জন উডরফ’ সংস্কৃত শিখে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি নিজেই তাঁর শিষ্য হয়ে ওঠেন। পরবর্তীকালে উডরফ, আর্থার অ্যাভালোন নাম নিয়ে কালির মহিমার বিষয়ে ইংরেজিতে একটি বই রচনা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy